ক্রিকেট খেলার জগতে একটি বিশেষ স্থানে রয়েছে। ক্রিকেটের খেলাকে ভদ্রলোকের খেলা বলা হয়। খেলার দুনিয়ায় এই খেলাটিকে সভ্য মানুষের খেলা বলা হয়ে থাকে কিন্তু ক্রিকেটও বিতর্ক থেকে বাঁচতে পারেনি। ক্রিকেট খেলা শুরু থেকেই বিতর্কের সঙ্গে যথেষ্ট সম্পর্ক রেখে চলেছে। এই কারণে সময় সময়ে এই জেন্টলম্যানের খেলাটিকেও খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
এই ৫জন কোচ থেকেছেন বিতর্কিত
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে আলাদা আলাদা বিতর্ক সামনে আসতে থেকেছে, যার মধ্যে ম্যাচ ফিক্সিং হোক বা খেলোয়াড়দের দ্বারা করা কোনো দুর্ব্যবহারও রয়েছে যা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এইভাবে দলের কোচকেও বির্তকের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে বেশকিছু কোচ থেকেছেন যাদের বিতর্কের মুখোমুখি হতে হয়েছে আর নিজেদের পদ ছাড়তে হয়েছে। আজ আমরা এমনই ৫জন কোচের ব্যাপারে জানাব।
গ্রেগ চ্যাপেল
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে এমনিতে বেশকিছু মুহূর্ত থেকেছে যা ভীষণই খারাপ। এর মধ্যে একটি হলো ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের কার্যকাল। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেল ২০০৫ এর শেষে ভারতীয় কোচের পদ সামলান, কিন্তু দায়িত্ব নিতেই তিনি বির্তকে থাকতে শুরু করেন। গ্রেগ চ্যাপেলের কার্যকালে দলে দুটি গ্রুপ দেখতে পাওয়া যায় আর তখন অধিনায়ক সোয়্রভ গাঙ্গুলীকে গ্রেগ চ্যাপেল অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেন। গাঙ্গুলীর চ্যাপেলের সঙ্গে সম্পর্ক খুবই খারাপ ছিল। এরপর চ্যাপেল বেশকিছু বির্তকের জন্ম দেন। শেষমেশ ২০০৭ এর বিশ্বকাপের হারের পর চ্যাপেলের কার্যকাল বিতর্কের মধ্যেই শেষ হয়।
অনিল কুম্বলে
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা স্পিন্র অনিল কুম্বলে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচের পদও সামলান। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক অনিল কুম্বলে ২০১৬য় ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হন। এরপর তাকে এক বছরের জন্য এই পদে নিযুক্ত করা হয়। অনিল কুম্বলের কোচিংয়ে ভারতীয় দলের প্রদর্শন দারুণ থেকেছে কিন্তু তার কার্যকালের শেষদিক বিতর্কের মধ্যে কেটেছে। অনিল কুম্বলেকে ২০১৭র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর হঠাত করেই ইস্তফা দিতে হয়। এটা নিয়ে মনে করা হয় যে কুম্বলের অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না, আর এই কারণে তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন।
মিকি আর্থার
দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তানের মতো বড়ো দলের কোচ থাকা মিকি আর্থারের পাকিস্তানের হয়ে কোচিংয়ের কার্যকাল এমনিতে ভীষণই ভালো ছিল কিন্তু এর শেষটা যথেষ্ট বিতর্কিত ছিল যার ফলে বিতর্কের মধ্যেই তাকে পাকিস্তান দলের কোচের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গত বছর খেলা আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কোচিংয়ের পদ মিকি আর্থারের হাতে ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বিশ্বকাপে নিরাশাজনক প্রদর্শনের সমস্ত দায় মিকি আর্থারের ঘাড়ে বর্তায়। মিকি আর্থারকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড দলের নিয়ন্ত্রণ না রাখার কারণ দেখিয়ে কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করে দেয়।
বব উলমার
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন তারকা খেলোয়াড় বব উলমারের কোচিংয়ের যথেষ্ট ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। এই কারণে ২০০৪ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড পাকিস্তান ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে উলমারকে নিযুক্ত করেন। বব উলমার পাকিস্তানের হয়ে ভালো কাজ করেছিলেন। পাকিস্তান দলে উলমারের অনেক বড়ো সম্মান ছিল আর কার্যকাল বিনা বিতর্কেই কাটছিল। এরপর ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের ছিটকে যাওয়ার পর একদিন হঠাত করে ১৮ মার্চ জামাইকার একটি হোটেলের তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। তদন্তে বাস্তবিকতার খোলসা হয়নি। কিন্তু মৃত্যুর ফলে উলমারকে নিয়ে বির্তক তৈরি হয়।
স্টুয়ার্ট ল
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার স্টুয়ার্ট ল নিজের জীবনের বেশকিছু দলকে কোচিং করিয়েছিলেন। তিনি এইভাবে গত বছরই দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ওয়েস্টইন্ডিজের কোচ ছিলেন। ওয়েস্টইন্ডিজের কোচিংয়ে তিনি বেশ কয়েকবার ভালো কাজ করেন কিন্তু ত্র নাম একটি বড়ো বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। গত বছর ভারত সফরে আসে ওয়েস্টইন্ডিজের দল। এই সফ্রে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন ওয়েস্টইন্ডিজের ব্যাটসম্যান কায়রণ পাওয়েল অশ্বিনের বলে স্লিপে দাঁড়ানো রাহানে ক্যাচ দিয়ে বসেন। যা অ্যাম্পায়ার আউট দেন। এই সিদ্ধান্তে স্টুয়ার্ট ল খুশি ছিলেন না আর তিনি তৃতীয় অ্যাম্পায়ারের রুমে গিয়ে ঢুকে পড়েন। আইসিসি এই ঘটনাকে মেনে নিতে পারেনি আর তাকে ২টি ওয়ানডে আর ১টি টেস্টের জন্য ব্যান করে দেয়।