পুরো বিশ্ব এই মুহূর্তে করোন ভাইরাস মহামারী সঙ্গে দারুণভাবে লড়াই করছে। যে কারণে এখনো পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ অসুস্থ হয়ে গিয়েছে আর মৃত্যুর সংখ্যাও লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে বহু মানুষ এই রোগ থেকে সুস্থও হচ্ছেন। কিন্তু এই ভাইরাসের ফলে ক্রিকেটও অনেক বেশি প্রভাবিত হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে ক্রিকেট এই সময় বন্ধ রয়েছে। বেশকিছু বরো সিরিজ আর টুর্নামেন্ট বিপদের মধ্যে রয়েছে। যে কারণে ক্রিকেট দেশুগুলোর ক্রিকেট বোর্ড আর স্বয়ং আইসিসিও সংকটে পড়ে গিয়েছে। এই ভাইরাসের কারণে এখন ক্রিকেট জগতকে বড়ো মুশকিল থেকে বেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আজ আমরা আপনাদের জানাব যে করোনা ভাইরাসের কারণে আইসিসি কোন কোন ৫টি বড়ো ধাক্কা খেতে পারে। যেখানে কিছু এমন ধাক্কাও রয়েছে যার প্রভাব দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ক্রিকেটের উপর দেখা যেতে পারে। তবে তার থেকে লড়াইয়ের প্রস্তুতি এখন আইসিসির অবশ্যই করা উচিত।
১. আইপিএলের উপর সংকটে আর্থিক ধাক্কা
ভারতে করোনা ভাইরাসের বিপদ বেড়েই চলেছে। সরকার এখন ৩ মে পর্যন্ত পুরো দেশে লকডাউন করে রেখেছে। যে কারণে এখন ক্রিকেটের সবচেয়ে বড়ো লীগ আইপিএলের উপরও বিপদ ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা স্রেফ বিসিসিআইয়ের জন্যই নয় বরং আইসিসির জন্যও খারাপ খবর। বিসিসিআই-ই সেই সংস্থা যা আইসিসিকে সবচেয়ে বেশি ফান্ড দেয়। নিজেদের বেশকিছু কাজ আইসিসি তার সাহায্যেই পূর্ণ করে। যদি বিসিসিআই তাদের এবার কম ফান্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তো আর্থিক সংকট হিসেবে আইসিসির সামনে বড়ো সমস্যা আসবে। আর্থিক সমস্যা হওয়ার কারণে আরো কিছু সংকটও আইসিসির সামনে দেখা দেবে। যা বড়ো হুঁশিয়ারি হয়ে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আইসিসির সামনে উপস্থিত হতে পারে। ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নেওয়া চলা ইভেন্টসগুলোকে দ্রুত বন্ধ করতে হবে। যা বড়ো ধাক্কাও হবে আইসিসির জন্য।
২. বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফর্ম্যাটে পরিবর্তন
টেস্ট ক্রিকেটে ভালো স্থিতিতে আনার জন্য গত বছর থেকেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকেও আইসিসি লঞ্চ করেছিল। যার সফলতার ব্যাপারে আলোচনাও দ্রুত হতে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এখন তার ফর্ম্যাটে পরিবর্তনের কাজও আইসিসিকে করতে হতে পারে। সম্প্রতিই কিছু এমন সিরিজকেও স্থগিত করতে হয়েছে যা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশও ছিল। যার মধ্যে ইংল্যান্ড আর শ্রীলঙ্কার সিরিজ আর বাংলাদেশ আর অস্ট্রেলিয়ার সিরিজও শামিল ছিল। এখন ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বড়ো আর গুরুত্বপূর্ণ সিরিজও সংকটে রয়েছে। জুন ২০২১এ লর্ডসের মাঠে হতে চলা ফাইনালকে যদি বদলাতে হয় বা দলগুলির মধ্যে সিরিজের ব্যবধানকে কম করতে হয় তাহলে কম সিরিজ খেলে তাদের ফলাফল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যা আইসিসির জন্য বড়ো মুশকিল হতে দেখা যাচ্ছে।
