ক্রিকেট জগতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ সবচেয়ে বড়ো পয়সাবহুল লীগের মধ্যে একটা। আইপিএলের শুরু ২০০৮ এ বিসিসিআই বড়ো স্তরে করে। এরপর থেকে এই লীগ পুরো ক্রিকেট জগতে নিজের একটা আলাদাই প্রভাব বিস্তার করেছে। আইপিএলের সবচেয়ে বড়ো শক্তি এখানে পাওয়া টাকা যা প্রত্যেক মরশুমে বেড়ে চলে।
আইপিএলে এমএস ধোনির চেয়ে বেশি রোজগার করা খেলোয়াড়দের তালিকা
আইপিএল ২০০৮এ শুরুর পর থেকে এখনো পর্যন্ত এই লীগের ১২টি মরশুম পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেক বছর নীলামে খেলোয়াড়দের উপর জমিয়ে টাকা বৃষ্টি হয়, যার মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির যথেষ্ট টাকা পেয়েছেন। ২০০৮এ প্রথম মরশুমে হওয়া নিলামে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে চেন্নাই সুপার কিংস একজন আইকনিক খেলোয়াড় হিসেবে দলে শামিল করেছিলেন। ধোনি সেই সময়ের নীলামে সবচেয়ে দামী ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে সামনে এসেছিলেন। এরপর ধোনির প্রাইস মানি অন্য খেলোয়াড়দের তুলনায় কমই থেকেছে। তো আসুন দেখা যাক প্রত্যেক বছর ধোনির প্রাইস লিস্টে তার থেকে বেশি রোজগার করা খেলোয়াড় কারা।
বিরাট কোহলি (২০১৮)
আইপিএলে আরসিবির অধিনায়ক কোহলি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি টাকা নেওয়া খেলোয়াড়। বিরাট কোহলি নিজের ফ্রেঞ্চাইজির তরফে সবচেয়ে বেশি রোজগার করছেন। কোহলিকে আরসিবি ২০১৮য় ১৭ কোটি টাকায় রিটেন করে। এত বড়ো দাম এখনো পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় পাননি। অন্যদিকে ধোনি তার চেয়ে অনেকটাই পেছিয়ে গিয়েছেন। এমনিতে নিয়ম অনুসারে একটি ফ্রেঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ১৫ কোটি টাকা কোনো খেলোয়াড়কে দিতে পারে, কিন্তু আরসিবি কোহলিকে নেওয়ার জন্য ২ কোটি টাকা আলাদাভাবে দেয়।
কেভিন পিটারসেন আর অ্যাণ্ড্রু ফ্লিনটপ (২০০৯)
প্রথম মরশুমে মহেন্দ্র সিং ধোনি সবচেয়ে বেশি দাম পাওয়া খেলোয়াড় থেকেছেন, কিন্তু এরপর দ্বিতীয় মরশুমের নিলামে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের জাদু দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন তারকা খেলোয়াড় থাকা অ্যান্ড্রু ফ্লিনটপকে চেন্নাই সুপার কিংস ১.৫৫ মিলিয়ন ডলারে এবং ওই একই টাকাই কেভিন পিটারসেনকে আরসিবি দলে নেয়। এই দুজন সেই মরশ্যমে ধোনির ১.৫৫ মিলিয়নের বেস প্রাইসকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হয়েছিলেন।
গৌতম গম্ভীর (২০১১)
আপিএলের ২০১১র মরশুমে নিলামে নতুনভাবে দাম নির্ধারিত হয়, কিন্তু কিছু এমন খেলোয়াড় থেকেছেন যাদের নিজের নিজের ফ্রেঞ্চাইজি ধরে রাখে। এই অবস্থায় ধোনিকেও সিএসকে ধরে রাখে এবং তিনি নিলামে শামিল হননি। এই বারের নিলামে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস থেকে সরা গৌতম গম্ভীর দারুণ দাম পান। গৌতম গম্ভীরকে কেকেআর ১১.০৪ কোটি টাকায় নিজেদের দলে শামিল করে। তার এই দামের সামনে বাকি খেলোয়াড়রা পেছিয়ে যান। এই মরশুমে ধোনি্র দাম বাড়িয়ে ১.৮ মিলিয়ন করা হয়।
রবীন্দ্র জাদেজা (২০১২)
আইপিএলে এখন তো প্রত্যেক বছর নিলাম হওয়া শুরু হয়েছে। নিলামের বাজারে তারকা খেলোয়াড়দের আসায় নিলামের রোমাঞ্চ বেড়ে গিয়েছে। ২০১২য় নিলামে রবীন্দ্র জাদেজা শামিল হন। রবীন্দ্র জাদেজার এমনিতে বেশ দাম পাওয়ার আশা ছিল না, কিন্তু চেন্নাই সুপার কিংস তাকে নিজেদের দলের অংশ করার জন্য ২ মিলিয়ন ডলার দিতে রাজি হয়ে যায়। ওই নিলামে তিনি সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হিসেবে উঠে আসেন।
যুবরাজ সিং (২০১৪)
ভারতীয় দলের প্রাক্তন তারকা ব্যাটসম্যান আইপিএলে বেশকিছু দলের হয়ে খেলেছেন। যুবরাজ সিং আইপিএলের দ্বাদশ মরশুম পর্যন্ত আলাদা আলাদা ৬টি দলের হয়ে খেলেছেন। ২০১৪র নিলাম চলাকালীন যুবরাজ সিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো সংঘর্ষ করছিলেন, কিন্তু নিলামে তার দারুণ প্রভাব দেখা যায়। নিলামে যুবরাজ সিংকে আরসিবি ১৪ কোটি টাকার মোটা দামে কিনে নেয়।
যুবরাজ সিং (২০১৫)
যুবরাজ সিংয়ের জন্য এমনিতে আইপিএল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো বেশি চমকদার থাকেনি। তাও যুবরাজ সিংয়ের ডিমান্ড অনেকটাই বেশি থেকেছে। যুবির নিলামে ডিমান্ডের কারণে মোটা টাকা দেওয়া হত। যারমধ্যে তাকে ২০১৫র নিলামে অনেকটাই বেশি দাম দেওয়া হয়েছিল। যুবিকে এই নিলামে ১৬ কোটি টাকার ঐতিহাসিক প্রাইসে দিল্লি ক্যাপিটালস কেনে। অন্যদিকে এই নিলামে যুবি দামের হিসেবে ধোনিকে পেছনে ফেলে দেন।
বেন স্টোকস (২০১৭)
আইপিএলে সবচেয়ে বেশি ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড়ের কথা বলা হলে এর মধ্যে অলরাউন্ডার খেলোয়াড়রা স্পেশাল থেকেছেন। এইভাবে ২০১৭র নিলাম ইংলিশ ক্রিকেটার বেন স্টোকসের জন্য স্মরণীয় থেকেছে। বেন স্টোকস এবার আইপিএলে প্রথমবার শামিল হওয়ার লক্ষ্য এসেছিলেন। তাকে রাইজিং পুণে সুপার জায়ান্ট টাকার বৃষ্টি ঘটিয়ে ১৪.৫ কোটি টাকায় কিনেছিল। এই প্রাইস সেই সময় বিদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল।