আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘ হ্যাটট্রিক ‘ বরাবর চমকপ্রদ একটি বিষয়।একজন বোলার তার করা পর পর তিন বলে বিপক্ষের তিন ক্রিকেটারকে ফিরিয়ে দিচ্ছে প্যাভিলিয়ানে এই বিষয়টি চাক্ষুষ করা একজন ক্রিকেট প্রেমীর কাছে স্মরণীয় একটি ঘটনা।এমনটা দেখা যায় না খুব বেশি।এই প্রতিবেদন লেখা অবধি আন্তর্জাতিক একদিবসীয় ক্রিকেটে ‘ হ্যাটট্রিক ‘ এর সংখ্যা ৪৯ টি।এরমধ্যে বেশ কিছু বোলার আছে যারা একাধিকবার এই বিরল কৃতিত্বের অধিকারী।আজ এমনই পাঁচ বোলারের কথা আলোচনা করা হলো এখানে।
লাসিথ মালিঙ্গা ( ৩ বার )
একদিবসীয় ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশীবার ‘হ্যাটট্রিক’ করার রেকর্ডটি রয়েছে শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ পেসার লাসিথ মালিঙ্গার দখলে।প্রথম বার তিনি এই রেকর্ড তিনি করেছিলেন ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে।সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে তিনি নিয়েছিলেন পর পর চার বলে চার উইকেট।পোলক, ক্যালিস, হল, এনতিনি ছিলো শ্রীলঙ্কান পেসারের সেইদিনে চার শিকার।মূলত তার দুরন্ত পারফরম্যান্সের জেরে সেইদিন ম্যাচ পকেটস্থ করেছিলো শ্রীলঙ্কা।এরপর ফের ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ফের আরেকবার হ্যাটট্রিক করেছিলেন কেনিয়ার বিপক্ষে।তন্ময় মিশ্র,অনগডো,নিগোচের উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।সেইদিন ম্যাচে তার পারফরম্যান্স ছিলো দুরন্ত,৩৮ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ছয় উইকেট।একই বছরে ফের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরও একবার হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি।নিয়েছিলেন জনসন, ডোহাট্রি এবং হেস্টিংস’এর উইকেট।প্রসঙ্গত, ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে মালিঙ্গা একমাত্র বোলার যিনি দুইবার হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।
ওয়াসিম আক্রম ( ২ বার )
বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা বা – হাতি পেসার হলেন ওয়াসিম আক্রম।নিজের ক্রিকেটীয় দিনে সুইংয়ের জালে রাতের ঘুম কেড়েছেন নিজের তৎকালীন তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানদের।১৯৮৯ সালে শারজায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবার হ্যাটট্রিক করেছিলেন ওয়াসিম।নিয়েছিলেন দুঁজোন, ম্যালকম মার্শাল এবং এ্যমব্রোজের উইকেট।প্রত্যেক কে ম্যাচে বোল্ড আউট করেছিলেন তিনি।একই ভাবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি ম্যাচে মার্ভ হিউজ, র্যাকেমান এবং আল্ডেরম্যান এর উইকেট নিয়ে কেরিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ওয়াসিম।
কুলদীপ যাদব ( ২ বার )
৫০ ওভারের ক্রিকেটে একমাত্র ভারতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে দুইবার হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব আছে কুলদীপ যাদবের।২০১৭ সালে ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেরিয়ারের প্রথম ওয়ানডে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কুলদীপ।তার শিকার ছিলেন ওয়েড ,আগার , কামিন্স।এরপর ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিশাখাপত্তনমে ফের হ্যাটট্রিক করেছিলেন কুলদীপ।নিয়েছিলেন শাই হোপ, জোসেফ,হোল্ডারের উইকেট।
ট্রেন্ট বোল্ট ( ২ বার )
এইমুহুর্তে নিউজিল্যান্ড দলের অন্যতম পেসার ট্রেন্ট বোল্টের ঝুঁলিতে আছে দুটো হ্যাটট্রিক।এরমধ্যে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আবু ধাবিতে প্রথমবার এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন তিনি।নিয়েছিলেন ফাকার জামান, মহম্মদ হাফিজ এবং বাবর আজমের উইকেট।দ্বিতীয় উইকেট টি যেকোনও ক্রিকেটারের কাছে স্বপ্নের ন্যায়।২০১৯ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন বোল্ট।নিয়েছিলেন স্টার্ক,খোয়াজা এবং বেহেরন্ডফের উইকেট।দশম ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে ” হ্যাটট্রিক ” করার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন তিনি।
সাকলাইন মুস্তাক ( ২ বার)
একসময় পাকিস্তানকে একাধিক ম্যাচে জয় এনে দিয়েছিলেন সাকলাইন মুস্তাক বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের স্পিনের জালে ফাঁসিয়ে।১৯৯৬ সালে পেশোয়ারে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।নিয়েছিলেন ফ্লাওয়ার,রেনে এবং হুইটটলের উইকেট।পরেরটি ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে ফের জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে।এইবার তার শিকার ছিলেন ওলোঙ্গা, বাংগোয়া এবং এ্যডাম হেকল। বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করার মতো বিরল কৃতিত্বের অধিকারী তিনি।
এছাড়াও শ্রীলঙ্কার পেসার চ্যামিন্ডা ভাসে’রও একদিবসীয় ক্রিকেটে দুটো হ্যাটট্রিক আছে যা তিনি করেছিলেন ২০০১ এবং ২০০৩ সালে যথাক্রমে জিম্বাবোয়ে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে।