আইপিএলের রোমাঞ্চের পরাকাষ্ঠা ভারতের ক্রিকেট প্রেমী মাত্রেই জানেন। সারা বছর ধরে ভারত সহ বিশ্বের প্রায় সমস্ত মানুষই অপেক্ষা করে থাকেন এই আইপিএল উৎসবের জন্য। আগামী মরশুমের আইপিএল শুরু হতে আরো বেশি দেরীও নেই। যদিও আগামী মরশুমের আইপিএল শুরুর ডেট এখনো সামনে আসেনি। ফলে স্মৃতির স্মরণীয় বেয়ে আমরা এখন চলেছি গত আইপিএল অর্থাৎ আইপিএল ২০১৯ এর পথে
এই মরশুমে সমস্ত দলের মধ্যে থেকে খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত প্রদর্শনও দেখতে পাওয়া গেছে। যার সৌজন্যে তারা দলকে আগে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ যোগদান দিয়েছে, আজ আমরা সেই খেলোয়াড়দের ব্যাপারে কথা বলব যারা নিজেদের পারফর্মেন্সে দ্বারা দলকে জয় এনে দেওয়ার কাজ করেছে। য়াজ দেখে নেওয়া যাক আইপিএল ২০১৯ এর সেরা একাদশকে।
ডেভিড ওয়ার্নার (ম্যাচ-১২, রান ৬৯২, গড় ৭৯.২০)
আইপিএল ২০১৮য় বল ট্যাম্পারিং্যের কারণে বাদ পড়া ডেভিড ওয়ার্নার আইপিএলের এই মরশুমে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ফিরে এসেছেন। কলকাতার বিরুদ্ধে ৫৩ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলে এই মরশুমে শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি আর পেছনে ফিরে দেখেন নি। এই মরশুমে তিনি মাত্র ১২টি ম্যাচ খেলেছেন, এর মধ্যে ৭৯.২০র দুর্দান্ত গড়ে ৬৯২ রান করেছেন। এই মরশুমে তিনি অরেঞ্জ ক্যাপের দাবীদারও হয়েছেন।
কেএল রাহুল (ম্যাচ ১৪, রান ৫৯৩, গড় ৫৩.৯০)
কেএল রাহুল যিনি আইপিএল ১১ সংস্করণে পাঞ্জাবের দলকে বেশ কিছু ম্যাচে একার দমে জেতাতে সক্ষম হয়েছিলেন, এই মরশুমেও তাকে তেমনই মেজাজে দেখতে পাওয়া গেছে। এই মরশুমেই তিনি ১৪টি ম্যাচে ৫৯৩ রান করেছেন। রাহুলের নির্বাচন বিশ্বকাপের দলেও করা হয়েছে। এখন তাকে বিশ্বকাপে ব্যাটিং করতে দেখা যাবে।
শ্রেয়শ আইয়ার (সহঅধিনায়ক), (ম্যাচ ১৬, রান ৪৬৩, গড় ৩০.৮৬)
শ্রেয়স আইয়ার দিল্লি ক্যাপিটালসের তরুণ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে নকআউট পর্যন্ত নিয়ে যান, এই কারণে ক্রিকেটের অভিজ্ঞরা এই খেলোয়াড়ের যথেষ্ট প্রসংশা করেছেন। তিনি এই মরশুমে ব্যাটেও প্রভাব ফেলতে সফল থেকেছেন। আইয়ার এই আইপিএলের ১৬টি ম্যাচে ৪৬৩ রান করেছেন।
ঋষভ পন্থ (ম্যাচ ১৬, রান ৪৮৮, গড় ৩৭.৫৩)
ঋষভ পন্থ এবারও আইপিএল ২০১৮রই প্রদর্শনকে বজায় রেখেছেন। দিল্লির দলের হয়ে খেলে পন্থ ১৬টি ম্যাচে ৪৮৮ রান করেছেন, এর মধ্যে তিনি ১৬২.৬৬ র স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন। যদিও তার বিশ্বকাপ দলে নির্বাচন হয়নি যা নিয়ে ক্রিকেট পন্ডিতরা প্রশ্নও তুলেছেন।
এমএস ধোনি (ম্যাচ ১৫, রান ৪১৬, গড় ৮৩.২০)
