ক্রিকেট দুনিয়ার প্রত্যেক দিনই এক নতুন রেকর্ড সামনে আসে। কিন্তু কিছু রেকর্ড বেশ আলাদাই হয়। এমনই একটা রেকর্ড হল মাত্র আট বল খেলার পর ব্যাটিংয়ের দমে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হওয়া। এই রেকর্ড ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোটো ফর্ম্যাট টি২০তে হয়েছে।
৮ বল খেলে বদলে দিয়েছিলেন ম্যাচে দিশা
আসলে এটা নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের ঘটনা। যা ভারত বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলা হয়েছিল। ভারত আর বাংলাদেশ ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। ভারতীয় দল টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায়। এরপর বাংলাদেশের সাব্বির রহমানের ৭৭ রানের ইনিংসের সাহায্যে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে।
জবাবে জয়ের জন্য ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ভারতীয় দল প্রথম ধাক্কা খায় শিখর ধবনের আউটে। ধবন মাত্র ১০ রান করেই আউট হয়ে যান। এরপর তৃতীয় নম্বরে ব্যাট করতে আসা সুরেশ রায়না কোনও রান না করেই আউট হয়ে যান। লোকেশ রাহুল রোহিত শর্মার সঙ্গে বড় পার্টনারশিপ করার চেষ্টা করেন কিন্তু মাত্র ২৪ রান করেই তিনি আউট হয়ে যান। এরপর রোহিত শর্মা ৫৬ রান করে আঊট হন। ১৮ ওভারের শেষ বলে মনীষ পান্ডে ২৮ রান করে আউট হন। ভারতের সেই সময় জেতার জন্য ১২ বলে ৩৪ রানের প্রয়োজন ছিল। একদিকে বিজয় শঙ্কর ১৫ বলে ১২ রান করে খেলছিলেন, অন্যদিকে হার্দিক পান্ডিয়ার আঊট হওয়ার পর দীনেশ কার্তিক নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন। এই অবস্থায় ভারতের হার নিশ্চিত দেখাচ্ছিল। বাংলাদেশ ফ্যানস উৎসব মানাতে শুরু করে দিয়েছিলেন। ১৯ তম ওভারে বল করতে আসেন রুবেল হুসেন। দীনেশ কার্তিক প্রথম বলেই ছয় মেরে দেন। দ্বিতীয় বলেও দীনেশ কার্তিক দুর্দান্ত শট মেরে চার রান তুলে নেন। তৃতীয় বলে স্কোয়ার লেগের উপর কার্তিক আরও একটি ছয় মেরে দেন। মাত্র ৩ বলেই কার্তিক ১৬ রান তুলে দেন। এরপর চতুর্থ বলে কোনও রান হয় নি। পঞ্চম বলে কার্তিক দু রান নেন। অন্যদিকে শেষ বলে তিনি আরও একটি চার মারেন। অর্থাৎ সেই ওভারে কার্তিক মোট ২২ রান তোলেন।
শেষ ওভারের ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল১২ রান। ব্যাটিং প্রান্তে ছিলেন বিজয় শঙ্কর।বল করতে আসা সৌম্য সরকারের প্রথম বল হোয়াইট হয়। দ্বিতীয় বলে শঙ্কর কোনও রান করতে পারেন নি। দ্বিতীয় বলে শঙ্কর এক রান নেন। তৃতীয় বলে কার্তিকও এক রান নেন। চতুর্থ বলে বিজয় শঙ্কর চার মারেন আর পঞ্চম বলে তিনি আউট হয়ে যান। শেষ বলে ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। স্ট্রাইকে ছিলেন দীনেশ কার্তিক। সৌম্য সরকারের শেষ বলে ছয় মেরে ভারতকে জয় এনে দেন কার্তিক। এরপরই কার্তিককে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়। দীনেশ কার্তিক মাত্র ৮ বলে ২৯ রান করেন, যার মধ্যে ছিল তিনটি ছয় এবং দুটি চার।