টি-২০ ফর্ম্যাট আসার পর এখন ক্রিকেটে ডট বলের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে টি-২০ ফর্ম্যাটে তো ডট বলের গুনতি হাতে গোনাই দেখতেই পাওয়া যায়। যে কারণে সবচেয়ে বেশি ডট বল করাও ভীষণই মুশকিল হয়ে গয়েছে বোলারদের জন্য। তবে প্রতিভা দেখিয়ে এখনো বোলাররা ভালো প্রদর্শন করছেন। আইপিএলে ব্যাটসম্যান প্রত্যেক বলে কিছু না কিছু করার প্রয়াস করতে থাকেন। কিন্তু নিজেদের চালাকির কারণে কিছু বোলার এমন রয়েছেন যারা ব্যাটসম্যানদের এমন করতে সফল হতে দেন না আর আইপিএলের মতো ফর্ম্যাটেও সবচেয়ে বেশি ডট বলার করার রেকর্ড গড়ে ফেলেন। আজ আমরা সেই ৫জন বোলারের ব্যাপারে জানাব, যারা আলাদা আলাদা মরশুমে এই কৃতিত্ব করেও দেখিয়েছেন। এই তালিকায় চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হলো সমস্তই জোরে বোলার আর দ্বিতীয় হলো যে ভারতীয় বোলারাও এই তালিকায় নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন।
৫. আশিস নেহেরা
ভারতীয় দলের প্রাক্তন বাঁহাতি জোরে বোলার আশিস নেহেরার নামও এই তালিকায় রয়েছে। সেই সময় তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের দলের অংশ ছিলেন। এর মধ্যে আশিস নেহেরা ২০১৫র সেই মরশুমে ভীষণই ভালো বোলিং করে ব্যাটসম্যানদের জমিয়ে সমস্যায় ফেলেছিলেন। আশিস নেহেরা সেই মরশুমে ১৭০টি ডট বল করেছিলেন। যার মানে তিনি প্রায় ২৮.২ ওভারে রানই দেননি। যা ভীষণই চমকে দেওয়ার মতো একটা রেকর্ড থেকেছে। তিনি ওই মরশুমে মোট ৬২ ওভার বোলিং করেছিলেন। যা এই খেলোয়াড়ের ক্ষমতার ব্যাপারেই জানান দেয়। নেহেরা ওই মরশুমে ১৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন। যার মধ্যে তিনি ২০.৪ গড়ে ২২টি উইকেট নিয়েছিলেন। এর মধ্যে তার ইকোনমি রেট ৭.২৪ এর থেকেছে। আশিস নেহেরা এই মরশুমের একটি ম্যাচে ৪টি উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বও দেখিয়েছিলেন। তবে তার দল খেতাব জিততে পারেনি।
৪. আরপি সিং
আরো এক ভারতীয় দলের প্রাক্তন বাঁহাতি জোরে বোলার আরপি সিংয়ের নামও এই তালিকায় রয়েছে। সেই সময় তিনি ডেকান চার্জাস দলের হয়ে খেলতেন। ২০০৯ এর মরশুমে আরপি সিং ভীষণই ভালো ফর্মে ছিলেন যেখানে তিনি পার্পল ক্যাপও জিতেছিলেন।
আরপি সিং ওই মরশুমে ১৭১টি ডট বল করেছিলেন। যার মানে হলো তিনি ২৮.৩ ওভার রানই দেননি। পুরো মরশুমে আরপি সিং মোট ৫৯.৪ ওভার বোলিং করেছিলেন। এই প্রদর্শনের কারণে তার দল আইপিএল ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল আর খেতাবও জিতেছিল। ওই মরশুমে আরপি সিং ১৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন। যার মধ্যে তিনি ১৮.১৩ গড়ে ২৩টি উইকেট নিয়েছিলেন। এর মধ্যে আরসিবির ইকোনমি রেট ৬.৯৮ থেকেছে। সেই সঙ্গেই আরপি সিং এই মরশুমের একটি ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বও দেখিয়েছিলেন।
