নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল ম্যাচে যখন ভারত, বাংলাদেশ থেকে পেছিয়ে পড়েছিল আর দর্শকদের মধ্যে সেই সময় নিরাশা ছেয়ে গেছিল যখন মনীষ পাণ্ডে লং অনে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তী ব্যাটসম্যান হিসেবে দীনেশ কার্তিক আসেন, যিনি প্রথম বলেই ছক্কা মেরে দেন। এরপর দ্বিতীয় বলে আসে বাউন্ডারি।
পরের বলেও চার আসে। এরপর ফের স্কোয়ার লেগে ছক্কা মারেন। এই ব্যাটসম্যান মাত্র ৩ বলে ১৬ রান করে ফেলেন। অন্যদিকে উপস্থিত বিজয় শঙ্কর ১৫ বলে ১২ রান করে খেলছিলেন। শেষ বলে তিনি চার মারেন আর ওই ওভারে ২২ রান তুলে নেন। শঙ্কর শেষ ওভারের প্রথম বলে মাত্র ১ রান নেন। এরপর আরো একটা সিঙ্গল রান হয়। অর্থাৎ এখন তিন বলে ৯ রানের দরকার ছিল। শঙ্কর পরের বলে চার মারেন।
এখন পাঁচ রান দরকার ছিল ২ বলে। ম্যাচ সম্পূর্ণভাবে রোমাঞ্চকর জায়গায় দাঁড়িয়েছিল। পরের বলে ভারতের সকল আশা ভেঙ্গে যায় যখন বিজয় শঙ্কর আউট হয়ে যান। এখন শেষ বলে দরকার ছিল পাঁচ রান। সমস্ত ভারতীয় সমর্থকদের হার্ট জোরে জোরে বাজছিল। একদিকে বাংলাদেশের ফ্যান্স জয়ের উৎসব পালন করতেও শুরু করে দিয়েছিলেন। হার্টবিট থামিয়ে দেওয়া এই ম্যাচে এখন একটা বাঁস আসতে চলেছিল। আর শেষ বলে দীনেশ কার্তিক ছক্কা মেরে দেন। সেই সময় মাঠে বাংলাদেশ দর্শকদের মধ্যে নিরাশা ছেয়ে যায়। আর ভারতীয় দর্শকদের মধ্যে খুশির ঢেউ বয়ে যায়।
কার্তিক এই ম্যাচে বিস্ফোরক ইনিংস খেলে অসম্ভবকে সম্ভব করে দিয়েছিলেন, একদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রেমীরা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে বাংলাদেশ হেরে গিয়েছে। দীনেশ কার্তিক এই ম্যাচে মাত্র ৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে জিতিয়ে দেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনির আসায় পাননি আগে সুযোগ
কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার এটাই যে দীনেশ কার্তিকের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটে অন্যায় হয়েছে।ধোনির সময়ে দীনেশ কার্তিককের কেরিয়ার চাপা পড়ে গিয়েছিল। সেই সময় কার্তিক ভালো প্রদর্শন করেন তা সত্ত্বেও তাকে দলে জায়গা দেওয়া হয়নি।অন্যদিকে যখন অস্ট্রেলিয়া সফরের ঘোষণা হয় তো কার্তিক সেই সময় গত ৯টি ওয়ানডে ম্যাচে ৬৮ গড়ে রান করেছিলেন। অন্যদিকে এই সময়ই কেএল রাহুল গত ৯টি ম্যাচে মাত্র ১৫ গড়ে রান করেছিলেন।
কেএল রাহুলের চেয়ে প্রত্যেক ফর্ম্যাটে ভালো প্রদর্শন
যদি টি-২০ কথা ধরা তো কার্তিক ৪৪ গড়ে আর ১৫০ স্ট্রাইকরেটে রান করেন। অন্যদিকে রাহুল ১৫ গড়ে আর ১১০ স্ট্রাইকরেটে ৭টি ইনিংসে রান করেছেন। যদিও এটা পরিস্কার যে ভারত রাহুলের দিকে দেখিয়েছে কিন্তু পরিসংখ্যান থেকে পরিস্কার যে কার্তিক কারো চেয়ে কম ছিলেন না। এমনকী কার্তিক ওপেনিংয়ে নেমেও নিজের ক্ষমতা দেখিয়েছেন। কার্তিক চার নম্বরে খেলার জন্য সবচেয়ে ভালো প্লেয়ার। এই মুহূর্তে চার নম্বর ব্যাটসম্যানের জন্য ভারতীয় দলে সংঘর্ষ জারি রয়েছে। তো কার্তিকের রূপে ভারতের কাছে ভালো খেলোয়াড় উপস্থিত রয়েছে।
চার নম্বরে যদি কার্তিকের রেকর্ড দেখেন তো তিনি ৫২ গড়ে আর ৭১ স্ট্রাইকরেটে ২৬৪ রান করেন। এতে পরিস্কার যে দীনেশ মিডল অর্ডারকে মজবুতি প্রদান করার ক্ষমতা রাখেন।