দশম আইপিএলের দু’সপ্তাহ কেটে গেল প্রায়। এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের সাক্ষী থেকেছে দর্শকেরা। পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে থাকা দলগুলিও এক একটা করে ম্যাচ জিতে ধীরে ধীরে কঠিন লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে তুলনামূলক শক্ত বিপক্ষদের। ফলে এই বাকি কয়েকদিনে এই লিগ আরও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠবে তেমনই আভাস মিলছে।
আজ ইডেন গার্ডেন্সে আরসিবির বিরুদ্ধে কেমন দল নামাবে কেকেআর, দেখে নেওয়া যাক
এই পরিস্থিতিতে রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে আরসিবি ও কেকেআর মুখোমুখি হতে চলেছে। এই ম্যাচে জিততে দুজনেই মরিয়া। কারণ এই ম্যাচে জিতে নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখতে চায় আরসিবি। কেকেআরও প্লেঅফে জায়গা পাকা করতে এই ম্যাচে জিততে মরিয়া। গুজরাটের বিরুদ্ধে ম্যাচ হেরে কেকেআরের জয়ের ধারা কিছুটা ধাক্কা পেয়েছে।
দুটি দলকে একবার দেখে নেওয়া যাক —
আরসিবি – প্রতিবারের মত এইবছরেও আরসিবি সবার জনপ্রিয় দল হলেও তেমন কিছু করতে পারেনি। প্রথম তিনটি ম্যাচে বিরাট কোহলির অবর্তমানে একটি ম্যাচে জিতেছে তারা। কোহলি আসার পরের তিনটি ম্যাচেও দুটিতে হেরেছে আরসিবি। শেষ ম্যাচে গুজরাটের বিরুদ্ধে ক্রিস গেইলের দুরন্ত ফর্মে আরসিবি ২১৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় আরসিবি। এদিন মাত্র ৩৮ বলে ৭৭ রান করেন গেইল। এই ফর্মকেই কাজে লাগিয়েই প্লেঅফের জায়গা পাকা করতে চাইছে আরসিবি।
কেকেআর
বিগত তিন বছরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের যথেষ্ঠ ভাল ভারসাম্য লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই বছরও প্রথম থেকেই দারুণ ফর্মে দেখা যাচ্ছে এই দলকে। ২০১৪-এর পর থেকে কেকেআরের দলে তেমন কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে একই খেলোয়ার একসঙ্গে খেলায় একটা সুন্দর মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে। এটাই এই দলের সবথেকে ভাল দিক। গৌতম গম্ভীর, রবীন উথাপ্পা, উমেশ যাদব, সূর্যকুমার যাদব, পীয়ূস চাওলা, পাঠান অনেকদিন ধরেই একসঙ্গে খেলছে।
দুই দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দেখে নেওয়া যাক একবার –
বিরাট কোহলির ফর্মে ফেরাটাই এই দলের মূল চিন্তা। যদিও শেষ ম্যাচে ক্রিস গেইল ফর্মে ফেরায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে আরসিবি। এদিকে চোটের কারণে আগের ম্যাচে দেখা যায়নি এবিডিকে। তবে রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে দেখা যাবে তাঁকে। এছাড়া যযুবেন্দ্র চাহলের পাশাপাশি, ভারতীয় সম্বলিত বেশ কঠিন বোলিং বিভাগ রয়েছে আরসিবি। এর পাশাপাশি টাইমল মিলস, বদ্রীর মত বিদেশী বোলাররাও এই বিভাগের শক্তি বাড়িয়েছে।
কেকেআর
ভারতের প্রাক্তণ অধিনায়ক তথা সিএবির চেয়ারম্যান সৌরভ গাঙ্গোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে তৈরি পিচে ইডেন গার্ডেন্সে কেকেআ কেমন খেলেন সেটাই দেখার। যদিও ইডেনের এই পিচ প্রথম বল থেকে টার্ন দেখা যায়। পাশাপাশি পিচের মধ্যে হাল্কা ঘাস থাকায় স্যুইংও দেখা যায়। সেই কারনেই ঘরে মাঠে কেকেআর অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। এই ম্যাচে কেকেআরের টপ ওর্ডারের ব্যাটসম্যানরা বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পরতে চলেছে।
তবে এই পিচে উমেশ যাদব, ন্যাথন কুলটার নাইল ও ক্রিস ওকস দারুণ বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া গৌতম গম্ভীরের আক্রমণাত্মক নেতৃ্ত্বে বেশ ভাল অবস্থাতেই রয়েছে কেকেআর।
দুই দলের শক্তি
শেষ ম্যাচে বোলারদের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছিল ক্রিস গেইল। হঠাৎই এই দ্বৈত্য জেগে ওঠায় রীতিমত চিন্তায় পড়েছে বিপক্ষের বোলাররা। কেকেআরের বোলারদেরও এই চিন্তা থাকবে। এছাড়া এবিডি, কেদার যাদব বা ট্রাভিস হেডও শেষের দিকে বিদ্যুত গতিতে রান টেনে নিয়ে যেতে সক্ষম।
এদিকে টাইমল মিলস, স্যামুয়েল বদ্রী বা চাহলের নেতৃ্ত্বে বেশ শক্ত আরবির বোলিং বিভাগ।
কেকেআর
এই দলের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। তিনি এখন ভাল ফর্মে রয়েছেন। এটাই সবথেকে ভাল দিক। এছাড়া ব্যাটিংয়ে গম্ভীরের বিভিন্ন চমকে এখনও পর্যন্ত বেশ সাফল্যও পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, মনীষ পান্ডে, ইউসুফ পাঠানের ব্যাটেও ভাল রান এসেছে এই কদিনে।
বোলিংয়ের দিকে কেকেআর অন্যতম শক্ত দল। উমেশ যাদব, কুলটার নাইল ও ওকসের মত সিমারদের দাপটে দ্রুত রান করাটা মুসকি। আবার কূলদ্বীপ যাদব, নারিনের উপযুক্ত সময়ে উইকেট দিতেও সক্ষম।
এতদিনে কার কী ফল
এতদিনে আইপিএলে ১৮ টি ম্যাচে মুখোমুখি দুজনেই একই সংখ্যক ম্যাচ জিতেছে।
ভবিষ্যতবানী
ঘরের মাঠে খেলার জন্য কেকেআর অবশ্যই একটু এগিয়ে থাকবে এই ম্যাচে। এছাড়া এই আইপিএলে দুরন্ত ফর্মে রয়েছে তারা। এই ম্যাচে জিতে নিজেদের প্লেঅফের দিকে একধাপ এগিয়ে যেতে চাইছে।
এদিকে গেইল ও কোহলিদের ফর্ম ফিরে এসেছে শেষ ম্যাচে। তারাও এই ম্যাচে জিতে নিজেদের হারানো দাপট ফিরে পেতে চাইছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে একটা কঠিন লড়াই লক্ষ্য করবে ইডেন। প্রথমে ব্যাট করে ১৭০-১৮০ রান তুলতে পারলে একটা কঠিন লড়াই লক্ষ্য করা যাবে।