ভারতীয় দল এই সময় পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে নিত্যদিন নতুন নতুন প্রয়োগ করা হচ্ছে, সম্ভবত এরই ফলাফল যে এবার ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে খেলা হতে চলা টি-২০ ম্যাচ যা কিনা চন্ডীগড়ে খেলা হবে তাতে ভারতীয় দলের নির্বাচকরা অনেককিছু নতুন পরীক্ষা করছেন। তারা কিছু নতুন মুখকে সুযোগ দিয়েছে তো কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের এমন কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন যা তাদের আগে কখনো দেওয়া হয়নি। যদি এর আগের ম্যাচের কথা বলা হয় তো তা ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলা হয়েছিল, যেখানে তারা প্রত্যাশিত জয় হাসিল করেছিল। এই সিরিজে তারা ঘরের দলকে ৩-০ ফলাফলে হারিয়ে জয় হাসিল করেছিল।
ঋষভ পন্থ
ঋষভ পন্থ নিজের কেরিয়ারের শুরু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০১৭য় করেছিলেন। শীর্ষস্তরের ক্রিকেটে মাত্র তিন বছরে পন্থ ভারতীয় দলের এক ভীষণই জনপ্রিয় নাম হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে তিনি এখন খেলার সমস্ত ফর্ম্যাটে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। যখন ওয়েস্টইন্ডিজের সাম্প্রতিক সফরে এমএস ধোনি নিজেকে সরিয়ে নেন, তখন ঋষভ পন্থকে তিন ফর্ম্যাটেই উইকেটকিপার হিসেবে দেখা যায়।
অন্যদিকে মিডল অর্ডারে পাওয়া নিজের ছোটো ভূমিকার তিনি সুবর্ণ সুযোগ নেন, কিন্তু সমর্থকদের প্রভাবিত করতে অসফল হন। তিনি ক্যারিবিয়ান সফরের টি-২০, ওডিআই আর টেস্ট সিরিজে ৩৪.৫, ১০ আর ১৯.৩৩ গড়ে রান করেন। ২১ বছর বয়েসী এই খেলোয়াড় ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে নিজের শেষ টি-২০তে অপরাজিত ৬৫ রানের ভাল ইনিংস খেলেন, কিন্তু গত ম্যাচগুলিতে তিনি নিজের উইকেটকিপিংয়ে ভীষণই নিরাশ করেন। অন্যদিনে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিউদ্ধে খেলা হতে চলা সমস্ত ফর্ম্যাটের ম্যাচে খেলার একটা ভাল সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যার তিনি যদি সঠিকভাবে ফায়দা তুলতে পারেন তো তাকে আগেও খেলার সুবর্ণ সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
মনীষ পাণ্ডে
মনীষ পান্ডেকেও ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রধানত একজন ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, যিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে কর্ণাটকের প্রতিনিধিত্ব করেন আর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে তিনি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলেন। তিনি নিজের আগের আইপিএল দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে একজন ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। আর ২০০৯ এর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে সেঞ্চুরি করা প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হন।
মনীষ পান্ডে ভারতীয় দলে শামিল হয়েছেন পাঁচ বছর হয়ে গেল, তিনি দলে নিজের একটি বিশেষ পরিচিতি তৈরি করে ফেলেছেন। তাকে ভারতীয় দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার ব্যায়িং এমন যে তিনি সমস্ত ধরণের স্ট্রোকস নিতে পারেন। পান্ডে ওয়েস্টইন্ডিজে টি-২০ সিরিজ জেতা দলের অংশ ছিলেন। কিন্তু তিন ম্যাচে তার প্রদর্শন ভীষণই নিরাশজনক থেকেছে। তারপরও তাকে খেলার বেশ কিছু সুযোগ দেওয়া হয়, যেখানে তিনি কোনো বিশেষ প্রভাব দেখাতে পারেননি। তিনি ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলা তিন ম্যাচে মাত্র ২৭ রানই করতে পেরেছিলেন। মনীষ পাণ্ডে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৩১টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন যার মধ্যে তিনি ১২১.৫১ স্ট্রাইকরেটে ৫৬৫ রান করেছেন।
শিখর ধবন
যদি টিম ইন্ডিয়ায় কেউ থাকেন যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আগামী টি-২০ সিরিজে ভাল প্রদর্শন করার জন্য অধীর রয়েছেন, তো তিনি হলেন শিখর ধবন। সাম্প্রতিককালে টি-২০আইতে তার পরিসংখ্যান ততটা ভাল তো থাকেন, কিন্তু তিনি আগামী সিরিজগুলিতে নিজের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রদর্শন করার জন্য অধীর রয়েছেন।
ধবন গত কিছু ম্যাচে খুব বেশি রান তো করেননি, কারণ বিশ্বকাপের সময় আঙুলে চোট পেয়েছিলেন তিনি, যার কারণে তাকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল। ধবন ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজে খেলেছিলেন, কিন্তু এই সিরিজে তিনি বিশেষ কোনো রান করতে পারেননি। তিনিও তিন ম্যাচে মাত্র ২৭ রানই করতে পারেন, যা কোনোভাবেই তার কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।অন্যদিকে যদি বর্তমান সময়ের কথা ধরা হয় তো এই সময় ভাগ্য তাকে এক সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছে। ওপেনিং ব্যাটসম্যান কেএল রাহুলকে বেঞ্চে বোশণোড় কারণে তাকে রোহিত শর্মার সঙ্গে ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে বাছা হয়েছে। এই সিরিজে তাকে যত ভাল সম্ভব প্রদর্শন করতে হবে, যাতে তিনি নিজের এই জায়গা দলে বজায় রাখতে পারেন।