বিশ্ব ক্রিকেটে যদিও বেশকিছু টি-২০ ক্রিকেট লীগ খেলা হয়ে থাকে, কিন্তু যতদূর ভারতের টি-২০ লীগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের প্রশ্ন এখানে এক সে এক অজ্ঞাত এবং অপরিচিত খেলোয়াড়রা মঞ্চ পেয়েছেন। আইপিএলের শুরু ২০০৮ থেকে হয়েছে। যারপর থেকে এই লীগে দেশী আর বিদেশী খেলোয়াড়দের খেলতে দেখা যায়। যার মদব্যে বেশকিছু খেলোয়াড়কে এই লীগ নিজেদের পরিচিতি তৈরি করার সুযোগ দিয়েছে।
আইপিএলে কখনো এই খেলোয়াড়দের তোলা হয়নি ফায়দা
আইপিএলে কিছু খেলোয়াড়দের টিম ম্যানেজমেন্ট ভীষণই ফায়দা তুলেছে। আর তাকে দলে এমন সুযোগ দেওয়া হয়েছে যাতে সেই খেলোয়াড়ের একটি বিশেষ গুরুত্ব তৈরি করা যেতে পারে। কিন্তু অন্যদিকে কিছু খেলোয়াড় এমনও থেকেছেন যাদের যোগ্যতা আর প্রতিভা কারও থেকে কম ছিল না, কিন্তু তার সত্ত্বেও দলগুলি তাদের সেই ধরণের সুযোগ দিয়ে ফায়দা তোলেনি যেমনটা তাদের করা উচিৎ ছিল।
জর্জ বেইলি
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের কিছু খেলোয়াড়কে যতই তত নামি মনে করা না হোক কিন্তু তাদের প্রদর্শন ভীষণই ভালো থেকেছে। এই খেলোয়াড়দের কথা বলা হলে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক জর্জ বেইলির নামও নেওয়া যেতে পারে। জর্জ বেইলি তিন ফর্ম্যাটেই নিজেকে এমন প্রমাণ করেছেন যে তাকে বড়ো খেলোয়াড় মনে করা যেতে পারে। বেইলি আইপিএলে কিছু বছর খেলেওছেন আর নিজের অধিনায়কত্বে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে রানার্সআপ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছেন। বেইলি ভীষণই আকর্ষণীয় একজন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তিনি বিশ্বের বেশকিছু টি-২০ লীগে এটা দেখিয়েওছেন। কিন্তু তাকে আইপিএলে বেশি সুযোগ দেওয়া হয়নি। বেইলিকে ২০১৫র পর থেকে এই লীগে দেখা যায়নি।
কেন উইলিয়ামসন
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের নাম এই সময় যথেষ্ট বড়ো। কেন উইলিয়ামসনকে টপ ৪ জন ব্যাটসম্যানদের একজন মনে করা হয়। তিনি নিজের খেলার প্রত্যেকটি ফর্ম্যাটে দুর্দান্ত প্রদর্শন করেছেন। কেন উইলিয়ামসনের বিশ্ব ক্রিকেটে কত বড়ো নাম এটা বলার প্রয়োজন নেই। এই কারণে বেশকিছু ক্রিকেট লীগে যেখানে তিনি সুযোগ পেয়েছেন সেখানে নিজের ছাপ ফেলেছেন। কেন উইলিয়ামসনকে আইপিএলে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। উইলিয়ামসনও সুযোগ পেতেই ধামাকেদার প্রদর্শন করেছেন, কিন্তু কখনো তাকে পারমানেন্টে ব্যাটসম্যান মনে করা হয়নি। উইলিয়ামসনকে ২০১৮য় এই লীগে পুরো মরশুমে সুযোগ দেওয়া হয় যেখানে তিনি নিএজ্র যোগ্যতা দেখিয়েছেন।
ওয়েন মর্গ্যান
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যানের ক্রিকেট জগতে বিশেষ নাম রয়েছে। গত বছরই মর্গ্যান নিজের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডকে প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। নিজের অধিনায়কত্বের সঙ্গেই মর্গ্যান একজন অসাধারণ ব্যাটসম্যান যিনি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কারও চেয়ে কম নন। ওয়েন মর্গ্যানের শক্তিকে টি-২০ ক্রিকেট আর ওয়ানডে ক্রিকেটে পুরো বিশ্ব জানে। কিন্তু যখন মর্গ্যানের আইপিএলের কথা বলা হয় তো তিনি খুব বেশি সুযোগ পাননি। আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে মর্গ্যানের দুর্দান্ত প্রদর্শন থেকেছে। মর্গ্যান বিশ্ব জুড়ে খেলা বেশকিছু টি-২০ ক্রিকেট লীগে নিজের জাদু দেখিয়েছেন। অন্যদিকে আইপিএলে তাকে এমন সুযোগ দেওয়া হয় যেখানে তাকে খুব বেশি উপযোগী মনে করা হয়নি। এটা সত্যিই অদ্ভুত।
ফাফ দু’প্লেসি
দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ফাফ দু’প্লেসির নামও যথেষ্ট বড়ো। ফাফ দু’প্লেসি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটেই নিজের শ্রেষ্ঠতা প্রমাণ করেছেন। দু’প্লেসি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য দীর্ঘ সময় পর্যন্ত টি-২০ ক্রিকেটে নেতৃত্ব সামলেছেন আর নিজেও একজন দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান থেকেছেন। এই প্রোটিয়া খেলোয়াড়কে আইপিএলে বেশকিছু বছর ধরে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চেন্নাই সুপার কিংস দলের হয়ে খেলা ফাফকে এখানে সত্যিই বাইরে বসতে হয়েছে। তবে যখন তিনি সুযোগ পেয়েছেন তিনি অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু তাকে তখনই সুযোগ দেওয়া হয়েছে যখন দলের পরিবর্তের প্রয়োজন হয়েছে। মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো অধিনায়ক তাহকার পরও তিনি দু’প্লেসির ফায়দা তুলতে পারেননি।
তিলকরত্নে দিলশান
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা ব্যাটসম্যান তিলকরত্নে দিলশান বিশ্বস্তরীয় ব্যাটসম্যান থেকেছেন। তিলকরত্নে দিলশান নিজের আকর্ষণীয় ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট নাম করেছেন। দিলশান শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের সবচেয়ে মহান ব্যাটসম্যানদের একজন প্রমানিত হয়েছেন। টি-২০ ক্রিকেটে তো দিলশানের কোনো জবাব নেই। তিনি এই ফর্ম্যাটে ভীষণই ভালো প্রদর্শন করেছেন। তিনি শ্রীলঙ্কার হয়ে এই ফর্ম্যাটে দেখিয়েছেন যে তিনি কী করার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু আইপিএলের কথা যখন হয় তো দিলশান এখানে খুবই কম সুযোগ পেয়েছেন। দিলশান দিল্লি ডেয়ারডেভিলস আর আরসিবির তরফে ৬টি মরশুম খেলেছেন। এর মধ্যে তিনি মাত্র ২৬ গড়েই রান করতে পেরেছেন। তাকে নিয়মিত সুযোগও দেওয়া হয়নি।