অ্যাডিলেডে বর্ডার গাভাস্কার ট্রফির প্রথম দুই দিন টানটান উত্তেজনার খেলা হলেও তৃতীয় দিনে পুরো হিসেব বদলে যায়। অস্ট্রেলিয়ার দুই তারকা পেসার প্যাট কামিন্স এবং জস হেজলউডের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে ছারখার হয়ে যায় ভারতীয় ব্রিগেড। মাত্র ৩৬ রানে অল আউট হয়ে কুৎসিত ইতিহাস তৈরি করে ভারতের তারকা সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইন আপ। নিজেদের সুদীর্ঘ টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে সব থেকে কম রান করার রেকর্ড গড়ল ভারত।
এই ব্যর্থতার জন্য বেশ কয়েকজন ভারতীয় ক্রিকেটারের খারাপ পারফর্মেন্সকে দায়ী করছেন অনেকেই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট মনে করেন, পৃথ্বী শয়ের খারাপ পারফর্মেন্সের জেরে ভারত বারংবার ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে। দুই ইনিংসে পা ও ব্যাটের গ্যাপের মধ্যে দিয়ে আউট হয়েছেন পৃথ্বী, এছাড়া ফিল্ডিংয়েও গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিস করছেন তিনি। এক কথায়, দলে এসে বোঝা হয়ে পড়ছেন এই তরুণ ওপেনার।
জনপ্রিয় সংবাদপত্র মিড ডে পত্রিকায় নিজের কলামে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট লিখেছেন, “দুই ইনিংসেই পৃথ্বী শয়ের দ্রুত আউট হওয়াটা ভারতীয় টিমকে ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দিচ্ছে। গত ভারত সফরেও পৃথ্বী শ এই দলের সদস্য ছিলেন, ফলে এই তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রচুর উত্তেজনা এবং আশা গড়ে উঠেছিল। আর এর অর্থ হল ওনার টেকনিক নিয়ে প্রচুর বিশ্লেষণ হয়েছে এবং একটি স্বচ্ছ পরিকল্পনা চলে এসেছে যেখানে এই তরুণ ক্রিকেটারের ব্যাট ও প্যাডের মাঝের গ্যাপটিকে ব্যবহার করতে হবে, আর এটিই এই তরুণ ক্রিকেটারের জন্য বড় চিন্তার।”
এদিকে পৃথ্বীর টেকনিক অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চলবে না, এমনটাই দাবি করেছেন গিলক্রিস্ট। আর এর ফলে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের অন্য অপশন দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি। কিংবদন্তী এই ক্রিকেটার আরও লিখেছেন, “পৃথ্বী শকে দেখা গিয়েছে বড় শট মারার প্রয়াস করছেন উনি, যা অস্ট্রেলীয় কন্ডিশনে তার পক্ষে উলটপুরাণ হতে পারে। কারণ এর ফলে উনি গালিতে নিজের ক্যাচ দিয়ে বসবেন। যদিও তিনি একজন প্রতিভাধর তরুণ ক্রিকেটার, কিন্তু ওনার পারফর্মেন্স নির্বাচকদের দ্বিধায় রাখবে আসন্ন বক্সিং ডে টেস্টের জন্য।”
এদিকে প্রথম ইনিংসে যেভাবে ধীরগতিতে শুরু করেছিল ভারতীয় দল, সেই একই চিন্তাধারা তারা রাখতে পারেননি দ্বিতীয় ইনিংসে। আর এর ফলে ব্যাটিং ধসের সম্মুখীন হয়েছে টিম ইন্ডিয়া, এমনটাই মনে করেন গিলক্রিস্ট। এই নিয়ে তিনি বলেছেন, “প্রথম ইনিংসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, আমার মনে হয় যে ধীরগতির ব্যাটিং করছিলেন চেতেশ্বর পুজারা এবং বিরাট কোহলি, তা নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত ডিফেন্সিভ ব্যাটিং। আর সেটাই ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে করে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।”