আগামী বিশ্বকাপের আগে বসতে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আইপিএলের বারোতম আসর। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই টুর্নামেন্টে বসে থাকে তারার মেলা। ভারতীয় ক্রিকেটারদের জাতীয় দলে জায়গা পাকা করার পাশাপাশি বিদেশি ক্রিকেটাররা এই টুর্নামেন্টে খেলে পকেটে পুরেন মোটা অর্থ।
সারা বিশ্বের নামীদামী ক্রিকেটারের মেলা যেখানে বসে থাকে সেখানে বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি ক্রিকেটাররা অংশ নেয়ার সুযোগ পায় না।
তবে আগামী আসরে যে পাঁচজন বাংলাদেশী ক্রিকেটারের দিকে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি নজর দিতে পারে সেই ক্রিকেটারের তালিকা এবার দেখে নেওয়া যাক।
৫. তামিম ইকবাল
আইপিএলে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে ওপেনিংয়ে তামিম হতে পারে সেরা পছন্দ। বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান ইতিপূর্বে আইপিএলের দল পুনে ওয়ারিয়ার্সের দলে অন্তর্ভূক্ত হলেও একাদশে জায়গা পাননি। বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবেই শুধু নিজেকে প্রমাণ করেননি, ধারাবাহিক পারফরম্যান্সও করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। টি-২০ ক্যারিয়ারে ১৭৩ ইনিংস ব্যাট করে ২৯.৯৩ গড়ে ৪৭৩০ রান করা তামিমের স্ট্রাইক রেটও প্রায় ১২০।
কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, রয়্যাল চেলেঞ্জার্স বেঙ্গালোর, রাজস্থান রয়্যালসের মত দলগুলো তামিমের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা পেতেই পারে।
৪. সৌম্য সরকার
বর্তমানে জাতীয় দলে খুব বেশি সুবিধা করতে না পারলেও সৌম্যর আগ্রাসী ব্যাট চালানোকে জ্বালানি হিসেবে পেতে পারে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ২০১৫ সালে ভারত পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সৌম্যর ব্যাটিং নজর কেড়েছিল সবার। তবে গত কয়েক সিরিজ জুড়ে দলে অনিয়মিত থাকলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে সৌম্যর ব্যাটের যে ধাঁচ দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব তা থেকে আইপিএলে খেলার স্বপ্ন দেখতেই পারেন গেম চেঞ্জার বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
৩. লিটন দাস
তরুণ প্রতিভাধর ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য দল থেকে বাদ পড়তে হয়। এক্ষেত্রে সৌম্যর সাথে একই কাতারে রয়েছেন লিটন দাসও। বিশেষ করে তাঁর গত কয়েকটি ওয়ানডে ম্যাচের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। তবে আক্রমণাত্মক ব্যাট চালিয়ে নতুন বলে হাত খুলে খেলার অভ্যাসটা বেশ ভালোই রয়েছে তাঁর। অন্যদিকে উইকেটরক্ষক হিসেবে স্ট্যাম্পের পেছনের দায়িত্বটাও সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা রয়েছে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের।
২. মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
আইপিএলে দল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের টি-২০ সহ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হয়তো একটু দুর্ভাগাই। কেননা একজন অলরাউন্ডার হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতার যে ঝুলি তা কাজে লাগিয়ে দলগুলো পেতে পারে সাফল্য। পাকিস্তান সুপার লিগ কিংবা ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের নিয়মিত মুখ মাওমুদউল্লাহ উপেক্ষিত রয়েছেন আইপিএলে। টি-২০ ক্যারিয়ারে ১৬২ ইনিংস ব্যাট করে ২৪.৫১ গড়ে ৩১৬৬ রান করেছেন এই অলরাউন্ডার। যেখানে স্ট্রাইক রেট রয়েছে ১১৭.৮৯। অন্যদিকে বল হাতে ১৩০ ইনিংসে ২৭.৪২ গড়ে নিয়েছেন ৮৫ উইকেট। তাঁর ওভারপ্রতি গড় ৭.১৩। মাহমুদউল্লাহর এই অভিজ্ঞতা যেকোনো দলের জন্যই হয়ে উঠতে পারে কার্যকরী দাওয়াই।
১. মুশফিকুর রহিম
বর্তমান সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সাথে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি সম্ভবত মুশফিকুর রহিমেরই। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে অন্যতম সেরা নির্ভরতার প্রতীক মুশফিক তরুণ অনেক ক্রিকেটারেরই অনুপ্রেরণার নাম। দৈহিক দিক থেকে খুব বেশি দীর্ঘকায় না হলেও ব্যাট হাতে লম্বা শট খেলার ক্ষেত্রে পটুতা রয়েছে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের। টি-২০তে ১৩৯ ইনিংসে ব্যাট করে ১২৫.৮২ স্ট্রাইক রেটে ২৯৩৩ রান করেছেন মুশি। অন্যদিকে উইকেটরক্ষের ভূমিকায় থেকে টাইগারদের সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন বহুদিন ধরেই।
গত নিদাহাস ট্রফিতে মুশফিকের পারফরম্যান্স বিচার করলে আইপিএলে খেলার যোগ্যতা যে মুশফিক রাখেন তা বলে দেয়া যায় দ্বিধাহীনভাবেই।