ইংল্যান্ড আর ওয়েলসে চলতি আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯এ ভারতের সফর সেমিফাইনালে শেষ হয়ে গিয়েছে। এই হারের পর টিম ম্যানেজমেন্ট এবং দলের উপর বেশ কিছু বড়ো প্রশ্ন খাড়া হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে বড়ো প্রশ্ন থেকেছে ভারতীয় দলের সবচেয়ে বড়ো কমজুরি অর্থাৎ মিডল অর্ডারে চার নম্বর ব্যাটসম্যানের অভাব।
লীগ ম্যাচে শিখর ধবন এবং বিজয় শঙ্করের আহত হওয়ার পর ঋষভ পন্থ এবং ময়ঙ্ক আগরওয়ালকে ইংল্যাণ্ডে ডাকা হয় যদিও রায়ডুকে কভার হিসেবে বাছা হয়েছিল। এইরকম কমজুরি মিডল অর্ডারের কারণে টিম ইন্ডিয়া টপ অর্ডারের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে থেকেছে।
চার নম্বর ব্যাটসম্যানের অভাবে সংঘর্ষ করতে থেকেছে টিম ইন্ডিয়া
এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেল বিজয় শঙ্করকে দলে চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছিল। রায়ডুর আগে যাকে টুর্নামেন্টের জন্য বেহ কিছু মাস পর্যন্ত ওই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু কেএল রাহুল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওয়ার্মআপ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন, যার পর তিনি চার নম্বর ব্যাটসম্যান হয়ে যান। প্রসাদ রায়ডুকে না বেছে বিজয় শঙ্করকে একজন ‘৩-ডি’ ক্রিকেটারও বলেছলেন।
লীগ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে ধবনের বুড়ো আঙুল আহত হয়ে যায়, যারপর বারতের ব্যাটিং ক্রমে আবারো পরিবর্তন করা হয়। ধবনের পর কেএল রাহুলকে রোহিতের সঙ্গে ভারতীয় দলের ওপেনিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
লাগাতার তিন ম্যাচ সহ রোহিত পাঁচটি সেঞ্চুরি আর কোহলি ব্যাক টু ব্যাক পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি করে পুরো লীগ স্টেজে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। অন্যদিকে রাহুল কিছু ঠিকঠাক ইনিংস খেলেন ফের শেষপর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ লীগ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন।
ভারতের টপ অর্ডার হয়ে যায় বাজেভাবে ব্যর্থ
সেমিফাইনালে কিউয়ি দলের বিরুদ্ধে ভারতের টপ অর্ডার এক এক রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায়। এই ম্যাচে ভারত ২৪০ রান তাড়া করতে নেমে পাঁচ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে। এরপর অভিজ্ঞতাহীন ঋষভ পন্থকে চার নম্বরে পাঠানো হয় আর ৩৫০ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এমএস ধোনিকে সাত নম্বরের জন্য বাঁচিয়ে রেখে ভারত সমর্থকদএর এবং বিশেষজ্ঞদের অবাক করে দেয়।
ধোনি সাত নম্বরে ব্যাটিং করে ৫০ রান করেন আর ভারতকে প্রায় জয় এনে দেওয়ার জন্য আট নম্বর ব্যাটসম্যান রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে ১১৬ রান যোগ করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তারা ১৮ রানে হেরে যায়। কিন্তু এই বিশ্বকাপে ভারতের দুর্দান্ত ৭-২ রেকর্ডের মাঝে টিম নির্বাচন আর প্রথিস্থাপন কল নিয়ে অব্যবস্থা হয়নি। বিশেষভাবে ময়ঙ্ক আগরওয়ালকে ইংল্যান্ডে ডাকা হয়। যদিও এখনো পর্যন্ত তিনি নিজের ওয়ানডে কেরিয়ার শুরুই করেননি। বিসিসিআইয়ের এই সিদ্ধান্ত সকলকে অবাক করে দেয়।
হারের পরও খেলোয়াড়দের পাওয়া উচিত পুরস্কার
এই পদক্ষেপ রায়ডুকে স্ট্যান্ডবাই ক্রিকেটার হিসেবে রাখা সত্ত্বেও নেওয়া হয়েছিল। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপারগুলো ভাল হয়নি। খবরের কথা ধরা হলে বিসিসিআইয়ের এক সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন যে নির্বাচকদের এই দায়িত্বও নেওয়া উচিত যে যখনই দল টুর্নামেন্টে হারে তো তাদের সেই রকমই আর্থিক ক্ষতিপুরণ দেওয়া উচিত যেমনটা দল ভাল প্রদর্শন করলে নির্বাচকরা পেয়ে থাকেন।
ওই সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন,
“যখন দল একটি টুর্নামেন্ট জেতে তো নির্বাচকদের তাদের প্রদর্শনের জন্য আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়, কিন্তু যখন হারের পর সমালোচনা হয় তো এটা কেবল সেই খেলোয়াড়ই লাগে যাদের নিয়ে সমালোচনা করা হয়। নির্বাচকদের ব্যাপারে নয় কেন? কে ন্যায় করে যে তারা কি অন্য কারণে প্রভাবিত হচ্ছে বা যদি দুই নির্বাচক অন্যদের তুলনায় ভাল প্রদর্শন করে থাকেন?”
প্রসঙ্গত এমএসকে প্রসাদ ছাড়াও নির্বাচক কমিটিতে দেবাং গান্ধী, গগন খোদা, জতিন পরাঞ্জপে, আর শরণদীপ সিং শামিল রয়েছেন, যাদের মধ্যে কারোরই ভারতের হয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য কেরিয়ার ছিল না।