আইপিএলের নিলামের পর থেকেই শুরু হয়েছিল সমালোচনা। বলা হয়েছিল সমস্ত বুড়ো এবং বাতিল ঘোড়াদের নিয়ে গড়া হয়েছে সিএসকের দল। খুব বেশি দূর তাদের এগোনো নিয়েও সন্দীহান ছিলেন তাবড় তাবড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সকলকেই ভুল প্রমানিত করে চলতি আইপিএল স্বপ্নের কামব্যাক করল চেন্নাই সুপার কিংস। এই নিয়ে তৃতীয়বার তারা এই খেতাব তুলে নিল নিজেদের দখলে। বুড়ো ওয়াটসন এবং বাতিল রায়নার অসাধারণ ইনিংসের সৌজন্য হায়দ্রাবাদকে ৯ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে হারিয়ে দিল তারা।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত ধোনির
ফাইনাল ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ টসে জিততে ব্যর্থ হন হায়দ্রাবাদ অধিনায়ক কেন উইলিয়াসমন। টসে জিতে প্রথমে হায়দ্রাবাদকে ব্যাট করতে আমন্ত্রন জানান মহেন্দ্র সিং ধোনি। শিখরের সঙ্গে ওপেন করতে নামা শ্রীবৎস গোস্বামী ব্যর্থ হন এবং রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। এখান থেকেই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং শিখর ধবন মিলে হায়দ্রাবাদের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ২৫ বলে ২৬ রান করা ধবনকে বোল্ড করেন রবীন্দ্র জাদেজা।
কিন্তু একদিক ধরে রেখে হায়দ্রাবাদ ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন উইলিয়ামসন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৭ রানের মাথায় কর্ণ শর্মা ফিরিয়ে দেন তাকে। এরপরেই সাকিব এবং ইউসুফ পাঠান মিলে হায়দ্রাবাদের রান এগিয়ে নিয়ে যান। ইউসুফ পাঠান ৪৫ রান করে আউট হন। শেষ দিকে কার্লোস ব্রেথওয়েট ১১ বলে ২১ রান দিয়ে দলের রানকে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৮ রানে পৌঁছে দেন।
ওয়াটসনের সেঞ্চুরিতে সিএসকের জয়
জবাবে ব্যাট করতে নেমে হায়দ্রাবাদের মতই চেন্নাইয়ের শুরুটাও ধীরে করে তাদের দুই ওপেনার ফাফ দু’প্লেসি এবং শেন ওয়াটসন। ওয়াটসন নিজের প্রথম রান করতে নেন ১০ বল। এরপরেই দ্রুত আউট হয়ে যান দু’প্লেসি। এখান থেকেই দলের ইনিংসের হাল নিজের কাঁধে তুলে নেন ওয়াটসন। সেই সঙ্গে চলতি আইপিএলে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন তিনি।
তার ৫৭ বলে অপরাজিত ১১৭ রানের সুবাদেই হলুদ ব্রিগ্রেড এই ম্যাচ ১৯ তম ওভারেই জিতে নেয়। শেষ ওভারের আগের ওভারের তৃতীয় বলে আম্বাতি রায়ডু চার মেরে দলকে জয় এনে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিএসকের ক্যাম্পে জয়ের সেলিব্রেশন শুরু হয়ে যায়।
বয়েস নয় ফিটনেস ম্যাটার করে
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি জানান, “ (ব্র্যাভোর প্যাড পড়ে বসে থাকায়) ও এটা নিজে থেকেই করে যাচ্ছিল। আমাদের সেভাবে কোনও পরিকল্পনা ছিল না। ফাফ দু’প্লেসি ওপেন করায় রায়ডুকে চার নম্বরে পাঠানো হয়। কিন্তু ব্র্যাভো এমন একজন যে সহজেই প্যাড পড়ে নেয় এবং প্রস্তুত থাকে। প্রথম চ্যাম্পিয়নশিপ জেতাটা কেমন ছিল সেটা মনে রাখা খুবই কঠিন। প্রচুর মানুষ পরিসংখ্যান নিয়ে কথা বলছে, তাই আজ হল ২৭, আমার জার্সি নাম্বারও ৭, এবং এটা আমাদের জন্য সপ্তম ফাইনাল। ফলে যথেষ্ট কারণ রয়েছে এটা জেতার। কিন্তু এ সমস্ত কোনও কারণই ম্যাটার করে না, যেটা ম্যাটার করে তা হলে শেষ পর্যন্ত আমরা জিতেছি”।
বয়েস সম্পর্কে অনেক কথাই শুনেছি
সমালোচকদের বয়েস নিয়ে কথা বলা নিয়ে বলতে গিয়ে ধোনি আরও জানান, “আমরা বয়স সম্পর্কে প্রচুরকথা শুনেছি, কিন্তু যেটা ম্যাটার করে তা হল ফিটনেস। উদাহরণ হল রায়ডু যার বয়েস ৩৩, ও এমন একজন যে ভীষণ ফিট, মাঠের অনেকটা জায়গা কভার করে। এমনকী ও যদি বেশ কিছু ম্যাচ খেলে যেখানে ও প্রচুর সময় মাঠে এবং ফিল্ডে কাটিয়েছে, ও কখনও অভিযোগ করে নি। তাই এটাই হল ফিটনেস যেটা সত্যি ম্যাটার করে বয়েসের তুলণায়। অধিনায়ক যা চায় তা হল প্লেয়াররা মাঠে ভাল করে মুভ করুক। এটা ম্যাটার করে না কোন বছরে প্লেয়ার জন্মেছে, আপনার বয়েস ১৯ বা ২০ যাই হোন না কেন আপনাকে চটপটে থাকতে হবে। আপনাকে আপনার খামতি গুলোকে মেনে নিতে হবে। উদাহরণ হিসেবে যদি আমি ওয়াটসনকে সিঙ্গল নিতে বাধা দিই, তাহলে খুব ভাল সুযোগ থাকবে যে ও ওর হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে যাবে”।