আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপে আজ এশিয়ার দুটি বড়ো দল ভারত আর বাংলাদেশ একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। যেখানে ভারতীয় দল প্রথমে ব্যাট করে ৩১৪/৯ রানে এক ভাল স্কোর করে। দলের হয়ে রোহিত শর্মা ১০৪ রান করতে সফল হন। অন্যদিকে বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান সবচেয়ে বেশি পাঁচ উইকেট নেন।
বাংলাদেশের দলের সামনে ম্যাচ জেতার জন্য ৩১৫ রানের লক্ষ্য ছিল। এই লক্ষ্য বেশি বড় ছিল না কিন্তু সাকিব আল হাসান (৬৬)কে ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান উইকেটে টিকে থাকার সাহস দেখাতে পারেননি। বাংলাদেশের দল ২৮৬ রানই করতে পারে আর ভারত এই ম্যাচ ২৮ রানে জিতে নেয়।
আসুন এক নজর দেখে নেওয়া যাক ম্যাচ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু রেকর্ডসের দিকে:
১. ম্যাচে প্রথম উইকেটের হয়ে রোহিত শর্মা আর কেএল রাহুল ১৮০ রান যোগ করেন। বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার এটি সবচেয়ে বড়ো পার্টনারশিপ দেখতে পাওয়া গেছে। গত রেকর্ড ছিল ২০১৫য় হ্যামিলটনে নিউজিল্যাণ্ডের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মা আর শিখর ধবনের ১৭৪ রান।
২. রোহিত শর্মার (১০৪) এই টুর্নামেন্টে এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। কোনো এক বিশ্বকাপে চারটি সেঞ্চুরি করা রোহিত ভারতের প্রথম ব্যাটসম্যান অন্যদিকে বিশ্বের মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হলেন। প্রথমে রয়েছে কুমার সাঙ্গাকারা (৪টি সেঞ্চুরি ২০১৫)।
৩. রোহিত শর্মা (৫৪৪) কোনো একটি বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে ৫০০+ রান করা মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হয়েছেন। রোহিত শর্মার আগে শচীন তেণ্ডুলকর (১৯৯৬ আর ২০০৩) বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে এই রেকর্ড করেছেন।
৪. রোহিত শর্মার এটি বার্মিংহ্যামের মাঠে লাগাতার তৃতীয় সেঞ্চুরি ছিল ইংল্যাণ্ডের কোনো একটি মাঠে লাগাতার তিনি সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মা প্রথম খেলোয়াড় হলেন।
বার্মিংহ্যামের মাঠে রোহিত শর্মার লাগাতার তিনটি সেঞ্চুরি ইনিংস:
Vs | year | |
123 | Bangladesh | 2017 |
102 | England | 2019 |
104 | Bangladesh | 2019 |
৫. রোহিত শর্মা কোনো একটি মাঠে লাগাতার তিনটি সেঞ্চুরি করা মাত্র দ্বিতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় হলেন। রোহিতের আগে বিরাট কোহলি কলম্বোর মাঠে লাগাতার তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলেন।
৬. ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করার বিষয়ে রোহিত শর্মা ষষ্ঠ স্থানে উঠে এলেন। রোহিত শর্মার এটি ২৬তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি ছিল। এই সেঞ্চুরির সঙ্গে রোহিত কুমার সাঙ্গাকারা, ক্রিস গেইল, আর এবি ডেভিলিয়র্সকে (২৫) পেছনে ফেলে দিলেন।
৭. রোহিত শর্মা (২৩০) টিম ইন্ডিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে ছক্কা মারা খেলোয়াড় হলেন আর তিনি এমএস ধোনিকে (২২৮) পেছনে ফেলে দিলেন।
