শেষ বলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ছক্কা মেরে ভারতকে জিতিয়ে এই মুহুর্তে হিরো বনে গিয়েছেন দীনেশ কার্তিক। কার্তিকের ওই ঐতিহাসিক ছক্কা তাকে একাসনে বসিয়ে দিয়েছে পাকিস্থানী কিংবদন্তী জাভেদ মিয়াঁদদের সঙ্গে। এর আগে একই রকমভাবে শারজায় চেতন শর্মাকে শেষ বলে ছক্কা মেরে ভারতের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন মিয়াঁদদ। আর সেই ছক্কার ধাক্কা এতটাই ভারতীয় আত্মবিশ্বাসকে শেষ করে দিয়েছিল যে তারপর থেকে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে খেলতে নামলেই ভারতের অবধারিত হার হত। রবিবারের পর থেকে হয় একই রকম অবস্থা হবে বাংলাদেশেরুও। এরপর থেকে হয়ত কার্তিককে ব্যাট হাতে নামতে দেখলেই হৃদকম্প দেখা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের। কার্তিককের এই শেষ বলের ছক্কাই তাকে ক্রিকেট প্রেমীদের মনে জীবন্ত করে রাখবে চিরদিন। এই মুহুর্তে কার্তিক রয়েছেন লাইম লাইটের আলোয়। কিন্তু এর আগে এমন মূহুর্ত কখনও আসেনি তার জীবনে। এমন ভয়াবহও ছিলেন না কার্তিক আগে। তাহলে এই বদলের নেপথ্যের গল্পটাই বা কি?
কিভাবে এতটা বদলে গেলেন ভারতীয় ক্রিকেটের এই উইকেটকীপার ব্যাটসম্যান। কে রয়েছেন কার্তিকের এই বদলের পেছনে? কার্তিকের এই বদলের পেছনে রয়েছেন তার বন্ধু অভিষেক নায়ার। অভিষেক নিজেও একজন ক্রিকেটার। গত ২০১৬ থেকেই কার্তিক অফ ফর্মের শীকার ছিলেন। সেই সময় প্রবল হতাশা ঘিরে ধরে তাকে। এতটাই হতাশাগ্রস্ত ছিলেন কার্তিক যে তার সেই খারাপ পারফর্মেন্সের প্রভাব পড়েছিল ২০১৬র নিলামে। সেবার তার দাম ন’ কোটি টাকা থেকে কমে দাঁড়ায় ২ কোটি টাকায়। সেইসময় কার্তিকের পাশে এসে দাঁড়ান বন্ধু অভিষেক। কার্তিকের এই সম্পূর্ণ ভোল বদলের পেছনে রয়েছেন অভিষেক নায়ার। সেই সময় কার্তিক থাকতেন তার চেন্নাইয়ের বিশাল বাড়িতে। তার লাইফ স্টাইল কোনও রাজার থেকে কম ছিল না। সেই সময় অভিষেকের পরামর্শেই কার্তিক ওই বিলাসবহুল বাড়ি ছেড়ে এক ছোট্ট বাড়িতে থাকতে শুরু করেন কার্তিক। সেই বাড়িতে বিলাসের নাম গন্ধও ছিল না কার্তিকের জন্য।
এমনকী সেই বাড়ির টয়লেটে শাওয়ারও ছিল না। এরকম জীবন যাপনের সঙ্গে এক বর্ণও অভ্যস্ত ছিলেন না কার্তিক। ফলে অভিষেকের উপর ভীষণ রেগে যেতেই এই ব্যাটসম্যান। তা সত্ত্বেও অভিষেক তার পাশ থেকে সরে যান নি। কার্তিককে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে টেনে বের করেন এই বন্ধু। এমনকী কার্তিকের ট্রেনিংয়ের ব্যাপক পরিবর্তন আনেন অভিষেক। অভিষেকের এই কড়া নজরে বদলে যায় কার্তিকের আরামপ্রদ জীবন। ফলে এখন কার্তিক সহজেই মানিয়ে নেন যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে। যার ঝলক এদিন দেখা যায় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে। চাপের মুখে ৮ বলে ২৯ রানের ইনিংসটিও বুঝিয়ে দেয় সেকথাই।