৩. করোনা ভাইরাস শেষ হওয়ার পরও দর্শকদের স্টেডিয়াম পর্যন্ত আনা মুশকিল
এই সমস্ত সমস্যার সমাধান বার করা তাও সহজ কিন্তু একটি সমস্যা করোনা ভাইরাস শেষ হওয়ার পরও থাকতে চলেছে। যা সেই সময় আরো বড়ো রূপ নিতে দেখ যেতে পারে। যা থেকে বাঁচতে আইসিসিকে সবচেয়ে বেশি মেহনত করতে হবে। যখন করোনা ভাইরাস শেষও হয়ে যাবে তখনও স্টেডিয়াম পর্যন্ত দর্শকদের আনাই একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ মানুষের মধ্যে এই রোগের ভয় তো দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে চলেছে। যা যত দ্রুত সম্ভব দূর করা প্রায় অসম্ভবই দেখাচ্ছে, বর্তমান সময়ে। যদি ভাইরাস ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও দর্শক মাঠে না আসেন তো এই খেলার জনপ্রিয়তার উপরও বড়ো প্রভাব পড়তে দেখা যেতে পারে। সেই সঙ্গে তো আর্থিক সমস্যা বোনাস হিসেবে আইসিসির সামনে তৈরি হয়ে যেতে পারে। যা থেকে বাঁচা মুশকিল হবে।
৪. টি-২০ বিশ্বকাপের শিডিউলে ফেরবদল
অস্ট্রেলিয়ার সরকার করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিকে দেখে আগামী ৬ মাসের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ এই বছর সেখানে খেলা হওয়ার কথা। যা অক্টোবরে হওয়ার কথা রয়েছে। যার উপর এখন বড়ো সংকটের মেঘ দেখা যাচ্ছে। যদি সেখানে এত সময়ের জন্য লকডাউন থাকে তো বিশ্বকাপের প্রস্তুতির উপরও তার পরিস্কার আর বড়ো প্রভাব পড়তে পারে। ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আর দর্শকদের স্টেডিয়াম পর্যন্ত আনার জন্যো আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের স্বরূপেও পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আলোচনা করছে। যাতে টুর্নামেন্টকে বড়ো করা যেতে পারে যত বেশি সম্ভব ম্যাচ খেলা যেতে পারে। যা দর্শকদের আকর্ষিত করবে আর তারা স্টেডিয়ামে ম্যাচ দেখতে অবশ্যই আসে। যে কারণে দ্রুতগতিতে প্রস্তুতি নিতেও খরচাও দ্রত বেড়ে যাবে। যা থেকে সমাধান বের করতেও হবে আইসিসিকে।
৫. টি-২০ বিশ্বকাপ পছিয়ে গেলে বাড়বে আরো সমস্যা
যদি এমন যে করোণা ভাইরাসের সমস্যা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকে তো এই বছর টি-২০ বিশ্বকাপও খেলা মুশকিল হয়ে যাবে। যে কারণে আইসিসিকে টি-২০ বিশ্বকাপকেও পেছিয়ে দিতে হতে পারে। যা একসঙ্গে বেশকিছু আর বড়ো মুশকিল বোর্ডের সামনে এনে ফেলতে পারে। ভুল করেও যদি টি-২০ বিশ্বকাপ আগামি বছরের জন্য এগিয়ে যায় তো আইসিসির বড়ো মুশকিল হয়ে যাবে, কারণ ২০২১ এও টি-২০ বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। যা ভারতে খেলা হবে। যদি এই বিশ্বকাপ পেছিয়ে যায় তো আগামি বিশ্বকাপের উপরও বিপদ বেড়ে যাবে। যার বেশকিছু কারণ সামনে আসবে। যার মধ্যে একটা বড়ো কারণ এটাই হবে যে এক বছরে দুটি টি-২০ বিশ্বকাপ হতে পারবে না। যে কারণে কোনো একটি বিশ্বকাপকে স্থগিত বা বাতিল করার বিকল্পই আইসিসির কাছে থাকবে। যার ফলে মুশকিল আপনা আপনিই বেড়ে যাবে। যা থেকে সামাধানও আইসিসিকেই বের করতে হবে।