ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা বা জেন্টলম্যান গেম হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এই ভদ্রোলোকের খেলাতে মাঝে মাঝেই ক্রিকেটাররা এমন কিছু অশালীন মন্তব্য করে বসেন যা এই খেলাটিকেই করে ফেলে কলঙ্গকিত। এই ধরনের বেঁফাস কথা বলে শাহিদ আফ্রিদি থেকে শুরু করে স্টিভ ওয়াগের মত কিংবদন্তী ক্রিকেটাররাও জড়িয়ে গিয়েছেন বিতর্কে। আর এমনই ক্রিকেট ইতিহাসের বিতর্কিত পাঁচজন ক্রিকেটারের মন্তব্য তুলে ধরব আপনাদের সামনে যার ফলে উত্তাল হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব।
শহিদ আফ্রিদি:
ক্রিকেট জীবনে বহুবারই ভারত বিদ্বেষী মন্তব্য করে বিতর্কে পড়েছেন এই পাকিস্তানী অলরাউন্ডার। সাম্প্রতিককালে কাশ্মীর থেকে ভারত সরকারের আর্টিকেল ৩৭০ সরানো নিয়েও মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করেছেন বুমবুম আফ্রিদি। ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিল আফ্রিদির দল পাকিস্তান। তারপরই দেশে ফিরে আফ্রিদি মন্তব্য করেন,
“’সত্যি কথা বলতে কি, আমার মনে হয় ওরা(ভারতীয়রা) কখনো পাকিস্তানিদের মতো হৃদয়ের অধিকারী হতে পারবে না। আমার মনে হয়না আল্লাহ আমাদেরকে যেমন বিরাট ও পরিচ্ছন্ন মন দিয়েছেন তা ওদের(ভারতীয়) আছে”।
মাইকেল ভন:
ভেরিভেরি স্পেশাল লক্ষ্মণের চওড়া ব্যাট টেস্ট ক্রিকেটে ভারতকে বহু অসম্ভব জেতা ম্যাচকে জিতিয়ে দিয়েছে। নির্বিরোধী লক্ষ্মণকে নিয়েও যে কেউ বিতর্কিত মন্তব্য করতে পারে তা প্রথম দেখা গিয়েছিল ২০১১ সালে। ২০১১য় ভারতের ইংল্যান্ড সফরে লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন প্রাক্তন ইংল্যাণ্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে টুইট করে মাইকেল ভন জানিয়েছিলেন হটস্পট টেকনোলজির চোখে ধুলো দিতে ব্যাটে ভেসলিন ব্যবহার করেছিলেন লক্ষ্মণ। মাইকেল ভন টুইট করে লিখেছিলেন,
“লক্ষণ কি তার ব্যাটের বাইরের পাশে লেগে থাকা ভেসলিনের কারণেই বেঁচে গেল?”
স্টিভ ওয়া:
ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর দলকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন ভারতের সবচেয়ে সফলতম অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। দলের শারীরি ভাষাই বদলে দিয়েছিলেন তিনি। ২০০১এ স্টিভ ওয়াগের অস্ট্রেলিয়ার একটানা ১৬টি টেস্ট জেতার বিজয় রথ তিনি থামিয়ে দিয়েছিলেন ইডেনে। ২০০১ এ অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরে ইডেন টেস্ট স্টিভ ওয়াকে টসের জন্য মাঠে অপেক্ষা করিয়ে রেখে দেরীতে পৌঁছেছিলেন সৌরভ। তারপরই স্টিভ মন্তব্য করে বসেন, “প্রতিপক্ষের জন্য সম্মানের অভাব ছিল গাঙ্গুলির মধ্যে, কারণ সে সবসময়ই টসের সময় দেরি করে আসতো”।
শোয়েব আখতার:
ভারতীয় দলের দুই সর্বকালীণ সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচিত হন শচীন তেন্ডুলকর এবং রাহুল দ্রাবিড়। এই দুই কিংবদন্তী ক্রিকেটারের সক্ষমতা নিয়ে কেউই প্রশ্ন তুলতে পারবেন না। বহু বহু ম্যাচ তারা একার হাতেই ভারতকে জিতিয়েছেন। কিন্তু এই দুই নির্বিরোধী জেন্টলম্যান ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে পড়েছিলেন পাকিস্তানী জোরে বোলার তথা রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস নামে পরিচিত শোয়েব আকতার। এই দুই ভারতীয় ক্রিকেটারকে নিয়ে শোয়েব মন্তব্য করেছিলেন,
“আমার মনে হয় যে শুরুর দিকের ব্যাটসম্যান হিসেবে তেন্ডুলকর কিংবা রাহুল দ্রাবিড় ম্যাচ উইনার ছিলেন না। এমনকী কিভাবে ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়তে হবে সেটাও তারা খুব একটা ভালভাবে পারতেন না”।
আহমেদ শাহজাদ:
পাকিস্তানী ক্রিকেটাররা চিরকালই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। তা সে জাভেদ মিয়াঁদাদই হোন বা আফ্রিদি, শোয়েব আকতার হোন বা হালফিলহালের আহমেদ শাহজাদ। ধর্মের ব্যাপারে পাকিস্তানীরা চিরকালই কট্টর বলে প্রমানিত। শ্রীলঙ্কার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তিলকরত্নে দিলশানের ধর্ম পরিবর্তন করা নিয়ে বিতর্কে পড়েছিলেন পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান আহমেদ শাহজাদ। তিলরত্নেকে নিয়ে তিনি বলেছিলেন,
“তুমি যদি অমুসলিম থেকে মুসলিম হও, তাহলে জীবনে যাই করো না কেন, তুমি সরাসরি জান্নাতে চলে যাবে”।