গত মেলবোর্ন টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে আট উইকেটে হারিয়ে আবারও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে ভারতীয় দল। ৩৬ রানে অল আউট হওয়ার এই লজ্জাজনক নজির থেকে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল অজিঙ্ক রাহানের নেতৃত্বাধীন ভারত, তা সত্যিই কৃতিত্বের। আর এই জয়ের ক্ষেত্রে বড় কৃতিত্ব যায় অভিষেক করা দুই ক্রিকেটার শুভমন গিল এবং মহম্মদ সিরাজের। তাদের পারফর্মেন্স নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিজের প্রথম ম্যাচে দুই ইনিংসে ৪৫ এবং অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তরুণ ব্যাটসম্যান শুভমন গিল, এদিকে নিজের প্রথম ম্যাচেই দুই ইনিংস মিলিয়ে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন তরুণ পেসার মহম্মদ সিরাজ। আর এর ফলে অস্ট্রেলিয়াকে দাঁড়াতে দেয়নি টিম ইন্ডিয়া। এবার তরুণ পেসার মহম্মদ সিরাজ যেভাবে এই সফরের মাঝখানে নিজের পিতাকে হারানোর পরেও এই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উঠে এসেছেন, তা নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখলেন প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতার।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আখতার প্রশংসা করেন মহম্মদ সিরাজের এমন মানসিক জোরকে। পাশাপাশি ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টেরও প্রশংসা করেছেন যেভাবে তারা জাত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষ সকল খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়ায়। এই নিয়ে আখতার বলেছেন, “নিজের পিতাকে হারানোর পর এটি ওনার (মহম্মদ সিরাজ) কাছে খুব কঠিন ছিল। উনি ওনার সহ খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সমস্ত সমর্থন পেয়েছেন। আর এটিই দেখায় যে জাত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ড্রেসিং রুমে ভারতীয় দল নিজেদের খেলোয়াড়দের উপর ভরসা রাখে। এই মুহুর্তটি ওনার পিতার কাছে অন্যতম সেরা মুহুর্ত হতে পারত, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত উনি তা দেখে যেতে পারলেন না। এটিই দেখায় যে গোটা ড্রেসিং রুম কিভাবে এই খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল।”
এরপর স্টপগ্যাপ অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানেরও প্রশংসা করেছেন শোয়েব আখতার। যেভাবে উনি বুদ্ধিমত্তার সাথে অধিনায়কত্ব করেছেন এবং বোলারদের সময় মতন ব্যবহার করেছেন, তা বেশ ভালো। এই নিয়ে আখতার বলেছেন, “অজিঙ্ক রাহানে নিশ্চিত করেছিলেন উনি ব্যাট হাতে এবং পারফর্মেন্সের মাধ্যমে একজন ব্র্যান্ড হিসেবে উঠে আসবেন। ওনার অধিনায়কত্বও খুবই বুদ্ধিদীপ্ত ছিল। বিশেষত ওনার বোলিং পরিবর্তন, যেভাবে তিনি জসপ্রীত বুমরাহকে ব্যবহার করেছেন, যেভাবে উনি মহম্মদ সিরাজকে ব্যবহার করেছেন।”
এরপর ভারতীয় দল যেভাবে অস্ট্রেলিয়াকে পর্যদুস্ত করেছে, তাতে বোঝায় এই ভারতীয় দল নিজেদের সাফল্যের মাধ্যমে দুনিয়াকে আওয়াজ দিতে চায় – এমনটাই বক্তব্য শোয়েব আখতারের। এই নিয়ে তিনি বলেছেন, “টিম ইন্ডিয়া এমনভাবে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে যেন আপনি কাউকে বস্তায় বেঁধে মারছেন। দুঃসময়ে চরিত্র তৈরি হয় না, চরিত্র প্রদর্শন করে। টিম ইন্ডিয়া নিজেদের প্রতিভা দেখিয়েছে যখন তারা গভীর দুঃসময়ে ছিল। এটাই টিম ইন্ডিয়ার চরিত্র।”