দুরন্ত শাকিব, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টের আসরে ঐতিহাসিক জয়ের পর শচীন, বীরুর ট্য়ুইট 1

কে বলেছে টেস্ট ক্রিকেটের অস্তিত্ব বিপদের মুখে। টি-২০ ক্রিকেটের বাড়বাড়ন্তে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট নিয়ে আনাগ্রহ বাড়লেও, টেস্ট ক্রিকেট দিনদিন চমক দেখিয়েই চলেছে। পনেরো ঘণ্টার ব্য়বধানে অস্তিত্ব রক্ষার অশনি সঙ্কেতকে বুড়ো আঙুল দেখালো পাঁচদিনের পাজামা ক্রিকেট। বুধবার অস্ট্রেলিয়াকে ঢাকার মীরপুরে প্রথম টেস্টে কুড়ি রানে হারালো বাংলাদেশ। চারদিনেই টেস্ট ম্য়াচ শেষ। টেস্টের আসরে এই প্রথমবার প্রবল শক্তিধর অজিদের হারালো বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া পাঁচবার লাল বলের ক্রিকেটে মুখোমুখি হলেও, বাংলাদেশ একবারও সুবিধা করে উঠতে পারেনি। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে নতুন অধ্য়ায় হিসেবে লেখা থাকবে। ওদিকে, গতমঙ্গলবার ইংল্য়ান্ডকে হারিয়ে অবাক করে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০০ সালের পর এই প্রথম তাদের মাটিতে ইংল্য়ান্ডকে হারালো একসময়কার বিশ্বত্রাস ক্য়ারিবিয়ান ক্রিকেট টিম। টেস্ট ক্রিকেট যে কোনওদিন ফুরিয়ে যাবে না, তা প্রমাণ করে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জয়ের পর ক্রিকেট গড শচীন তেন্ডুলকর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁদের। তিনি ট্য়ুইট করেন, ”পরপর দু’দিনে দু’টি ঘটনা। বাংলাদেশ উৎসাহজনক ক্রিকেট খেলেছে। টেস্ট ক্রিকেট এগিয়ে চলেছে।” ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ অস্ট্রেলিয়ার ওপর বাংলাদেশের দাপুটে জয়ে দারুন খুশি। ট্য়ুইটে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বীরু। ”দারুণ খেলেছো বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে বিশেষ প্রচেষ্টা।”
২০০০ সালে টেস্ট খেলিয়ে দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেক লড়াই চালিয়ে এই জায়গায় পৌঁছতে হয়েছে। গত দেড় বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। এই নিয়ে প্রায় ১৭ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশ তাদের দশম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল। এই বছরেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া আর কোনও বড় দলকে য়েস্টের আসরে এখনও পর্যন্ত হারাতে পারেনি তারা। বাকি আটটি টেস্ট জয় জিম্বাবোয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দলের বিরুদ্ধে।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা টেস্টে নায়ক বাংলাদেশের স্টার অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসান। প্রথম ইনিংসে ৮৪ রান করার পর অস্ট্রেসিয়ার দুই ইনিংসেই পাঁচটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর বোলিং ফিগার ১৫৩ রান দিয়ে ১০ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া যে হারতে চলেছে তা ভাবাই যায়নি। ডেভিড ওয়ার্নার শতরান (১৬৪ বলে ১১২ রান) করার পাশাপাশি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ১৩০ রান যোগ করেন। জয়ের থেকে তখন মাত্র ১০৭ রান দূরে দাঁড়িয়েছিল অজিরা। কিন্তু, ওয়ার্নার ফিরে যাওয়ার পরই সব হিসেবনিকেশ উল্টে যায়। শেষ সাতটি উইকেট ৮৬ রানে হারান অস্ট্রেলিয়ানরা। তবে, অস্ট্রেলিয়া হারলেও পেস বোলার জশ হেজলউডের প্রশংসা করতেই হবে। ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনে চোট পেয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজ সহ আসন্ন ভারত সফর থেকেও ছিটকে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ব্য়াটহাতে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে ক্রিজে লড়াই করতে নামেন তিনি। তাইজুল ইসলামের বলে হেজলউড এলবিডব্লু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ কুড়ি রানে ম্য়াচটি জিতে নেয়। প্য়াট কামিন্স ৩৩ রানে অপরাজিত থেকে যান।
ম্য়াচের সংক্ষিপ্ত স্কোর : –
বাংলাদেশ – ২৬০ ও ২২১
অস্ট্রেলিয়া – ২১৭ ও ২৪৪
বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *