এশিয়া কাপ ২০১৮’ এর আসর শুরু হবার আগে কেউ কেউ হয়তো ভারতকে ফেভারিট দল হিসেবে মানতে নারাজ ছিলেন। কারণ হিসেবে ছিল অবশ্য ছিল কোহলির অনুপস্থিতি। এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণার মাধ্যমে জানানো হয় একদিনের ফরম্যাটে হতে যাওয়া এশিয়া কাপ জুড়ে দলের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করবেন রোহিত শর্মা।
আর এতেই বাজিমাত করে টিম ইন্ডিয়া। এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন উইকেটের জয় নিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। আর ফাইনাল জেতার পর প্রশংসিত হয়েছে রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বও। অনেক ক্রিকেট বোদ্ধাই মনে করেন একদিনের ক্রিকেটে কাপ্তান বিরাট কোহলির বিকল্প হতে পারেন রোহিত।
ঠিক কী কী কারণে রঙিন পোশাকে ক্যাপ্টেন হবার যোগ্যতা রাখেন রোহিত? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
৫. কোহলির কাঁধ থেকে দায়িত্ব কিছুটা কমানো
সব ফরম্যাটেই টিম ইন্ডিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি বেশ কিছুদিন ধরেই খেলে যাচ্ছেন টানা ক্রিকেট। নিজেকে মেলে ধরতে কিংবা দলের রান তোলার গতি ঠিক রাখতে চাপমুক্ত ক্রিকেট খেলার জন্য ওয়ানডেতে কোহলির বিকল্প হতে পারেন রোহিত শর্মা। তাহলে অন্তত ব্যাটিংয়ের দিকে বেশি মনোযোগী হতে পারবেন কোহলি।
৪. অধিনায়ক হিসেবে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন রোহিত

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রোহিত শর্মা ক্যাপ্টেন হিসেবে তরুণ হলেও ঘরোয়া লিগ আইপিএলে ২০১৩ সাল থেকেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নেতৃত্বে রয়েছেন রোহিত। ২০১৩, ২০১৫, ২০১৭ এই তিন আসরে মুম্বাইয়ের ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় ছিলেন ওপেনিং এই ব্যাটসম্যান। টিম স্পিরিটকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে ম্যাচ নিজেদের পক্ষে আনা যায় সেই টোটকা খুব ভাল করেই জানা রয়েছে রোহিত শর্মার। যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ এশিয়া কাপের এই আসরে শিরোপা জয়।
৩. নিজের সেরাটা দিতে রোহিত শর্মাকে অনুপ্রাণিত করে অধিনায়কত্ব

ক্রিকেট মাঠে ব্যাট চালানোর যে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে রোহিত শর্মার তাতে কারো সন্দেহ নেই। পাশাপাশি দলের দায়িত্বটাও বেশ শক্ত হাতেই সামাল দিতে প্রস্তুত থাকেন রোহিত। মূলত ২০১৩ সালে আইপিএলে যখন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলের কাপ্তানের দায়িত্ব তুলে দেয় রোহিত শর্মার হাতে তখন থেকেই তাঁর ক্যারিয়ারের সুদিন ফেরা শুরু করে। যদিও জাতীয় দলের হয়ে খুব বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পাননি ৩১ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান তবুও দায়িত্ব পেলে যে এর সঠিক ব্যবহার করবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই।
২. মাঠে খেলোয়াড়দের প্রতি আস্থা রাখতে পারেন রোহিত

কোহলির মতে সেরা ব্যাটসম্যান দলের সাথে না থাকায় এশিয়া কাপে কিছুটা শঙ্কা ছিল টিম ইন্ডিয়াকে নিয়ে। অন্যদিকে সদ্য ইনজুরি থেকে ফেরা ভুবনেশ্বর কুমার নিজেকে উজাড় করে দিতে কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও কপালে ছিল চিন্তার ভাঁজ। অন্যদিকে হংকংয়ের বিপক্ষে ভুবনেশ্বর কুমারের সাথে ছিলেন আরেক পেসার খলিল আহমেদ। রোহিত যেমন করে আস্থা রেখেছিলেন পেসার ভুবনশ্বরের প্রতি সেই আস্থার প্রতিদান দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ সেরা পারফর্ম করেন এই পেসার।
১. মাঠে কোহলির চেয়ে ভাল কৌশল ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতা

প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের কাবু করতে বোলিংয়ে যে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন তা খুব ভাল করেই জানেন রোহিত। অন্যদিকে দ্রুত একাধিক উইকেটের পতন ঘটলে কোহলি সাধারণত একজন রক্ষণাত্মক ব্যাটসম্যানকে মাঠে প্রবেশ করান। অপরপক্ষে, রোহিত ঠিক বিপরীত পথে হেঁটে একজন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানকে দায়িত্ব দেন রানের চাকা সচল রাখার জন্য। তাছাড়া প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা সূক্ষ্মভাবে বিচার করে ম্যাচের অবস্থা বুঝে যখন যে বোলারকে দিয়ে বল করানো প্রয়োজন তখন তাঁকে দিয়েই বল করান রোহিত।