৮. রোহিত শর্মা (৫৪৪) কোনো একটি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করা দ্বিতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় হলেন। এই ব্যাপারে রোহিত শচীন তেন্ডুলকরকে (৫২৩) পেছনে ফেলে দিলেন।
৯. রোহিত শর্মার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আইসিসি ইভেন্টে এটি লাগাতার তৃতীয় সেঞ্চুরি ছিল। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে (১৩৭) আর ২০১৭র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে (১২৩) রোহিত শর্মা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
১০. রোহিত শর্মার এটি বিশ্বকাপে পঞ্চম সেঞ্চুরি ছিল। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা তিনি দ্বিতীয় খেলোয়াড় হলেন আর সৌরভ গাঙ্গুলীকে (৪) পেছনে ফেলে দিলেন। সবার আগে রয়েছেন শচীন তেন্ডুলকর (৬)।
১১. ইংল্যাণ্ডের মাটিতে কোনো একটি মাঠে লাগাতার তৃতীয় সেঞ্চুরি করা রোহিত মাত্র তৃতীয় খেলোয়াড় হলেন। রোহিতের আগে মার্কস ট্রেসকোথিক (কেনিংটন ওভার আরর লর্ডসে তিনটি সেঞ্চুরি) আর শিখর ধবন (কেনিংটন ওভালে লাগাত্র তিনটি সেঞ্চুরি) এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
১২. মুস্তাফিজুর রহমান (৫/৫৯) টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয়বার পাঁচ উইকেট নিলেন।
১৩. মুস্তাফিজুর রহমানের ৫/৫৯ বোলিং পরিসংখ্যান যে কোনো বাংলাদেশী বোলারের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ প্রদর্শন। প্রথমে রয়েছেন সাকিব আল হাসান (৫/২৯ বনাম আফগানিস্তান ২০১৯)।
১৪. হার্দিক পাণ্ডিয়া একদিনের ক্রিকেটে নিজের ৫০টি উইকেট পূর্ণ করলেন।
১৫. কোনো একটি বিশ্বকাপে ৫০০+ রান আর ১০+ উইকেট নেওয়া সাকিব আল হাসান বিশ্বের প্রথম খেলোয়াড় হলেন। সাকিব আল হাসান এই বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত ৫৪২ রান আর ১১টি উইকেট নিয়েছেন।
১৬. কোনো একটি সিরিজে বা টুর্নামেন্টে ৫০০+ রান আর ১০+ উইকেটের ডবল করা সাকিব আল হাসান বিশ্বের চতুর্থ খেলোয়াড় হলেন। সাকিবের আগে গ্রেগ চ্যাপেল (৬৮৬ রান আর ২২টি উইকেট, বি অ্যাণ্ড এইচ ওয়ার্ল্ড সিরজ ১৯৮০/৮১), ভিভ রিচার্ডস (৫৩৬ রান আর ১১টি উইকেট, উইকেট, বি অ্যাণ্ড এইচ ওয়ার্ল্ড সিরজ ১৯৮০/৮১), ভিভ রিচার্ডস (৬৫১ রান আর ১৩টি উইকেট, উইকেট, বি অ্যাণ্ড এইচ ওয়ার্ল্ড সিরজ ১৯৮৪/৮৪) এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
১৭. সাকিব আল হাসান এই টুর্নামেন্টে ষষ্ঠবার ৫০+ স্কোর করেছেন। কোনো একটি বিশ্বকাপে ছয় বার ৫০+ স্কোর করা তিনি দ্বিতীয় খেলোয়াড় হলেন। সাকিবের আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে শচীন তেন্ডুলকর এই কৃতিত্ব সাতবার দেখিয়েছিলেন।
১৮. মহম্মদ সইফউদ্দিনের (৫১) এটি ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ স্কোর।
১৯. ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একদিনের বিশ্বকাপে এটি লাগাতার তৃতীয় জয় ছিল।
২০. এটা তৃতীয় এমন বার যখন এই বিশ্বকাপে রোহিত শর্মা ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের পুরস্কার পেলেন। রোহিতের আগে শচীন তেন্ডুলকর (২০০৩ এ তিনবার) আর যুবরাজ সিং (২০১১য় চারবার) এই পুরস্কার জিতেছেন।