২০১১ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগী এবং এর সঙ্গে জড়িত খেলোয়াড় উভয়ের স্মৃতিতেই অটুট থাকবে। এমএস ধোনির অধিনায়কত্বে ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল। কিন্তু সেই টুর্নামেন্টের আগে ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কা বাদে কোনও আয়োজক দেশ কখনও ট্রফি জিততে পারেনি। ২০১১ বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে ভারতের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়না দুর্দান্ত পারফর্ম করেন।
শেষের দিকে ব্যাত করতে নেমে রায়নার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জোরে ভারত ম্যাচ জিতেছিল। তিনবারের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোয়ার ফাইনালের ২৮ বলে ৩২ রান করেন রায়না। যুবরাজের সঙ্গে ৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। যা ভারতকে ম্যাচ জিততে সহায়তা করেছিল। সেই ম্যাচে ভারত শচীন তেন্ডুলকর, গৌতম গম্ভীর, যুবরাজের হাফ সেঞ্চুরি এবং সুরেশ রায়নার এক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের সাহায্যে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে পরাজিত করেছিল। এই পরাজয়ের পরে তৎকালীন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল।
তবে টুর্নামেন্টের রায়নার সবচেয়ে বড় অবদান মোহালির মাঠে সেমিফাইনালে এসেছিল, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। রায়নার ৩৯ বলে ৩৬ রানের ইনিংস ভারতকে ২৬০ রানের লক্ষ্য তৈরিতে সহায়তা করেছিল। এই ম্যাচটিকেই ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা মূহুর্ত বলেছেন। একটি ক্রিকেট শো তে তিনি বলেছেন, “আমি মনে করি ২০১১ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি সবচেয়ে স্মরণীয়। খেলাটি দুটি দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ভারতকে সেমিফাইনাল জিততে হয়েছিল। পাকিস্তান দল শীর্ষে ছিল, কারণ তারা শ্রীলঙ্কায় প্রচুর ম্যাচ খেলেছিল।”
“তার পরে আমাদের দল আরও শক্তিশালী হয়েছিল এবং আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে কখনই হারাতে পারিনি। ২০১১ বিশ্বকাপ উত্তেজনামূলক ছিল কারণ আমরা আমাদের ঘরের মাটিতে টুর্নামেন্ট খেলছিলাম এবং আমাদের চাপ ছিল। ফাইনালে আরও একটি খেলা খেলতে হত”, রায়না বলেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলার চাপ সম্পর্কেও রায়না বলেছেন, “আবেগ অন্যরকম ছিল তবে আমরা সবাই শান্ত থাকতে পেরেছি। আপনি যখন পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলছেন তখন আপনি নিজের সেরাটা নিশ্চিত করেছেন। আপনার দলকে এটি ফিরিয়ে দেওয়া দরকার; আপনার পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করা দরকার এবং অন্যান্য জিনিস। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি, এবং পুরো দলটি ভাল করেছে।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু এমএস ধোনি তার আন্তর্জাতিক কেরিয়ারকে বিদায় জানানোর কয়েক মুহূর্ত পরে রায়না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা করেছিলেন।রায়না ভারতের হয়ে ১৮ টি টেস্ট, ২২৬ টি ওয়ানডে এবং ৭৮ টি টি- ২০ ম্যাচ খেলেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিনটি ফর্ম্যাটে জুড়েই সেঞ্চুরি করেছিলেন।