অস্ট্রেলিয়া আর ভারতের মধ্যে চলা তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় আর শেষ ওয়ানডে ম্যাচ ক্যানবেরায় খেলা হয়ছে। ক্যানবেরায় হওয়া এই তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ভারত দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে ঘরের দল অস্ট্রেলিয়াকে ১৩ রানে হারিয়ে সিরিজ ক্লিন সুইপ হওয়া থেকে বাচানোর পাশাপাশি নিজেদের ছন্দও হাসিল করে ফেলেছে।
তৃতীয় ওয়ানডেতে ভারত অস্ট্রেলিয়াকে ১৩ রানে হারাল
ক্যানবেরায় খেলা হওয়া এই ম্যাচে ভারতীয় দল পরপর দুটি ওয়ানডে ম্যাচ হারার পর প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে। যেখানে ভারতের প্রধান ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পরঅও ৩০০ রান তোলে তারা। এর জবাবে অস্ট্রেলিয়ার দল এবার ওয়ার্নারকে ছাড়া খুব একটা ভালো প্রদর্শন করতে পারেনি। দলের শুরুটা খারাপ হয় আর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে। শেষে ভারতের বোলারদের সৌজন্যে তারা অস্ট্রেলিয়াকে ২৮৯ রানে থামিয়ে দেয়।
ভারত প্রথমে ব্যাট করে খাড়া করে ৩০২ রান
এই ম্যাচে ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি টস জিততে সফল হন। ভারত এই ম্যাচে দলে বেশকিছু পরিবর্তন করে মাঠে নেমেছিল। এবং প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওপেনার হিসেবে শিখর ধবন আর ময়ঙ্ক আগরওয়ালের জায়গায় ধবন আর শুভমান গিল দলের ইনিংস শুরু করেন। দুজনে ভারতকে ঠিকঠাক শুরু এনে দেন। কিন্তু ২৬ রানের স্কোরে ভারত শিখর ধবনের রূপে বড়ো ধাক্কা খায়। ধবন ১৬ রান করেন। এরপর অধিনায়ক বিরাট কোহলি মাঠে নামেন। কোহলি আর গিল মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। দুজনেই ভালো ব্যাটিং করছিলেন, কিন্তু দলের ৮২ রানের মাথায় শুভমান ব্যক্তিগত ৩৩ রানে আউট হয়ে যান। এরপর ব্যাট করতে আসা শ্রেয়স আইয়ার দলের রান ১০০য় পৌঁছে দেন। কিন্তু ১১৪ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৯ রানে শ্রেয়স আইয়ার আউট হয়ে যান। এরপর কেএল রাহুলও ব্যর্থ হন আর মাত্র ৫ রানই করতে পারেন।
বিরাট একদিক থেকে দুর্দান্ত বোলিং করছিলেন। বিরাট কোহলিকে ব্যক্তিগত ৬৩ রানের স্কোরে জোশ হ্যাজেলউড আউট করেন। ভারতীয় দল ১৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মুশকিলে পড়ে যায়। কিন্তু হার্দিক পাণ্ডিয়া আর রবীন্দ্র জাদেজা প্রথম ধীরে সুস্থে এগোন আর শেষের কিছু ওভারে ঝোড়ো ব্যাটিং করেন। দুইজনেই ষষ্ঠ উইকেটের হয়ে ১৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩০২ রানের স্কোরে পৌঁছে দেন। হার্দিক ৭৬ বলে অপরাজিত ৯২ আর জাদেজা ৫০ বলে ৬৬ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় ২৮৯ রানে
ভারতীয় দলের দ্বারা দেওয়া ৩০৩র রানের লক্ষ্যের সামনে অস্ট্রেলিয়া দল ব্যাট করতে নামে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অ্যারণ ফিঞ্চ আর মার্নস লাবুসেন ওপেন করতে নামেন। কিন্তু এই জুটি বিশেষ কিছুই করতে পারেননি। প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা টি নটরাজন লাবুসেনকে ৭ রানের স্কোরেই আউট করে দেন। এরপর ইনফর্ম স্টিভ স্মিথও বিশেষ কিছু করতে পারেননি আর তিনিও ৭ রানের স্কোরে আউট হন।
এরপর মোইসেস হেনরিক্স আর অধিনায়ক অ্যারণ ফিঞ্চ দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান। ৫৬ রানের স্কোরে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ১০০ রানে পৌঁছয়। দুজনে মিলে দলের স্কোর ১১৭ রানে পৌঁছে দেন। এরপর হেনরিক্স ব্যক্তিগত ২২ রান করে শার্দূল ঠাকুরের শিকার হন। কিছুক্ষণ পরেই ভালো খেলা ফিঞ্চ ৭৫ রান করে আউট হন। এরপর প্রথম ম্যাচ খেলা ক্যামেরুন গ্রুণ অবশ্যই ২১ রান করেন কিন্তু তিনিও দলের ১৫৮ রানের স্কোরে আউট হয়ে যান।
এই সংকটে অ্যালেক্স কেরিয়া আর ম্যাক্সওয়েল ব্যাট করতে নামেন। দুজনেই দলের ইনিংসকে গতি দেন। দুজনে মিলে ষষ্ঠ উইকেটের হয়ে ৫২ রান যোগ করেন আর দলের ২১০ রানের স্কোরে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অ্যালেক্স কেরি রান আউট হয়ে যনা। এরপর ম্যাক্সওয়েল আর অ্যাশটন এগার দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়ে আবারও আশা জাগান। দুজনে মিলে ৪১ বলে ৫৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন, কিন্তু ৪৫তম ওভারে বুমরাহ ম্যাক্সওয়েলকে ৫৯ রানের স্কোরে বোল্ড করে ম্যাচ আবারও ভারতের দিকে এনে দেন। এরপর অস্ট্রেলিয়া দল ম্যাচ থেকে পেছিয়ে পড়তে থাকে আর পুরো ইনিংস ২৮৯ রানে শেষ হয়ে যায়।