৩. লাসিথ মালিঙ্গা
শ্রীলঙ্কার তারকা জোরে বোলার লাসিথ মালিঙ্গার নাম তো এই তালিকায় থাকার কথাই। তিনি আইপিএলের সবচেয়ে সফল বোলার। লাসিথ মালিঙ্গা শুরু থেকেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলের সদস্য ছিলেন। ২০১১ মরশুমে মালিঙ্গা ভীষণই ভালো ফর্মে ছিলেন। যেখানে তিনি পার্পল ক্যাপও জিতেছিলেন। লাসিথ মালিঙ্গা সেই মরশুমে মোটা ১৮৩টি ডট বল করেছিলেন। যার অর্থ তিনি ওই মরশুমে প্রায় ৩০.৩ ওভার রানই দেননি। ওই মরশুমে মালিঙ্গা রেকর্ড ৬৩ ওভার বলিং করেছিলেন। যদিও ওই মরশুমে তার দল খেতাব জিততে সফল হয়নি। মালিঙ্গা ওই মরশুমে ১৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন। যার মধ্যে তিনি ১৩.৩৯ গড়ে ২৮টি উইকেট নিয়েছিলেন। সেই সময় তার ইকোনমি রেট ছিল ৫.৯৫। তবে তিনি মরশুমের একটি ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বও দেখিয়েছিলেন।
২. দীপক চাহার
ভারতীয় দলের উদীয়মান তারকা দীপক চাহারের নামও এই তালিকায় গত মরশুমে শামিল হয়েছিল। তিনি চেন্নাই সুপার কিংস দলে ছিলেন। দীপক চাহারের পুরো আইপিএলই ভালো গিয়েছিল কিন্তু গত মরশুমে তিনি অসাধারণ প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন। দীপক চাহার ওই মরশুমে মোট ১৯০টি ডট বল করেছিলেন। যার অর্থ ওই মরশুমে তিনি ৩১.৪ ওভার রানই দেননি। ওই মরশুমে দীপক নিজের দলের হয়ে ৬৪.৩ ওভার বোলিং করেছিলেন। দল ফাইনালে হেরে গিয়েছিল। চাহার আইপিএল ২০১৯ চলাকালীন ১৭টি ম্যাচ খেলেছিলেন। যার মধ্যে তিনি ২১.৯০ গড়ে ২২টি উইকেট নিয়েছিলেন। তবে দীপক চাহারের ইকোনমি রেট সেই সময় ৭.৪৭ থেকেছে। তবে দীপক চাহার একটিও ম্যাচে ৪ বা তার চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পারেননি।
১. ডেল স্টেইন
এক সময় নিজের বোলিংয়ের কারণে বিশ্ব ক্রিকেটে রাজ করা ডেল স্টেইনের নামও এই তালিকায় রয়েছে। সেই সময় তিনি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ দলে ছিলেন। ডেল স্টেইন ২০১৩ মরশুমে ব্যাটসম্যানদের নিজের বিরুদ্ধে রানই করতে দেননি। যা ভীষণই দুর্দান্ত ছিল। ডেল স্টেইন ওই মরশুমে মোট রেকর্ড ২১১টি ডট বল করেছিলেন। যার মানে হলো যে তিনি ওই মরশুমে প্রায় ৩৫.১ ওভার ব্যাটসম্যানদের রান করার সুযোগই দেননি। ওই মরশুমে স্টেইন নিজের দলের হয়ে ৬৭.৫ ওবার বোলিং করেছিলেন, যা ভীষণই বেশি মনে করা হয়। স্টেইন আইপিএল ২০১৩য় নিজের দলের হয়ে ১৭টি ম্যাচ খেলেছিলেন। যার মধ্যে তিনি ২০.২১ গড়ে ১৯টি উইকেট নেন। এর মধ্যে স্টেইনের ইকোনমি রেট ছিল ৫.৬৬। যা ভীষণই কম মনে করা হয়। স্টেইনের দল ওই মরশুমে খেতাব জিততে পারেনি।