আইসিসিসির টেস্ট খেলিয়ে দেশের লিস্টে নবতম সংযোজন হওয়ার পরে আফগানিস্তানের ভূয়সী প্রশংসা করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। আজ ইন্দো-আফগানিস্তান স্ট্র্যাটেজিক বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে আফগানিস্তান ক্রিকেট টিমকে অভিনন্দন জানান তিনি। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের বিদেশ মন্ত্রীও। এবছরের জুন মাসে আইসিসির লন্ডনের বৈঠকে আয়ারল্যান্ড আর আফগানিস্তান টেস্ট খেলিয়ে দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। তারা যথাক্রমে 11 আর 12তম দেশ হিসেবে এই স্বীকৃতি পেল।
যুদ্ধবিধস্ত এক দেশের ক্রিকেটের মানচিত্রে জায়গা করে অবশ্যই এক বিরাট সাফল্য। 2000 এর গোড়ার দিকে আলকায়েদা আর তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আমেরিকা। জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার জন্য এরপর একের পর এক মার্কিন বোমার হামলায় প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়ে পুরো আফগানিস্তান। ক্রিকেট তো দূরের কথা সাধারন জীবন যাপন করাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। মার্কিন সেনা আর তালিবানদের মাঝে পড়ে অসহায় অবস্থায় দিন কেটেছে শত শত আফগানদের। পড়াশোনা থেকে খেলাধুলো সবকিছুই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তবে তবে ধীরে ধীরে দিন পরিবর্তন হয়েছে। আলকায়েদা আর তালিবানদের প্রায় শেষ করার পরে দেশে ফিরে যায় মার্কিন সেনা। এরপরে হামিদ কারজাইয়ের নেতৃত্বে আবার শুরু হয় সরকারি শাসন ব্যবস্থা। সেখানে প্রথম থেকেই ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। প্রথম থেকেই ভারতের সাথে ভাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ, পরিসেবায় সবেতেই ভারত এক বড় অবদান রেখেছে। বর্তমানে আফগানিস্তান তাদের আন্তর্জাতিক সিরিজের ম্যাচ গুলি দিল্লির নয়ডাতে খেলে।
উল্লেখ্য 2001 সালে আইসিসির সদস্য হলেও বিগত কয়েক বছরে আফগান ক্রিকেট প্রচার পেয়েছে সবার। 2012 সালে তারা প্রথম টি20 বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়। ভারত আর ইংল্যান্ডের সাথে গ্রূপলিগের দুটো ম্যাচ হারলেও ভারতের বিরুদ্ধে তাদের লড়াকু ব্যাটিং সবার নজর কাড়ে। এরপর 2015 সালের বিশ্বকাপ ও তারা খেলে। বিশ্বকাপে তাদের প্রথম জয় স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে 17 রানে। 2016 এর টি20 বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমক দিয়েছিল তারা।
গত বছর লালচাঁদ রাজপুত আফগানিস্তানের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেবার পরে আফগানিস্তানের পারফরম্যান্স রীতিমত ঈর্ষণীয়। প্রায় 60% ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছে তারা তারমধ্যে ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ ড্র রাখা সবথেকে উল্লেখযোগ্য। খুব শীঘ্রই ভারতের সাথে টেস্ট সিরিজ খেলার কথাবার্তা শুরু করেছে আফগান ক্রিকেট বোর্ড।