সিএসকে দলকে এবার ব্যাটিংয়ে পুরো মরশুমে সংঘর্ষ করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এমএস ধোনি এবার দলের জন্য ত্রাতা হিসেবে সামনে এসেছেন।তিনি দলকে সমস্যা থেকে বেরতে গুরুত্বপূর্ণ যোগদান করেছেন। এই মরশুমে ধোনি ১৫টি ম্যাচে ৮৩.২০ গড়ে ৪১৬ রান করেছেন।
অ্যান্দ্রে রাসেল (ম্যাচ ১৪, রান ৫১০, গড় ৫৬.৬৬, স্ট্রাইক রেট ২০৪.৮১, উইকেট ১১)
অ্যান্দ্রে রাসেল এবার কেকেআরের হয়ে বল আর ব্যাট দুটোতেই ভাল প্রদর্শন করেছেন। একার দমে দলকে জয় এনে দেওয়া তিনি দলের একমাত্র খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু তিনি দলকে প্লে অফে পৌঁছতে ব্যর্থ হন। জামাইকার এই ব্যাটসম্যান এই মরশুমে ছক্কার বৃষ্টি করেছেন। তিনি এই মরশুমে ৫৩টি ছক্কা মেরেছেন।তিনি বলেও এই সংস্করণে প্রভাব ফেলতে সফল হয়েছে। এই মরশুমে তিনি ১১টি উইকেট নিয়েছেন।
হার্দিক পাণ্ডিয়া (ম্যাচ ১৬, রান ৪০২, গড় ৪৪.৬৬, স্ট্রাইকরেট ১৯১.৪২, উইকেট ১৪)
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলে অলরাউন্ডারের ভূমিকা পালন করা হার্দিকেই মরশুমে বেশ কিছু আকর্ষক ইনিংস খেলেন। তিনি ১৭ বলে সবচেয়ে দ্রুতগতির হাফসেঞ্চুরি করেন। আইপিএল ২০১৯এ হার্দিক ১৬টি ম্যাচে ৪৪.৬৬গড়ে ৪০২ রান করেন সেই সঙ্গে তিনি ১৪টি উইকেটও নিয়েছেন।
শ্রেয়স গোপাল (ম্যাচ ১৪, উইকেট ২০, গড় ১৭.৩৫, ইকোনমি ৭.২২)
রাজস্থানের হয়ে এই মরশুমে গোপাল মিস্ট্রি স্পিনার হিসেবে উঠে এসেছেন। এই মরশুমে তিনি এবি, বিরাটের মত তারকাদের উইকেট হাসিল করেছেন। গোপালের আরসিবির বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক কে ভুলতে পারে, যা ম্যাচের দিকই পরিবর্তন করে দিয়েছিল। গোপাল এই মরশুমে ১৪টি ম্যাচে মোট ২০টি উইকেট নিয়েছেন।
কাগিসো রাবাদা (ম্যাচ ১২, উইকেট ২৫, গড় ১৪.৭২, ইকোনমি ৭.৮২)
দিল্লির দলের হয়ে কাগিসো রাবাদা জোরে বোলিংয়ের নেতৃত্ব দেন। তার বোলিং বিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য মুশকিল খাড়া করে দেয়। রাবাদা ১৪.৭২ এর গড়ে মাত্র ১২টি ম্যাচে ২৫টি উইকেট নেন।
জসপ্রীত বুমরাহ (ম্যাচ ১৬, উইকেট ১৯, গড় ২১.৫২, ইকোনমি ৬.৬৩)
জসপ্রীত বুমরাহ যিনি ফাইনাল ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। তারই বোলিংয়ের সৌজন্যে দল ছোটো স্কোরকেও ডিফেন্ড করে নেয়। এই মরশুমে তিনি ১৯টি উইকেট নিয়েছেন কিন্তু তার গড় দুর্দান্ত থেকেছে। তিনি ৬.৬৩র দুর্দান্ত ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন।
ইমরান তাহির (ম্যাচ ১৭, উইকেট ২৬, গড় ১৬.৫৭, ইকোনমি ৬.৬৯)
দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির চেন্নাইয়ের হয়ে ভীশণই দুরন্ত বোলিং করে এই মরশুম শেষ করেছেন। এই মরশুমে তিনি দলের যেখানে উইকেটের দরকার পড়েছে সেখানেই উইকেট এনে সফলতা পাইয়ে দিয়েছেন। এই মরশুম তিনি পার্পল ক্যাপ জিতে শেষ করেছেন।