প্রায় এক যুগ আগে ভারতীয় দলের খেলোয়াড়রা তাদের ফিটনেসের জন্য খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। এবং নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে তারা অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। তবে বর্তমান ভারতীয় দলের অনেক খেলোয়াড়রাই এখন আর সেই ক্যাটাগরিতে পড়েন না। বিশ্বসেরাদের সঙ্গে তুলনায় তাদের ফিটনেস লেবেল এখন অনেকটাই উঁচুতে। ভারতীয় ড্রেসিং রুমের এই বদলের ক্ষেত্রে অনেকটাই কৃতিত্ব প্রাপ্য ভারতীয় দলের স্টাফদের। ভারতীয় দলের কন্ডিশনিং কোচ শঙ্কর বসু দলের ফিটনেসের ধারা বজায় রাখতে দলের সকলের জন্যই এই ফিটনেস টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছেন। ভারতীয় দলের কোচ এবং নির্বাচক প্রধান এমএসকে প্রসাদ আলরেডি তাদের ভাবনা পরিস্কার করে দিয়েছেন যে ভারতীয় দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কেই শারীরিকভাবে ফিট হতে হবে। দলের প্রতিটা অনুশীলনেই দলের প্রত্যেক প্লেয়ারকেই তাদের স্কিল সেশনের পর কঠোর ফিটনেস সিডিউলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ভারতীয় ক্রিকেটারদের এখন ডিএনএ ফিটনেস টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে যা দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ের জেনেটিক ফিটনেস প্রকাশ করবে। এই ফিটনেস টেস্টের মাধ্যমে প্লেয়ারদের স্পীড, ফ্যাট বার্নিং, এনডিওরেন্স রিকভারি টাইমের এবং মাসল বিল্ডিংয়ে প্রভূত উন্নতি ঘটানো সম্ভব হবে। এরপর সমস্ত রকম অ্যানালিসিসের জন্য প্রতিটা প্লেয়ারের ডিএনএ ডাটা মেলানো হবে তাদের এনভায়ারমেন্টাল ডাটা যেমন তাদের বডি ওয়েট এবং ডায়েটের সঙ্গে।
বিসিসিআইয়ের এক অফিসিয়াল জানিয়েছেন, “ হ্যাঁ, এখন কিছু সময়ের জন্য আমরা ভারতীয় দলের খেলোয়াড়দের জন্য ডিএনএ টেস্ট শুরু করতে চলেছি। এটা বেসিক্যালি টিমম্যানেজমেন্ট সেট করেছে ফিটনেসের প্যারামিটার হিসেবে। এই ডিএনএ টেস্ট প্রথম শুরু হয় আমেরিকার এনবিএ (বাস্কেটবল), এবং এনএফএল দলের জন্য। এই আইডিয়াটা নিয়ে শঙ্কর বসু আলোচনা করেন এবং প্রমান হয় এটা যথেষ্ট কার্যকরি। আর প্রত্যেকটা প্লেয়ারের জন্য এই টেস্ট করতে বিসিসিআইয়ের খরচ পড়বে কমপক্ষে ২৫০০০ থেকে ৩০০০০ হাজার টাকা”।
এই টেস্ট খেলোয়াড়দের শরীর থেকে ফ্যাট পারসেন্টেজ কমাতে শুরু করা হচ্ছে। ভারতীয় দলের একজন খেলোয়াড়ের ফ্যাট পারসেন্টেজ লিমিট রাখা হয়েছে ২৩। যা সাধারনত প্রায় প্রতিটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টিমের ক্ষেত্রেই একটা স্ট্যান্ডার্ট। আগে ভারতীয় দলের ক্ষেত্রে স্কীট ফোল্ড টেস্ট করা হত, পরে তা বদলে ডিইএক্সএ টেস্ট করা শুরু হয়। ওই অফিসিয়ালের কথায়, “ আগে প্রাথমিক ভাবে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্কিনফোল্ড টেস্ট করা হত। কিন্তু পরে জানা যায় শরীরের ফ্যাটের পরিমানের পারসেন্টেজ জানতে এই টেস্টের ফলাফল অ্যাকুরেট হয় না। পরে শরীরের ফ্যাট পারসেন্টেজ ক্যালকুলেট করতে ডিইএক্সএ পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হয়। এখন ডিএনএ টেস্ট করা হচ্ছে কারণ পার্টিকুলার ফ্যাট পারসেন্টেজ মেনটেন করতে শরীরের কি কি প্রয়োজনীয়তা তা জানার জন্য”।