এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীর পাশপাশি ভারতেও চলছে করোনা পরিস্থিতি। একই ভাবে আক্রান্ত এ পশ্চিমবঙ্গও। একের পর এক করোনা আক্রান্তে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ক্রিকেট থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত মানুষ এগিয়ে এসেছেন এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। তাদেরই একজন সৌরভ গাঙ্গুলী। এর আগেও বারবার তাকে করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছিল। ত্রাণ তুলেছিলেন ভারত সেবাশ্রমে গিয়েও, সেই সঙ্গে সম্মান জানিয়েছেন করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করা যোদ্ধাদেরও। এবার এই রাজ্যের আরও এক করোনা আক্রান্তের পাশে দাঁড়ালেন বাংলার মহারাজ।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান চুঁচুড়ার এক ব্যক্তি, অসুস্থ হন স্ত্রীও
গত রবিবার রাতে হুগলি চুঁচুড়ার কদমতলার এলাকার কনকশালির বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের সৌরভ বসু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অন্যদিকে তার স্ত্রী সুস্মিতা বসুও জ্বর, সর্দি কাশিতে ভুগছেন। বাড়িতেই রয়েছেন তিনি। সুস্মিতাদেবীর কোভিডের সবরকমের লক্ষ্মণ থাকলেও তিনি তাঁর টেস্ট করাতে পারছিলেন না। তার দুই সন্তানের শরীরেও রয়েছে করোনার উপসর্গ। তিনজনেই কষ্ট পাচ্ছিলেন বাড়িতেই। কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন জায়গায় টেস্ট করানোর আবেদন জানিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন সুস্মিতাদেবী এবং তার পরিবার। এর মধ্যেই স্বামী সৌরভ বসু মারা যাওয়ায় নিজের এবং সন্তানদের কথা ভেবে চিন্তিত হয়ে পড়েন সুস্মিতাদেবী।
নিজের উদ্যোগেই এসডিওর নাম্বার যোগাড় করেন মহারাজ
শেষমেশ সুস্মিতাদেবী নিরুপায় হয়ে পারিবারিক বন্ধু শতদ্রু দত্তর কাছে আবেদন করেন। শতদ্রুবাবুর মাধ্যমে তাদের কথা পৌঁছে যায় বর্তমান বিসিসিআইয়ের সভাপতির কানে। সঙ্গে সঙ্গে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মহারাজ। নিজের উদ্যোগেই সৌরভ চুঁচুড়ার এসডিও অরিন্দম বিশ্বাসের নাম্বার যোগাড় করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সৌরভ প্রথমে নিজের পরিচয় দিয়ে হুগলির এসডিও অরিন্দমবাবুকে একটি এসএমএস পাঠান। প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের এসএমএস পেয়ে খানিক হতভম্ব হয়ে যান অরিন্দম বিশ্বাসও। এরপরই সৌরভের তরফে ফোন যায় তাঁর কাছে। ফোনে ওই পরিবারের দুরবস্থার কথা জানিয়ে সৌরভ অনুরোধ করেন ওই পরিবারের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করানোর।
সৌরভের অনুরোধে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা
হুগলি জেলার এসডিও প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের কাছে সবকিছু শুনে সোমবার সকালেই ওই পরিবারের করোনা টেস্ট হবে বলে সৌরভকে আশ্বাস দেন অরিন্দমবাবু। অন্যদিকে হুগলি জেলার একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে শুধু বসু পরিবারই নয় এমন চুঁচুড়ার বহু পরিবারই করোনার উপসর্গ নিয়ে বাড়িতেই রয়েছেন। এর আগেই চুঁচুড়ার সুজন বাগান এলাকার ৩২ বছর বয়সী সুজয় মজুমদার নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। জানা গিয়েছে ওই যুবকের পরিবারও বসু পরিবারের মতোই করোনার উপসর্গ নিয়ে গৃহবন্দী রয়েছে।