ওয়েস্ট ইন্ডিজগামী বিমানে ভারতীয় কোচ অনিল কুম্বলের না ওঠার পরেই মোটামুটি আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল কি হতে চলেছে। আর ঠিক সেটাই ঘটেছে। কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কুম্বলে। আর কেন তাঁকে পদত্যাগ করতে হল সেটা অবশ্য যাঁরা ক্রিকেট নিয়ে খোঁজ খবর রাখেন তারা ঠিকই জানেন। কারণটা অবশ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বলেও দিয়েছেন কুম্বলে। আসল কথা- অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার কারণেই সরে যেতে হল তাঁকে।
সদ্য শেষ হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত কোচ হিসাবে অনিল কুম্বলের সঙ্গে চুক্তি ছিল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই)। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন কোচ চেয়ে বিজ্ঞাপনও দিয়ে দেয় বিসিসিআই। যেটা অবশ্য খুব একটা ভালোভাবে নেননি দেশের এই কিংবদন্তি স্পিনারটি। তাঁর সমালোচনা করার জন্য অনেকেই ভেবেছিলেন, কুম্বলের বিরুদ্ধে হয়তো কোনও বোমা ফাটাবেন ভারত অধিনায়ক। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পৌঁছে যাওয়ার পরে এই বিষয়ে অবশ্য এখনোও পর্যন্ত মুখ খোলেননি বিরাট।
এদিকে একটি সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে যদি কুম্বলে ফের কোচ থেকে যান, তাহলে দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন বলে বোর্ডকে নাকি জানিয়ে দেন বিরাট। ওই সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে, ‘মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে কুম্বলে কোচের কাজ চালিয়ে যান, এটা কোনওভাবেই চাইছিলেন না বিরাট কোহলি। ভারত অধিনায়ক তাঁর পরিবর্ত হিসাবে নতুন কোচ চান। আর নিজের এই ইচ্ছের কথা বিরাট বোর্ডের প্রধান প্রশাসক বিনোদ রাই সহ বোর্ডের প্রধান কর্তাদের এবং ক্রিকেট অ্যাডভাইসারি কমিটি (সিএসি), যাতে রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শচীন তেন্ডুলকর এবং ভিভিএস লক্ষ্মন সবাইকে জানিয়েছিলেন। কুম্বলে না সরলে, তিনি অধিনায়ক পদ ছেড়ে দেবেন, বলে সাফ জানিয়ে দেন বিরাট।
অধিনায়ক-কোচের সংঘাত নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে গত কয়েকমাস ধরেই চর্চা চলছিল। একবার খবর এসেছিল, ভারতীয় দলের অন্তত দশ জন ক্রিকেটার কুম্বলের কোচিং পদ্ধতিতে অসন্তুষ্ট ছিলেন। আবার শোনা যায়, কুম্বলে নাকি খুব উঔদ্ধত ইত্যাদি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, যে কোনও মুল্যে কুম্বলেকে সরাতে উঠেপড়ে লাগেন বিরাট। সেক্ষেত্রে নিজের অধিনায়কত্ব বিসর্জন দিতে পিছপা ছিলেন না তিনি।
এই সব ঘটনায় একটা ব্যাপার পরিস্কার যে, ভারতীয় ড্রেসিংরুমে এই দুই কিংবদন্তির ঠান্ডা লড়াই ক্রমশই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল। দেশের এই দুই মহান ক্রিকেটার এই সমস্যা তাঁরা নিজেরা তো মেটাতে পারেননি, পারেনি দেশের ক্রিকেট বোর্ডও। জানা গিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরে কুম্বলে এবং বিরাটের মধ্যে কথাবার্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সদ্য শেষ হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একদিন অনুশীলনের সময় যখন কুম্বলে এসে পৌঁছন, তখনই নেট ছেড়ে বেরিয়ে যান ভারত অধিনায়ক। এখন বল বিসিসিআইয়ের কোর্টে। বিরাটদের নতুন কোচ এখন কে হন, এবং তিনি কিভাবে দলকে চালনা করেন তা দেখতে সাগ্রহে অপেক্ষা করছেন ক্রিকেট প্রেমীরা।