সম্প্রতি শেষ হওয়া শ্রীলংকা বনাম ভারতের মধ্যকার টেস্ট সিরিজে প্রথমে জায়গা পাননি ওপেনার শিখর ধাওয়ান। কিন্তু কব্জির চোটের জন্য মুরলী বিজয় সুস্থ না হওয়ায় খুব অল্প দিনের নোটিশে ধাওয়ানকে দলে ডেকে নেওয়া হয়। তবে দলের সাথে যোগ দেয়ার পরও গলে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে ধাওয়ানের খেলা অনিশ্চিত ছিল। কারন অভিনব মুকুন্দ ও লোকেশ রাহুলের ওপেন করতে নামার কথা ছিল ওই ম্যাচে। কিন্তু জ্বরের কারণে নামতে পারেননি লোকেশ রাহুল। মুকুন্দের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন ধাওয়ান। আর এরপর যা ঘটলো তাতো সবারই জানা। তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষে দেখা যাচ্ছে, ব্যাট হাতে ৮৯.৫০ গড়ে ধাওয়ানের ঝুলিতে ৩৫৮ রান। প্রথম ম্যাচেই ধাওয়ান ১৯০ রানের এমন এক ইনিংস খেলেন, যার ফলে পরবর্তী ম্যাচে গুলোতে তাকে সাজঘরে বসিয়ে রাখা ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য অসম্ভব। আর সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল গাভাস্করের মতে ধাওয়ানের ধামাকাদার ইনিংসের পরে বিজয় মুরলীকে আরও অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ ধাওয়ানের জন্য মুরালী বিজয়ের প্রতীক্ষা বেড়ে গেল অনন্ত। তাই আবার কবে যে মুরলী বিজয় দলে জায়গা পাবে বলা অত্যন্ত কঠিন!

উল্লেখ্য যে, দুর্বল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই দেখা যায় ধাওয়ান ধামাকা! যদিও অল্পের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি স্বাদ পাননি না এই দীর্ঘদেহী ক্রিকেটার। কিন্তু ১৯০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ভেঙে দিয়েছেন পলি উমরিগরের ৫৫ বছরের রেকর্ড। ৭৮ বলে ৬৪ রানে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিলেন ধাওয়ান। আর পরের সেশনে করেন ৯০ বলে ১২৬। দ্বিতীয় সেশনে ভারতের হয়ে এটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। ১৯৬২ সালে পোর্ট অব স্পেনে হল-সোবার্স- গিবসদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৭২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। সেদিন দ্বিতীয় সেশনে ১১০ রান করেছিলেন উমরিগর। দ্বিতীয় সেশনে ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানের রান তোলার সে রেকর্ড এত বছরেও কেউ ভাঙতে পারেননি। ৫৫ বছর পর সেই রেকর্ড দখল করলেন ধাওয়ান।
লাঞ্চ আর টি-ব্রেকের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড ডেনিস কম্পটনের। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ট্রেন্ট ব্রিজে ১৭৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান। যে কোনও সেশনেই এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড। দ্বিতীয় সেশনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওয়ালি হ্যামন্ডের। ১৯৩৩ সালে ৩৩৬ রানের বিখ্যাত ইনিংসের পথে দ্বিতীয় সেশনে হ্যামন্ড করেছিলেন ১৫০। সব সেশন মিলিয়েও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। তবে মাত্র ১ রানের জন্য তৃতীয় স্থান অর্জন করতে পারেলন না ধাওয়ান। তিনি একটুর জন্য ছুঁতে পারেননি স্ট্যান ম্যাককেবকে। ১৯৩৮ অ্যাশেজে ট্রেন্ট ব্রিজে এক সেশনে অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট করেছিলেন ১২৭ রান। ৩১ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া ধাওয়ান আউট হয়েছেন টি-ব্রেকের মিনিট তিনেক আগে। ১৬৮ বলে ১৯০। রেকর্ড হলেও হলো না প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। তবে এক সেশনে সেঞ্চুরি করলেন এই নিয়ে দুবার। অভিষেক টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া ইনিংসটায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক সেশনে করেছিলেন ১০৬। সেটিও ছিল দ্বিতীয় সেশন। দ্বিতীয় সেশনে সর্বোচ্চ ১৭৩ রান কম্পটনের।