ভারত হারলেও গুয়াহাটি ম্য়াচে একাধিক রেকর্ড গড়েছেন বিরাট 1

রাঁচিতে গত সাত অক্টোবর ভারতের কাছে হারার পর তিন ম্য়াচের টি-২০ সিরিজে গত দশ অক্টোবর গুয়াহাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ধোনির শহরে জেএসসিএ স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সে প্রথম ম্য়াচে ভারতের বোলাররা দাপট দেখিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় টি-২০ আন্তর্জাতিকে নবনির্মিত বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে সেই টোটকাতেই ভারতকে বধ করেছে অজিরা। একেবারে মধুর বদলা যাকে বলে। আগের ম্য়াচে বৃষ্টির কারণে খেলা থামার সময় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর যা ছিল, সেই রানেই ভারতকে অল-আউট করে দেয় ক্য়াঙারু ব্রিগেড। তবে, গুয়াহাটিতে অজিদের কলার একটু বেশি উঁচু হয়েছে। কারণ, বিরাট কোহলির টিম অল-আউট হয়েছে, কিন্তু রাঁচিতে অস্ট্রেলিয়ার তখনও দুটি উইকেট হাতে ছিল।

পাওয়ার-প্লেতে অজি বোলার জেসন বেহরেন্ডোর্ফ আগুন ঝরিয়েছেন। চারজন ভারতীয় ব্য়াটসম্য়ানকে ওই পর্বে প্য়াভিলিয়নে পাঠানো মুখের কথা নয়। সবচেয়ে বড় ধাক্কা দলের সেরা ব্য়াটসম্য়ান ও অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে শূন্য় রানে ফিরিয়ে দেওয়া। গোড়াতেই কাঁচা আঘাতটাকে দগদগে ঘা করে দেওয়াতে ভারত আর সামলে উঠতে পারেনি। একেই টি-২০ খেলা, সামলে ওঠার সময় পাওয়া যায় না, মেরে খেলাই এই ফরম্য়াটের নিয়ম। স্কোর বোর্ডে বড় রান না থাকলে ফর্মে থাকা বোলাররাও ঘাবড়ে যান অভিজ্ঞ না হলে। অজিদের ইনিংসে ভারতের দুই রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহল এই কারণেই ব্য়র্থ হয়েছেন।

গুয়াহাটির এই বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্য়াচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম লেখাল। এর আগে কোনও আন্তর্জাতিক ম্য়াচ হয়নি এখানে। ফলে, পিচ কেমন আচরণ করতে পারে, সে সম্পর্কে দুই দলেরই কোনও ধারনা ছিল না। পুরোপুরি আন্দাজের ওপর দুই দল পরিকল্পনা সাজিয়ে ছিল। ভারতীয় টিম ম্য়ানেজমেন্টর পরিকল্পনা কাজে লাগেনি। আর ওদিকে অজি টিম ম্য়ানেজমেন্টের পরিকল্পনা ক্লিক করে যায়। অস্ট্রেলিয়ার সাতাশ বল বাকি থাকতে দ্বিতীয় ম্য়াচে জয় সিরিজের ব্য়বধান ১-১ করে দেওয়ায় উত্তেজনাটা হায়দরাবাদ পর্যন্ত জিইয়ে রাখল। ৪-১ ব্য়বধানে পঞ্চাশ ওভারের সিরিজ খোয়ানোর পর টি-২০ সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার হাতে যায় কি না, এখন সেটাই দেখার। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি পর্বে বিরাটের ইয়ং ইন্ডিয়ার জন্য় এটাও একটা শেখার মতো হবে।  

নবনির্মিত বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে বেশ কয়েকটি রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্য়ে দুটি রেকর্ডের সঙ্গে বিরাট কোহলি জড়িয়ে রয়েছেন। দল হারলেও ভারত অধিনায়কের নামের পাশে দুটি ব্য়ক্তিগত রেকর্ড লেখা হয়ে গিয়েছে।

  •  ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, ভারতের সঙ্গে এই নিয়ে পাঁচটি টি-২০ ম্য়াচ খেলল। এই প্রথম ভারতকে ভারতের মাটিতে হারাল অস্ট্রেলিয়া।
  •     পাওয়া প্লে চলাকালীন আন্তর্জাতিক আসরে টি-২০ ম্য়াচে দ্বিতীয়বার চার উইকেট খোয়ালো ভারত। প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই চার উইকেট খুইয়ে ছিল ভারত, ২০০৮ সালে মেলবোর্নে।
  • গুয়াহাটিতে টি-২০ ক্রিকেটে ১০০টি ক্য়াচ নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন ভারত অধিনায়ক। রোহিত শর্মা ও সুরেশ রায়নার পর কোহলি তৃতীয় ভারতীয়।
  • ৪-০-২১-৪, বেহরেন্ডোর্ফের করা এই স্পেল ভারতের বিরুদ্ধে টি-২০ ফরম্য়াটে কোনও অজি বোলারের সেরা পারফরম্য়ান্স। এর আগে এই রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন পেস বোলার ন্য়াথান ব্র্য়াকেনের দখলে ছিল। ২০০৮ সালে ১১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন ওই বাঁ-হাতি অজি স্পিডস্টার।
  • এই নিয়ে পাঁচবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি স্টাম্প আউট হলেন ব্য়াটিংয়ের সময়। শেষবার ধোনিকে কোনও বিপক্ষ দলের উইকেটকিপার স্টাম্প আউট করেছিলেন ২০১১ সালে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেবেন্দ্র বিশু, মাহিকে স্টাম্প আউট করেছিলেন।
  • টি-২০ ক্রিকেটে এই নিয়ে সাতবার অল-আউট হলো ভারতীয় ক্রিকেট দল। সাতবারই ভারত হারল।
  • গত সাতটি টি-২০ ম্য়াচে টানা জয়ের পর ভারত হারল।
  • টি-২০ ফরম্য়াটে ভারতীয় ব্য়াটিং অর্ডারের প্রথম চার ব্য়াটসম্য়ানের করা সবচেয়ে কম সম্মিলিত রান। ২০০৮ সালে মেলবোর্নের ওই ম্য়াচেও ১৬ রান ছিল ভারতের প্রথম চার ব্য়াটসম্য়ানের সম্মিলিত অবদান।
  • শূন্য় রানে আউট হলেও ভারতের হয়ে টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ৪৭টি ইনিংস খেলার রেকর্ড গড়েছেন কোহলি।
  • গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম ঊনপঞ্চাশতম ভেন্য়ু, যেখানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আন্তর্জাতিক ম্য়াচ আয়োজন করল।
  • ভারতের বিরুদ্ধে তৃতীয় উইকেটের জুটিতে মোজেস হেনরিকে ও ট্রাভিস হেডের মধ্য়ে হওয়া অপরাজিত ১০৯ রানের পার্টনারশিপ, টি-২০ ফরম্য়াটে ভারতের বিরুদ্ধে যে কোনও উইকেটের জুটিতে অজিদের সেরা পার্টনারশিপ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *