একদিনের বিশ্বকাপে আজ ইংল্যাণ্ড আর আফগানিস্তান মুখোমুখি হয়েছিল। এই ম্যাচে ইংল্যাণ্ড প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রানের বিশাল স্কোর করে। দলের হয়ে অধিনায়ক ইয়োন মর্গ্যান ১৪৮ অন্যদিকে জো রুট ৮৮ রানের ইনিংস খেলেন। আফগানিস্তান দলের সামনে ম্যাচ জেতার জন্য ৩৯৮ রানের পাহাড়প্রমান লক্ষ্য ছিল। কিন্তু এই দল এত বড়ো স্কোরের জবাবে মাত্র ২৪৭ রানই করতে পারে আর এই ম্যাচ ১৫০ রানে হেরে যায়। এই হারের সঙ্গেই আফগানিস্তান দল এখন সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই ম্যাচে হওয়া রেকর্ডসের দিকে:
১. ইংল্যাণ্ডের অধিনায়ক ইয়োন মর্গ্যানের (১৪৮) এটি একদিনের ক্রিকেটে ১৩তম অন্যদিকে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম সেঞ্চুরি।
২. ইয়োন মর্গ্যানের এটি একদিনের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় স্কোর।
৩. অধিনায়ক ইয়োন মর্গ্যান এই ম্যাচে ছক্কা বৃষ্টি করে মোট ১৭টি ছক্কা মারেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে একটি ইনিংসে আজকের আগে কোনো খেলোয়াড় এত ছক্কা মারেননি। এই বিষয়ে মর্গ্যান রোহিত শর্মা, এবি ডেভিলিয়র্স আর ক্রিস গেইলের ১৬টি ছক্কার রেকর্ড ভাঙেন।
৪. ইয়োন মর্গ্যান বিশ্বকাপের একটি ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারা ব্যাটসম্যানও হয়েছেন। এই বিষয়ে মর্গ্যান ক্রিস গেইল (১৬টি ছক্কা বনাম জিম্বাবোয়ে ২০১৫)কে পেছনে ফেলেছেন।
৫. এই ম্যাচে ইয়োন মর্গ্যান স্রেফ ছক্কার সাহায্যে ১০২ রান করেন। ইয়োন মর্গ্যান ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম এমন খেলোয়াড় হলেন যিনি এক ইনিংসে ১০০+ রান স্রেফ ছক্কার সাহায্যে করেছেন।
৬. ইয়োন মর্গ্যান মাত্র ৫৭ বলে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। একদিনের বিশ্বকাপের ইতিহাসে মর্গ্যান সবচেয়ে দ্রুত সেঞ্চুরি করা ইংল্যাণ্ডের প্রথম অন্যদিকে বিশ্বের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হয়েছেন।
বিশ্বকাপ সবচেয়ে দ্রুত সেঞ্চুরি করার রেকর্ডের ব্যাপারে কেভিন ওব্র্যায়ান (৫০ বল বনাম ইংল্যান্ড), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫১ বল বনাম শ্রীলঙ্কা) আর এবি ডেভিলিয়র্স (৫২ বল বনাম ওয়েস্টইন্ডিজ) এর নাম আসে।
৭. এই ম্যাচে জো রুট আর মর্গ্যানের মধ্যে ১৮৯ রানের পার্টনারশিপ হয়। এই বিশ্বকাপে এটা পঞ্চম এমনবার যখন জো রুট কোনো সেঞ্চুরি পার্টনারশিপের অংশ থাকলেন। বিশ্বকাপে আজ পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় ৫এর বেশি সেঞ্চুরি পার্টনারশিপে অংশ নেননি। এই বিষয়ে রুট জাভেদ মিঁয়াদদ (১৯৯২) আর তিলকরত্নে দিলশান (২০১৫)কে ছুঁলেন।
৮. ইয়োন মর্গ্যান ইংল্যাণ্ডের হয়ে ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারা খেলোয়াড় হলেন। এই বিষয়ে মর্গ্যান জোস বাটলারের (১২ বনাম ওয়েস্টইন্ডিজ) রেকর্ড ভেঙেছেন।
৯. ইয়োন মর্গ্যান ১৪৮ রান বিশ্বকাপে কোনো ইংল্যাণ্ড খেলোয়াড়ের তৃতীয় সবচেয়ে বড়ো স্কোর। ইয়োন মর্গ্যানের আগে অ্যান্ড্রু স্ট্রস (১৫৮, বনাম ভারত) আর জেসন রয় (১৫৩ বনাম বাংলাদেশ) রয়েছেন।
১০. এই ম্যাচে জো রুট আর ইয়োন মর্গ্যান ১৮৯ রান যোগ করেছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ইংল্যান্ডের দলে এটি সবচেয়ে বড় পার্টনারশিপ দেখতে পাওয়া গেল। এই বিষয়ে এই জুটি ডি এমিস আর কে ফ্লেচারের (১৭৮ বনাম ভারত) রেকর্ড পেছনে ফেলে দিলেন।
১১. বিশ্বকাপে কোনো একটা ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারা দল হল ইংল্যান্ড (২৫টি ছক্কা)। এই বিষয়ে ইংল্যান্ড ওয়েস্টইন্ডিজকে (১৯টি ছক্কা বনাম জিম্বাবোয়ে ২০১৫) পেছনে ফেলে দিল।
১২. ৩৯৭/৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় স্কোর। এর আগে দলের সবচেয়ে বড়ো স্কোর ৩৮৬/৬ বনাম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছিল।
১৩. ইংল্যাণ্ড নিজেদের ইনিংসে ২৫টি ছক্কা মারে। একদিনের ক্রিকেট এক ইনিংসে এর আগে কোনো দল এত ছক্কা মারেনি। গত রেকর্ড ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্টইন্ডিজ ম্যাচে ছিল ২৪টি ছক্কা।
১৪. রশিদ খান এই ম্যাচে কোনো উইকেট না নিয়ে ১১০ রান দিয়েছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক ইনিংসে ১০০ রান দেওয়া রশিদ খান বিশ্বের প্রথম স্পিন বোলার হলেন।
১৫. রশিদ খান বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়া বোলার হয়েছেন। রশিদের আগে এই লজ্জাজনক রেকর্ড এম স্রেডনের (১০৫) নামে ছিল।
১৬. ওয়েনডের একটি ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়া রশিদ খান তৃতীয় বোলার হয়েছেন। রশিদের আগে এম লেভিস (১১৩ রান বনাম দক্ষিন আফ্রিকা), আর ওয়াহাব রিওয়াজ (১১০ বনাম ইংল্যান্ড) রয়েছেন।
১৭. ইয়োন মর্গ্যান (২১১) ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০০টি ছক্কা মারা বিশ্বের অষ্টম খেলোয়াড় হয়েছেন।
১৮. এই ম্যাচে ইয়োন মর্গ্যান রশিদ খানকের বিরুদ্ধে ৭টি ছক্কা মারেন। ওয়ানডেতে আজকের আগে কোনো ব্যাটসম্যান এক ইনিংসে কোনো বোলারকে এত ছক্কা মারেননি।
১৯. আফগানিস্তানের এটি বিশ্বকাপে লাগাতার পঞ্চম হার।