যখন নির্বাচকরা দলে সুযোগ না দিলে অধিকাংশ খেলোয়ার আরো কঠোর পরিশ্রম করেন কিংবা খেলা থেকে অবসর নিয়ে নেন সেখানে পাকিস্তানী তরুণ ক্রিকেটার গোলাম হায়দার আব্বাস করলেন এক অদ্ভুদ কান্ড! গোলাম হায়দার আব্বাস নামের এই ক্রিকেটার ডানহাতি পেস বোলার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সুযোগ না পেয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। মাঠে খেলা চলাকালীন ভয়ানক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন এই ক্রিকেটার! তাকে ক্রিকেটার না বলে ‘পাগল’ বললেও ভুল হবে না। পাগল না হলে কেউ শুধু মাত্র খেলায় সুযোগ না পাওয়ার হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা করে? অবিশ্বাস্য হলেও এই ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে!
ডানহাতি পেসার আব্বাস কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে সুযোগের জন্য এমন ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। তিনি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে সুযোগ চেয়েছিলেন শুধু। তাঁর দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় সংগঠকেরা। কিন্তু তিনি সুযোগ পাচ্ছেন না। লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এলসিসিএ) পূর্বাঞ্চলের এই ক্রিকেটারের মাঠের পারফরম্যান্স নাকি যথেষ্টই ভালো। ঘটনার সময় গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ চলছিল। এমন সময় আচমকা শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি! আশপাশে থাকা লোকজন এই ঘটনা দেখে দ্রুত এগিয়ে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এরপর তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ভিড় করেন গণমাধ্যম কর্মীরা। নির্বাচকেরা ঘুষ চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি। আব্বাস বলেন, ‘আমার পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। কিন্তু আমি সুযোগ পাচ্ছিলাম না। বারবার অনুরোধ করে আমি অতিষ্ঠ। শেষ পর্যন্ত তারা সুযোগ করে দেওয়ার বিনিময়ে আমার কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ চেয়ে বসে। আমি গরিব পরিবারের ছেলে, আমি টাকা কোথায় পাব?
আব্বাস আরো বলেন, ‘আমি মারা গেলে আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ওই সব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা, যারা মেধার ভিত্তিতে খেলোয়াড়দের সুযোগ করে দিতে চায় না।’ আব্বাসের কয়েকজন সতীর্থও নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এলসিসিএ) পূর্বাঞ্চলের ক্রিকেটার আব্বাসের মাঠের পারফরম্যান্স বেশ ভালো। কিন্তু দরিদ্র ঘরের এই ছেলেটিকে দীর্ঘদিন ধরেই নাকি ক্রিকেটে সুযোগ করে দেওয়ার নাম করে ঘোরাচ্ছিল স্থানীয় ক্রিকেট কর্তারা। শেষ পর্যন্ত হতাশা আর ক্ষোভে এই ভয়ানক ঘটনা ঘটান আব্বাস। তার অবস্থা এখনও পুরোপুরি বিপদমুক্ত নয়।