ক্রিকেটাররা অন্য আর পাঁচজন পাব্লিক ফিগারের মতো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রচার করে নিজের রোজগারের একটি বড়ো অংশ উপার্জন করে থাকেন। বিশ্ব জুড়ে প্রায় কয়েক মিলিয়ন মানুষের রোল মডেল এই তারকা ক্রিকেটাররা, এবং তারা যা সাধারণত এনডোর্স করে থাকেন তা তাদের ভক্তদেরও উতসাহিত করে তা ব্যবহার করতে। সুতরাং যখন অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়গুলির প্রচারের কথা হয়, তখন এমন অনেক ক্রিকেটার আছেন যারা নিজেদের ধর্মীয় কারণ এবং নৈতিক বিশ্বাসের কারণে এগুলোর প্রচারে অস্বীকৃত হয়েছেন, এমনকী যদি তার অর্থ দাঁড়ায় স্পনসরহীন জার্সি পড়া, তাও তারা করেছেন। আজ আমরা আমাদের এই বিশেষ প্রতিবেদনে এমন ৫জন ক্রিকেটারের কথা জানাব যারা অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের প্রচার করতে অস্বীকৃত হয়েছেন।
আজহার আলি
বর্তমান পাকিস্তানের টেস্ট দলের অধিনায়ক আজহার আলি গত এক দশক ধরে তার দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড হয়ে থেকেছেন। আজহার আলি পাকিস্তানের হয়ে ৭৮টি টেস্টে ৫৯১৯ রান করেছেন, যার মধ্যে ১৬টি সেঞ্চুরিও রয়েছে। তিনি ইংল্যান্ডের কাউন্টি দল সমারসেটের হয়েও খেলেন। সমারসেট দলের প্রধান স্পনসর ট্রিবিউট অ্যালে, যা সেই দেশের অফিসিয়াল বিয়ার কোম্পানি। যেহেতু আজহার আলির একটি গভীর ধর্মীয় বিশ্বাস রয়েছে ফলে তিনি সমারসেটের কিট ওই কোম্পানির লোগো ছাড়াই ব্যবহার করে থাকেন।
ইমাদ ওয়াসিম
পাকিস্তানের স্পিনার অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিমও আরও একজন পাকিস্তানী ক্রিকেটার যিনি অ্যালকোহলকে প্রমোট করেন না, কারণ তার ধর্ম ইসলামে তা নিষিদ্ধ। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ ওয়াসিম জামাইকা তল্লাওয়াশের হয়ে খেলেন। এই টি-২০ লীগের অন্যতম স্পনসর হলো অ্যাপেলটন এস্টেট, যা একটি রম ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। ওয়াসিম যবে থেকে কোনো অ্যালকোহলি ব্র্যান্ড প্রমোট করতে অস্বীকার করেছেন, তবে থেকেই তিনি এই কোম্পানির লোগো ছাড়াই জার্সি পড়ে থাকেন।
রশিদ খান
আফগানিস্তানের চাঞ্চল্যকর স্পিনার রশিদ খান, বিশ্বজুড়ে চালু হওয়া ক্রিকেট লীগের সর্বাধিক জনপ্রিয় ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন। রশিদ খান অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ লীগ বিগব্যাশে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার দলের হয়ে খেলেন। তিনি এই টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল স্পনসর ওয়েস্ট এন্ডের লোগো ওয়ালা জার্সি পড়ে খেলেন না, কারণ এটি একটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিয়ার প্রস্তুতকারক কোম্পানি এবং ইসলাম ধর্মে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ।
হাসিম আমলা
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসের এখনও পর্যন্ত অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হলেন হাসিম আমলা, তিনি যখন নিজের আড়ম্বরপূর্ণ ব্যাটিং করেন, দেখে মনে হয় তিনি যেনো ক্রিজে মেডিটেশন করছেন। হাসিম আমলা যিনি ওয়ানডেতে দ্রুততম ১০০০ থেকে ৭০০০ রান সংগ্রহকারী, একজন গভীরভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসী ব্যক্তি। যখনই দক্ষিণ আফ্রিকা দল মাঠে খেলতে নামে তখনই তার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দলের স্পনসর ক্যাসেল ল্যাগারের লোগো ছাড়াই জার্সি আসে। ক্যাসল ল্যাগার একটি অ্যালকোহলিক ব্র্যান্ড। এই লোগো না পড়ার জন্য হাসিম আমলাকে নিয়মিত তার দেশের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে ফাইন দিতে হয়।
ইমরান তাহির
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার ইমরান তাহির। তিনিও তার সতীর্থ হাসিম আমলারই পদাঙ্ক অনুসরণ করেন এবং কখনই তিনি দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাসল ল্যাগারের লোগোওয়ালা জার্সি পরেন না। ইমরান তাহিরও হাসিম আমলার মতই একজন ধর্মবিশ্বাসী মানুষ। এবং তিনিও ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী হওয়ার জন্য ক্যাসেল ল্যাগারের লোগো ব্যবহার করেন না। কারণ ইসলাম ধর্মে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় নিষিদ্ধ।