কপিল-গাভাস্কার থেকে বিরাট-রোহিত পর্যন্ত, নিজের অধিনায়কের সঙ্গে মতবিরোধের পাঁচ অজানা গল্প 1

ভারতীয় ক্রিকেটে এই মুহূর্তে চড়াই উৎরাইয়ের সফর চলছে। একদিকে বিসিসিআই অনেক বিতর্কের পর ফের রবি শাস্ত্রীকেই ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে নিযুক্ত করেছে। অন্যদিকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর ধোনির অবসরের খবরে বিরাম লাগার পর, যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি শিরোনামে এসেছে তা হল অধিনায়ক বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মার মধ্যে তথাকথিত ঝামেলা। না। যদিও টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়াড়দের মধ্যে বিবাদের বিষয়টি নতুন নয়। আজ আমরা এমন কিছু বিতর্কের ব্যাপারে আপনাদের জানাতে চলেছি।

১—লালা অমরনাথ বনাম মহারাজকুমার অফ বিজয়নগর

কপিল-গাভাস্কার থেকে বিরাট-রোহিত পর্যন্ত, নিজের অধিনায়কের সঙ্গে মতবিরোধের পাঁচ অজানা গল্প 2

১৯৩৬ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য বিজয়নগরের মহারাজাকে অধিনায়ক করা হয়েছিল। যিনি ভিজি নামে পরিচিত ছিলেন। বলা হয় যে ভিজি নিজের ক্ষমতা আর লবিংয়ের মাধ্যমে অধিনায়ক হয়েছিলেন, কিন্তু সিনিয়র খেলোয়াড় লালা অমরনাথ তাকে পছন্দ করতেন না। সেই সফরে একটি ম্যাচ চলাকালীন ভিজি অমরনাথকে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন, কিন্তু অমরনাথ প্রস্তুত হওয়ার পরও অধিনায়ক তাকে ব্যাট করতে পাঠাননি। দুজনের মধ্যে বিবাদ এতটাই বেড়ে যায় যে ভিজি লালা অমরনাথকে ভারতের ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

২—কপিলদেব বনাম সুনীল গাভাস্কার

কপিল-গাভাস্কার থেকে বিরাট-রোহিত পর্যন্ত, নিজের অধিনায়কের সঙ্গে মতবিরোধের পাঁচ অজানা গল্প 3

১৯৮৩তে যখন কপিলদেবকে দলের অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচন করা হয় তারপরই সুনীল গাভাস্কারের সঙ্গে তার মনোমালিন্য বেড়ে যায়। ওই বছর মাদ্রাজে খেলা হওয়া টেস্ট ম্যাচে যখন গাভাস্কার ২৩৬ রানে ব্যাট করছিলেন তখনই কপিলদেব ইনিংস সমাপ্তি ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। এরফলে গাভাস্কার আরো রেগে যান। দুজনের মধ্যে এই বিষয়টি এতদূর গড়ায় যে বোর্ডকে বৈঠক ডেকে এই সমস্যার সমাধান করতে হয়েছিল।

৩— শচীন তেন্ডুলকর বনাম মহম্মদ আজহারউদ্দিন

কপিল-গাভাস্কার থেকে বিরাট-রোহিত পর্যন্ত, নিজের অধিনায়কের সঙ্গে মতবিরোধের পাঁচ অজানা গল্প 4

১৯৯৯ বিশ্বকাপে খারাপ প্রদর্শনের পর মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আর শচীন তেন্ডুলকরকে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। সেই সময় শচীন আজহারকে দলে জায়গা দেননি, যদিও ২০০০ সালে আজহার ফের দলে ফিরে এসেছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে শচীনের আজহারউদ্দিনের সঙ্গে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিষয়টি নিয়ে সেই সময় দারুণ মতভেদ তৈরি হওয়াতেই শচীন আজহারকে দলে রাখেননি।

৪– ধোনি বনাম গম্ভীর, শচীন এবং সেহবাগ

কপিল-গাভাস্কার থেকে বিরাট-রোহিত পর্যন্ত, নিজের অধিনায়কের সঙ্গে মতবিরোধের পাঁচ অজানা গল্প 5

২০১২য় এমএস ধোনির নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়া সফরে যায়। সেই সফরে ওপেনার বীরেন্দ্র সেহবাগ আর ধোনির মধ্যে তৈরি হওয়া বিবাদ বেড়ে যায়। ধোনি ত্রিদেশীয় সিরিজে গৌতম গম্ভীর, শচীন তেন্ডুলকর আর বীরেন্দ্র সেহবাগকে দলে রাখতে চাননি। কারণ তার মধ্যে হয়েছিল যে এই তিনজন ফিল্ডিংয়ে ততটাই দ্রুত নন। তাও এই তিনজন ওই সিরিজে খেলেন। আর সিরিজের প্রথম ম্যাচে বীরু একটি দুর্দান্ত ক্যাচ নেন। ম্যাচ শেষে মিডিয়ার একটি প্রশ্নের উত্তরে বীরে বলেছিলেন যে আপনি কি আমার ক্যাচটা দেখেছিলেন। পরে বীরু দল থেকে বাদ পড়ে যান আর তাকে ফেয়ারওয়েল ম্যাচ খেলারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।

৫— বিরাট কোহলি বনাম রোহিত শর্মা

কপিল-গাভাস্কার থেকে বিরাট-রোহিত পর্যন্ত, নিজের অধিনায়কের সঙ্গে মতবিরোধের পাঁচ অজানা গল্প 6

বিশ্বকাপ চলাকালীণই খবরে এসেছিল যে ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি আর সহঅধিনায়ক রোহিত শর্মার মধ্যে মতবিরোধ দেখা গিয়েছে। এই বিরোধ মূলত ছিল বিশ্বকাপে দল গঠন নিয়ে কিছু মত পার্থক্যের কারণে। এরপরই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যাণ্ডের হাতে হেরে ভারত ছিটকে যায়। ভারতীয় দলের দেশে ফেরার একদিন আগেই রোহিত শর্মা একাই দলকে ফেলে ভারতে ফিরে আসেন। শেষমেশ ওয়েস্টইন্ডিজ সফরে রওনা হওয়ার আগে মুম্বাইতে একটি প্রেস কনফারেন্সে বিরাট কোহলি রোহিত শর্মাকে নিয়ে নিজের মতবিরোধের ব্যাপারে নিরবতা ভাঙেন। ওয়েস্টইন্ডিজ সফরে রওনা হওয়ার আগে বিরাট মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন যে তিনিও এই ধরণের গুজব শুনেছিলেন। যদি ড্রেসিংরুমের পরিবেশ সঠিক না হত তো আমরা গত কিছু বছর ধরে লাগাতার এত ভাল খেলতে পারতাম না। আমরা ড্রেসিংরুমে নিজেদের ভাল সম্পর্ক ছাড়া এত সফল হতাম

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *