বোর্ড এবার নিজের প্লেন কিনুক, জেনে নিন কেন এমন পরামর্শ দিলেন কপিল 1

এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই, ক্রিকেট বিশ্বে যতগুলি ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ আছে, তাদের মধ্য়ে ভারতীয় ক্রিকেটাররা সবচেয়ে বেশি ক্রিকেট খেলেন। সারা বছরই ভারতীয় ক্রিকেটারদের ক্রিকেটের মধ্য়ে থাকতে হয়। একেবারে ঠাসা ক্রীড়াসূচি। দম ফেলার ফুরসৎ পর্যন্ত নেই। ছুটি কাকে বলে, তা প্রায় জানেনই না নিয়মিতভাবে যাঁরা ভারতীয় দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে। ঠাসা ক্রীড়াসূচি মানেই নানান জায়গায় যাতায়াত। আর যাতায়াত মানেই ধকল। বিমানে যাওয়া মানে যে এয়ারলাইন্সের প্লেনে ওঠা, তাদের বিমান সূচি অনুযায়ী ক্রিকেটারদের তৈরি থাকতে হয় নির্দিষ্ট গন্তব্য়স্থলে পৌঁছনোর জন্য় বিমান ধরতে। আবার অনেক সময়তেই দু-তিনবার প্লেন ধরে গন্তব্য়স্থলে পৌঁছতে হয়, তখন ধকলের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সেই ধকল কাটিয়ে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে ক্রিকেট খেলা খুব সহজ কাজ নয়। ক্রিকেটারদের এই ধকল থেকে বাঁচাতে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব নিখাঞ্জ একটি পরামর্শ দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাকে। তাঁর পরামর্শটি প্রথমে শুনে হয়ত অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু তা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। কপিলের পরামর্শ, ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) এবার নিজের বিমান কিনুক। তাহলে ক্রিকেটারদের অনেক সময়ও বাঁচবে আর ধকলও কমবে।

বিশ্ব ক্রিকেটে যতগুলি ক্রিকেট বোর্ড আছে, তার মধ্য়ে সবচেয়ে ধনী বিসিসিআই। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসিতে সবচেয়ে বেশি অর্থ এই ভারত থেকেই যায়। আর সেই কারণেই এত ছড়ি ঘোরানো। ফলে আর্থিক দিক থেকে বিসিসিআই স্বচ্ছল বলা ভুলে হবে, ধনকুবের বললে মানানসই। পশ্চিমী দেশগুলিতে অনেক খেলোয়াড়দের আবার নিজস্ব বিমান রয়েছে। তাই বিসিসিআই ভবিষ্য়তে যদি নিজস্ব প্লেন কেনে, নিজের ক্রিকেটারদের স্বার্থে, তাহলে কপিল খুব খুশি হবেন। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, বিসিসিআই এখন অনেক অর্থ আয় করছে। তাই বোর্ডের উচিত নিজস্ব প্লেন কেনার কথা ভাবনা-চিন্তা করার। তাহলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের অনেক সময়ও বাঁচবে। পাঁচ বছর আগেই এটা করতে পারত বিসিসিআই।

একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্য়মকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কপিল আরও বলেন, ভারতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটার যদি নিজের প্লেন কেনেন, তাহলেও আমি খুশি হব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গল্ফ খেলোয়াড়দের নিজস্ব প্লেন রয়েছে। তাই আমাদের ক্রিকেটাররাও ইচ্ছে করলে নিজস্ব প্লেন কিনতেই পারে। ওদেরই সময় বাঁচবে এতে। বিসিসিআইয়ের ব্য়াপারে একই কারণে কথাটা বলেছি। নিজস্ব প্লেন থাকলে ক্রিকেটাররা দুটি ম্য়াচের মাঝে যে সময় থাকে, সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারবে। বিমান রাথার জন্য় এয়ারপোর্টে যা পার্কিং চার্জ লাগবে, সেটা বোর্ড দিতে পারবে।

উল্লেখ্য়, তিন বছর আগে কপিল ভারতীয় বোর্ডকে এরকমই একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শ ছিল, যেসব দেশে ক্রিকেটাররা মূলত বেশি করে ক্রিকেট খেলতে যান, সেখানে বিসিসিআই নিজস্ব গেস্ট হাউস তৈরি করাতে পারে। তাতে ক্রিকেটারদের রাখার জন্য় হোটেল ভাড়াও বাঁচবে বোর্ডের। আর নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার জন্য় আলাদা করে প্রতিবার চিন্তা করতে হবে না। কপিলের পরামর্শ মেনে বিসিসিআই যদি আগামী দিনে নিজস্ব বিমান কেনে, তাহলে বোর্ডের বিমান ভাড়া বাঁচবে অনেক। কিন্তু, এই উদ্য়োগ নিলে বোর্ডকে চুঁষে খাওয়া অনেক কর্তাদেরই অসুবিধা হয়ে যাবে তাতে। কারণ, বিদেশ সফরের নামে তাঁরা প্রচুর অর্থ বিসিসিআইয়ের থেকে আদায় করেন বিমান ভাড়া ও হোটেল ভাড়া বাবদ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *