কয়েক দিন আগে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলার ইতিহাসে অন্যতম সেরা কামব্যাক করেছে ভারতীয় দল। প্রথম টেস্টে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার দশ দিনের মধ্যে আবারও ঘুরে দাঁড়ানো এবং শেষ অবধি ম্যাচ জিতে আসা, এমনটা কেউই ভাবতে পারেননি। কিন্তু এই জয়ের অন্যতম বড় কারিগর হিসেবে বলা যায় অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানেকে। বিরাট কোহলির পরিবর্তে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলানো রাহানে মাঠে এবং ক্রিজে দুই দিকেই নিজের যোগ্যতা দেখিয়েছেন এবং ভারতকে জয়ের সরণীতে এনেছেন।
কিন্তু তিন বছর আগে নিজের কেরিয়ারে একেবারে অপ্রস্তুত জায়গায় ছিলেন মুম্বইয়ের এই তারকা ব্যাটসম্যান। ব্যাট হাতে একেবারেই অফ ফর্মে ছিলেন, রান করতে পারছিলেন না একদমই। আর এর ফলে ভারতীয় টেস্ট দলের সহ অধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টেস্ট সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচে দলে রাখা হয়নি রাহানেকে। সেই সময়টি সম্ভবত রাহানের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের সব থেকে কঠিন সময়। কিন্তু সেই সফরের পর থেকে নিজেকে দারুণ ভাবে গড়েছেন রাহানে, দেখিয়েছেন চুড়ান্ত মানসিক জোর, এমনই মত প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক দেবাং গান্ধীর।
জনপ্রিয় সংবাদপত্র টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেবাং গান্ধী বলেছেন, “ঐ সময়টি (২০১৮ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর) এমন ছিল যেখানে মনে হয়েছিল রাহানে মানসিকভাবে আঘাত পাবেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে, উনি বিদেশে ভালো পারফর্ম করেছিলেন। হয়ত সেই সফরের আগের ঘরোয়া সিরিজটি সেভাবে খেলতে পারেননি যেমনটা চেয়েছিলেন, কিন্তু আপনাকে ধৈর্য রাখতে হবে রাহানের মত খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে।”
এরপর তিনি বলেছেন যে ২০১৮ সালে রাহানে জাতীয় টেস্ট দলে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন, আর সেই সময় তাকে সাহায্য করতে আসেন নির্বাচকরা, যার মধ্যে ছিলেন খোদ দেবাং গান্ধীও। এই নিয়ে তিনি বলেছেন, “সব নির্বাচকরাই রাহানের সাথে কথা বলেছিলেন। আমার মনে আছে আমি আর যতীন পরাঞ্জপে ওনার সাথে কথা বলছিলাম ২০১৮ সালে বেঙ্গালুরুতে। উনি আগামী দিনে নিজের বিষয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন এবং এ বিষয়ে স্বচ্ছ বার্তার আশা করছিলেন। আমরা তাকে নিশ্চিত করি যে ওনার জায়গা এখনও স্থায়ী রয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের বিষয়ে কথা বলতে গেলে, ওনার সহ অধিনায়কের পদটি কখনই প্রশ্নের মুখে ছিল না।”
এরপর দেবাং গান্ধী জানান সেই সফরের পর থেকে কতটা মানসিকভাবে নিজেকে গড়েছেন রাহানে। এই নিয়ে তিনি বলেছেন, “উনি কখনই হাল ছেড়ে দিতে রাজি হননি। রাহানে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলেন। উনি নিজের জন্য একটি পয়েন্ট তৈরি করতে চেয়েছিলেন। উনি ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন প্রতিটি সফরের আগে এ দলের হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য। ওনার মানসিক শক্তি এবং ইচ্ছাশক্তি আজকের দিনে ওনাকে এনেছে যেখানে উনি এমসিজিতে ভারতকে একটি দারুণ কামব্যাকের রাস্তা দেখিয়েছেন।”