মঙ্গলবার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ছিল বেঙ্গল ক্রিকেট অ্য়াসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি)-এর। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর হাত দিয়েই লাইফটাইম অ্য়াচিভমেন্ট অ্য়াওয়ার্ড বা জীবনকৃতি সম্মান ওঠে পলাশ নন্দীর হাতে। দু‘লক্ষ টাকা ও স্মারক দেওয়া হয় এই প্রবীন ক্রীড়াবিদকে। ২০১৭ আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ খেলা ভারতীয় মহিলা দলের সদস্য়া ঝুলন গোস্বামীকে তাঁর কৃতিত্বের জন্য় সম্মান জানাতে তাঁর হাতে দশ লক্ষ টাকা ও স্মারক তুলে দেন মুখ্য়মন্ত্রী।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সিএবি‘র বাইরে তাদের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হল। প্রসূন মুখার্জী যখন সিএবি সভাপতি ছিলেন, সে সময় টাউন হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এবার এতবড় হলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও, সেভাবে কাউকে চোখে পড়েননি। বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হলেও শহরে না থাকায় পুরস্কার নিতে আসতে পারেননি মনোজ তিওয়ারি। বর্ষসেরা বোলার বেছে নেওয়া হয় অশোক দিন্দাকে। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা ব্য়ানার্জী নেতাজী ইন্ডোরে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরই ভাঙাহাটের রূপ নিতে শুরু করে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সেভাবে চোখে পড়েননি বাঙলার ক্রিকেটারদেরও।
বাংলা ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়া যেভাবে খেটেছিলেন, তাঁর কাজকে সম্মান জানাতে সিএবি‘র মধ্য়ে তাঁর মূর্তি বসানোর দাবি তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা ব্য়ানার্জী। সিএবি‘র বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মমতা এদিন বলেন, ”সিএবি‘র কথা সারা বিশ্বের মানুষ জানে। বর্তমানের এই সিএবি‘কে গড়ে তোলার পেছনে একজনের অবদান অনস্বীকার্য, তিনি জগমোহন ডালমিয়া। আজ ওনার জন্য়ই সিএবি এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছে। সৌরভ আর অভিষেক (ডালমিয়া পুত্র)-এর কাছে আমার আবেদন সিএবি‘তে ডালমিয়াজির মূর্তি বসানো হোক।”
ঝুলনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার পর মমতা বলেন, ”ঝুলন বাঙলার মেয়ে। সম্প্রতি মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতীয় মহিলা দল চ্য়াম্পিয়ন হতে পারেনি। কিন্তু, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দারুন অবদান রেখেছে। আমি সৌরভকে বলতে চাই, বাঙলার মহিলা এবং মানুষের জন্য় মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে সিএবি চিন্তা-ভাবনা করুক। রাজ্য় সরকার এব্য়াপারে সবরকম সাহায্য় করবে।”
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা ব্য়ানার্জী ও রাজ্য় সরকারকে পাশে পাওয়ার ব্য়াপারে সিএবি সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলিও বেশ আশাবাদী। দাদা বলেন, ”মুখ্য়মন্ত্রী এবং রাজ্য় সরকার যেভাবে সবসময় সিএবি‘র পাশে ছিলেন বা আছেন, তার জন্য় আমরা কৃতজ্ঞ। বিশ্বকাপের সময় ভারত-পাকিস্তান ম্য়াচ করানো নিয়ে যখন বোর্ড সমস্য়ায় পড়েছিল, তখন মুখ্য়মন্ত্রী পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্য়ে আমাদের সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দেন ইডেনে ম্য়াচ করানোর ব্য়াপারে।”
মমতা এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে রাজ্য়ের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে নির্দেশ দেন, এবার থেকে সিএবি‘র সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিবছর যেন বাঙলার কৃতী ক্রিকেটারদের তালিকাও যেন পাঠানো হয় তাঁর কাছে। রাজ্য় সরকার এবার থেকে বাঙলার কৃতী ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে ক্রিকেটারদেরও পুরস্কৃত করবে।