বিসিসিআই অনিশ্চিতকালের জন্য আইপিএল ২০২০কে স্থগিত করে দিয়েছে। এই টুর্নামেন্ট ২৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এখনো পর্যন্ত এই লীগ শুরু হতে পারেনি। আজ আমরা এই বিশেষ প্রতিবেদনে আপনাদের ৫টি এমন ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ব্যাপারে জানাব, যেখানে আইপিএল ২০২০র আয়োজন করা হতে পারে।
ধর্মশালা
হিল স্টেশনের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর আর দর্শণীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলির মধ্যে একটি ধর্মশালা। ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়াম সবসময়ই নিজের মনোরম অবস্থানের কারণে সমর্থকদের প্রিয় থেকেছে। এই স্টেডিয়ামে আইপিএলের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করার এক সমৃদ্ধি ইতিহাস রয়েছে। ২০০৩ সালে এই স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত ছোট আকার সত্ত্বেও এই স্টেডিয়াম আইপিএলে গত বেশকিছু মরশুমে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ঘরোয়া মাঠ হিসেবে কাজ করেছে। এই স্টেডিয়ামে প্রত্যেক মরশুমে মোহালির ফ্রেঞ্চাইজির কম সে কম ২-৩টি ম্যাচের আয়োজন করা হয়। বিশ্ব টি-২০ ২০১৬ চলাকালীন কিছু ম্যাচের আয়োজনের দায়িত্ব এই স্টেডিয়ামকে দেওয়া হয়েছিল। হিমাচল প্রদেশ ভারতে করোনার সবচেয়ে কম প্রভাবিত রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। ফলে এই মাঠকে আইপিএল ম্যাচের আয়োজনের জন্য একটি স্পষ্ট বিকল্প হিসেবে দর্শায়। বর্তমানে হিমাচলে প্রায় ২০০ সক্রিয় করোনা আক্রান্তের ঘটনা রয়েছে, এই কারণে বিসিসিআইয়ের জন্য আইপিএল করানোর এটা একটা সবচেয়ে ভালো স্টেডিয়ামে।
মোহালি
ভারতে মহামারীর প্রকোপের শুরু চরণ চলাকালীন, মোহালি সবচেয়ে প্রভাবিত শহরগুলির একটি ছিল। যদিও গত ২ মাসে শহরে করোণা ভাইরাসের মামলা কমে গিয়েছে আর এই শহর এখন ভারতের সবচেয়ে কম প্রভাবিত শহরগুলির একটি। মোহলির আইএস বিন্দ্রা ক্রিকেট স্টেডিয়াম ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট মাঠগুলির একটি। এই মাঠে আইপিএলের সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচেরও আয়োজন করা হয়েছে। এটি কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের সঙ্গেই ঘরোয়া ক্রিকেট দলেরও প্রথমিক ঘরোয়া মাঠ। ১৯৯৩তে স্থাপিত এই মাঠে ২৭০০০ দর্শক বসার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে পাঞ্জাবের প্রায় ৫০০ করোনার সক্রিয় মামলা রয়েছে, তবে এখানে রিকভারির সংখ্যা ২২০০র বেশি। পিচের গুণবত্তা আর অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত আবহাওয়াকে দেখে, মোহালীকে লীগের এই সংস্করণে ম্যাচের আয়োজনের একটা ভালো বিকল্প মনে করা হতে পারে।
দেরাদুন
দেরাদুনের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সম্প্রতিই তৈরি হয়েছে। এটি দেরাদুনের রায়পুর এলাকার একটি বহুউদ্দেশীয় স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামের নির্মাণ সম্প্রতিই হয়েছে, এই কারণে এই স্টেডিয়াম এখনো পর্যন্ত খুব বেশি ম্যাচের আয়োজন করেনি। ভারতীয় দল এখনো পর্যন্ত এই মাঠে কোনো ম্যাচ খেলেনি। আসলে বিসিসিআই দ্বারা আফগানিস্তানকে এইই স্টেডিয়ামে ম্যাচের আয়োজন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২৩ একর এলাকায় ২০১৬য় স্থাপিত এই স্টেডিয়ামে ২৫০০০ মানুষ বসার ক্ষমতা রয়েছে। মহামারীর প্রভাবের দিক থেকে উত্তরাখন্ড অন্য বেশকিছু রাজ্যের তুলনায় ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছে। রাজ্যে প্রায় ১০০০ সক্রিয় করোনার কেস রয়েছে। এই কারণে এই স্টেডিয়ামের ব্যাপারেও ভাবতে পারে বিসিসিআই।
রাঁচি
প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ঘরোয়া মাঠও আইপিএল আয়োজন করার জন্য একটি উপযুক্ত বিকল্প। এই মাঠ আগেই অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচের পাশাপাশি আইপিএল ম্যাচের আয়োজনও করেছে। স্টেডিয়ামের উদ্বোধন ২০১৩য় হয়েছিল আর এই মাঠে একবারে ৩৯,০০০ হাজার দর্শক বসার ক্ষময়া রয়েছে। স্টেডিয়ামটি ঝাড়খন্ড রাজ্যের ঘরোয়া ক্রিকেট দলের ঘরোয়া মাঠ। ঝাড়খন্ডে এই সময় ৮০০র বেশি সক্রিয় কোভিড-১৯ এর মামলা রয়েছে, কিন্তু এই সংখ্যাটি এই রাজ্যের আশেপাশের রাজ্যের তুলনায় অনেক ভালো। সেই সঙ্গে প্রায় ৬০০জন এই রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন, এই কারণ রাঁচি আইপিএল ২০২০ সংস্করণের আয়োজনের জন্য একটি সম্ভাবিত জায়গা হতে পারে।
রায়পুর
শহিদ বীর নারায়ণ সিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম যাকে পরসদা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামও বলা হয়, একটি অপেক্ষাকৃত অপরিচিত মাঠ। ইন্টারেস্টিং বিষয় হল যে বসার ক্ষমতার দিক দিয়ে এটি এই তালিকায় সবচেয়ে বড়ো স্টেডিয়াম। ২০০৮ এ স্থাপিত এই মাঠে ৬৫,০০০ জন মানুষ একসঙ্গে বসে ম্যাচ দেখতে পারেন। এটি ভারতের তৃতীয় সবচেয়ে বড়ো ক্রিকেট স্টেডিয়াম আর বিশ্বের চতুর্থ সবচেয়ে বড়ো। এই স্টেডিয়াম ২০১০ এ কানাড দলের বিরুদ্ধে প্র্যাকটিস ম্যাচের আয়োজন করার পর থেকে কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করেছে। ২০১৩য় এটা দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের জন্য দ্বিতীয় ঘরোয়া মাঠ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল।