শচীন তেন্ডুলকরকে সারা দুনিয়া চিনেছে। কিন্তু, তাঁর গুরুদেব আচরেকর স্য়ার? তাঁর কথা মানুষ শুধুই শুনেছে। আর মাঝেমধ্য়ে কয়েকটা ছবি। ব্য়াস ওইটুকুই। এর বাইরে? মানুষটাকে নিয়ে তো সত্য়িই কেউ কিছু জানে না। মারাঠী ক্রিকেটের বাইরের মানুষ ছাড়া, বাকিরা তো শচীনের মুখেই তাঁর গুরু দ্রোণের গল্প শুনেছেন। এছাড়া আর কিছু জানা নেই আলাদা করে। ক্রিকেটের বাইরে, কেমন মানুষ ছিলেন তিনি?
জানার আগ্রহের অপেক্ষা খুব তাড়াতাড়িই অবসান হতে চলেছে। শচীনের গুরু রমাকান্ত আচরেকরকে নিয়ে এবার ডকু ড্রামা শীঘ্রই বড়পর্দায় আসতে চলেছে। আর আচরেকর স্য়ারের ভূমিকায় অভিনয় করবেন নব্বইয়ের দশকের টিভি সিরিয়াল ব্য়োমকেশ বক্সি খ্য়াত চলচ্চিত্র ও নাট্য়াভিনেতা রজিত কাপুর। ১৯৯৬ সালে ‘দ্য় মেকিং অফ দ্য় মহাত্মা‘ অভিনয়ের জন্য় জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন এই পোড় খাওয়া অভিনেতা। আচরকের ভূমিকায় ‘স্য়ার‘ ছবির শ্য়ুটিংয়ে এখন ব্য়স্ত রজিত। ছবিটিতে রমাকান্ত আচরেকরের গোটা জীবনটাই ক্রীড়া ও সিনেমাপ্রেমীদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করে হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ছবিটির বেশিরভাগ অংশই শ্য়ুটিং হয়ে গিয়েছে। নির্দেশক প্রমোদ পুরসওয়ানে এখন মুম্বইতে ছবির কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশের শ্য়ুটিং করছেন রজিতকে নিয়ে।
তাঁর ছবির বিষয়ে পুরসওয়ানে বলেন, ”রজিত কাপুরের মতো একজন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে পারা বড় ব্য়াপার। এর মধ্য়েই বেশ কয়েকটি দৃশ্য়ের শ্য়ুটিংও করে ফেলেছি রজিতকে নিয়ে। আর কয়েকটা বাকি আছে।”
এই ডকু ড্রামাটি মুক্তি পেলে শচীনের আচরেকর স্য়ারকে নিয়ে অন্তরালে থেকে যাওয়া অনেক তথ্য়ই জানতে পারবেন দর্শকরা। ছবিটির জন্য় ‘স্য়ার‘ নামটি শচীন নিজেই ঠিক করে দিয়েছেন। ছবিটিতে গুরুর অনেক অজানা কাহিনীও মাস্টার-ব্লাস্টারের মুখ থেকে পাওয়া যাবে, যাতে আগ্রহী দর্শকরা জানতে পারেন। আচরেকরের আরও পাঁচ ছাত্র – প্রবীন আমরে, চন্দ্রকান্ত পন্ডিত, অমল মজুমদার, অজিত তেন্ডুলকর ও অতুল রানাডেকেও গল্পকারকের ভূমিকায় রাখা হয়েছে ছবিতে।
রমাকান্ত আচরেকরের মতো একজন ক্রিকেট ব্য়ক্তিত্বের ভূমিকায় অভিনয় করতে পেরে রজিত কাপুর বেশ উচ্ছ্বসিত। বললেন, ”ছবির নির্দেশক যখন ছবিটির প্রস্তাব নিয়ে আমার কাছে আসেন, তখন আমি ভালো করে বিষয়বস্তুটা শুনি। বোঝার চেষ্টা করি, উনি ঠিক কি চাইছেন! এবার যেহেতু সেভাবে আচরেকরের ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে নেই, তাই আমরা ঠিক করি, বেশিরভাগ কাহিনীকে নাট্য়রূপ দিতে হবে। এখনও কিছু অংশ শ্য়ুটিং করতে বাকি আছে।”
বেশিরভাগ মানুষ রমাকান্ত আচরেকরকে শচীন গুরু হিসেবে চেনেন, তাই নির্দেশক ছবিটিতে তাঁর অন্য়দিকগুলিও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন অজানা গল্পটা জানানোর জন্য়। ছবিতে দেখা যাবে কিভাবে তাঁর ছাত্রদের ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি, তাদের আর্থিকভাবেও সহায়তা করতেন আচরেকর। অনূর্ধ্ব-১৯ তারকা সরফরাজ খানের জীবনের একটি অধ্য়ায়েরও উল্লেখ ছবিতে রাখা হয়েছে। প্রমোদ এবিষয়ে ব্য়াখ্য়া দেন, ”আমরা ছবিতে দেখাতে চেয়েছি, নিজে আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল না হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে উনি তাঁর ছাত্রদের সাহায্য় করতেন। আজকাল এইসব জিনিস দেখাই যায় না। কত তরুণ প্রতিভা বেড়ে উঠার সময়ে হোঁচট খায়, ওনার মতো শিক্ষকের অভাবে। আমরা এই কারণেই সরফরাজের জীবনের একটা অধ্য়ায়কে এখানে রেখেছি, দর্শকদের বিষয়টা বোঝানোর জন্য়। কিভাবে নানান অভাব-অনটনের মধ্য়ে থেকে মধ্য়বিত্ত পরিবারের একটা ছেলে ক্রিকেটার হতে গিয়ে সমস্য়ার সম্মুখীন হয়েছে।”