ফুটবল মাঠে সাধারণত প্রতিপক্ষ দলকে ঘায়েল করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন দলের কোচ। কিন্তু ক্রিকেট মাঠে ম্যাচ চলাকালে কোচের কোচের ভূমিকা খুব একটা না থাকলেও অধিনায়ককেই তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাই ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে অধিনয়কের ভূমিকা মাঠে অপরিসীম। অন্যদিকে এই দায়িত্ববোধ থেকে ক্যাপ্টেনের দায়ও যে একটু বেশিই থাকে এটা স্পষ্ট সবার কাছেই।
তবে ক্যাপ্টেন হিসেবে যদি ব্যাট কিংবা বল হাতে জয়ের জন্য দলের হয়ে অবদান রাখতে পারেন তাহলেতো পুরো ষোলো আনাই যেন পূর্ণতা পায়।
আজকে জানাবো এমনই তিনজন ক্রিকেটারের কথা যারা অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমে একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর গড়েছেন।
৩. সনাথ জয়াসুরিয়া
লঙ্কান লিজেন্ড সনাথ জয়াসুরিয়া তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে মাঠে নামলে প্রতিপক্ষ বোলারদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিতেন খুব সহজেই। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে বিশ্বের যেকোনো বোলিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখা এই ক্রিকেটার একা হাতে জিতিয়েছেন অসংখ্য ম্যাচ।
আজ থেকে আঠারো বছর আগে ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে ভারতীয় বোলিং লাইনে ধ্বস নামিয়ে ৪টি ওভার বাউন্ডারি ও ২১টি চারের সাহায্যে ১৬১ বলে ১৮৯ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। তাঁর ব্যাটে চড়েই নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ২৯৯ রানের বড় পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। জবাবে টিম ইন্ডিয়া ব্যাট করতে নামলে চামিন্দা ভাস এর বোলিং তোপে পড়ে ৫৪ রানে ম্যাচ হারে ভারত। ঐ ম্যাচে ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি টুর্নামেন্টে ৪১৩ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও হন জয়াসুরিয়া।
২. রোহিত শর্মা

রঙিন পোশাকে একদিনের ক্রিকেটে ভারত দলের অধিনায়ক হিসেবে নিয়মিত নন রোহিত। তবে আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে কয়েক বছর ধরেই আছেন ক্যাপ্টেন হিসেবে। ওয়ানডে ফরম্যাটে সবশেষ এশিয়া কাপে ভারত জয়ী হয়েছে রোহিতের অধীনে থেকেই।
গতবছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে নিয়মিত ক্যাপ্টেন কোহলি বিশ্রামে থাকায় দলের দায়িত্ব দেয়া হয় ওপেনিং এই ব্যাটসম্যানকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বোলারদের উপর স্ট্রিমরোলার চালিয়ে এদিন ১৫৩ বল মোকাবেলা করে ১২টি বল হাওয়ায় ভাসিয়ে মাঠের বাইরে ফেলে এবং এর চেয়ে একটি বেশি ১৩টি চার হাঁকিয়ে ২০৮ রান করেন এই ওপেনার। তাঁর ব্যাটের উপর ভর করেই ৩৯২ রানের পাহাড়সম রান সংগ্রহ করে টিম ইন্ডিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪১ রানের বড় ব্যবধানে হারে লঙ্কানরা। সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন রোহিত।
১. বীরেন্দ্র সেহবাগ
২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল ভারত সফর করার সময় ৫টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে। ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় থাকা সেহবাগ চতুর্থ ম্যাচে নিজের ব্যাটের ঝাঁজ বুঝিয়ে দেন ক্যারিবিয়ানদের।
এদিন প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪৯ বল মোকাবেলা করে ৭টি ছক্কা ও ২৫টি চারের সাহায্যে নামের পাশে ২১৯ রান যোগ করেন এই ওপেনার। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি ছিল সেহবাগে ১৫তম সেঞ্চুরি ও প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। অন্যদিকে তাঁর এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে দল পায় ৪১৮ রানের পুঁজি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে চার বল বাকি থাকতেই ২৪৯ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের জন্য ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন সেহবাগ।