ধোনি কে ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলানো উচিত কিনা তা খোলসা করে দিলেন সৌরভ 1
MS Dhoni, captain, of India chats with Sourav Ganguly during the 3rd Paytm Freedom Trophy Series T20 International match between India and South Africa held at Eden Gardens Stadium in Kolkata, India on the 8th October 2015 Photo by Ron Gaunt/ BCCI/ Sportzpics

অধিনায়কের পদ ছেড়ে দিলেও, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি এখনও খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগের মতো মারা কাটারি ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিয়ে এখন রক্ষণাত্মক ভঙ্গি নিয়েছেন ধোনি। অনেকে তা নিয়ে সমালোচনা করলেও, এটা মেনে নিতে হবে বয়স বাড়ার সঙ্গে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক পোড় খাওয়া হয়েছেন। এখানে একটা উদাহরণও দেওয়া যায়। অল্প বয়সে ক্রিকেট গড শচীন তেন্ডুলকর বিধ্বংসী মেজাজে ব্য়াট করতেন। সেই শচীনই অভিজ্ঞ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেট কেরিয়ারকে দীর্ঘায়িত করতে এবং দায়িত্ব নিয়ে দলকে টানার জন্য় আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি রক্ষণাত্মক ক্রিকেট খেলার দিকে ঝুঁকেছিলেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রিফেলক্স কমতে থাকলে বড় মাপের ক্রিকেটাররা এটাই করে থাকেন। আসল ব্য়াপার হলো দলের জন্য় রান করা এবং অনুকূল পরিস্থিতিতে নিজের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে না এসে ক্রিজে চোয়াল চেপে লড়াই করা।
ব্য়াটসম্য়ান ধোনি তাঁর ক্রিকেট জীবনে যতটা সম্মান পেয়েছেন, উইকেটকিপার ধোনি ততটাই অবহেলিত। কোনওদিন খেয়ালই করেননি কেউ। বরাবরই ধোনির কিপিংয়ের মধ্য়ে দুর্বলতা খোঁজার চেষ্টা করেন সমালোচকরা। কারণ, ধোনির কারণে অনেক ভালো ভালো উইকেটকিপারের ভারতীয় দলে সুযোগ হয়নি আবার অনেকে সুযোগ হারাচ্ছেন। তবে, এনিয়ে কোনও দ্বিমত নেই রেকর্ডের বিচারে মাহি দেশের সেরা উইকেটকিপার এই মুহূর্তে। বিশ্ব ক্রিকেটে ধোনির সবচেয়ে বেশি স্টাম্পিং করার রেকর্ডে কিংবদন্তি উইকেটকিপারদেরও পিছনে ফেলে দিয়েছেন। ভারতের প্রাক্তন অধিনায় সৌরভ গাঙ্গুলি তাঁর রাজ্য়ের ক্রিকেটার ঋদ্ধিমান সাহাকে ধোনির থেকে স্পেশালিস্ট উইকেটকিপার হিসেবে কয়েক কদম এগিয়ে রাখলেও, তাঁর মতে ধোনি এখনও খেলা চালিয়ে যাবেন। দাদা এটাও বিশ্বাস করেন, ২০১৯ বিশ্বকাপে ধোনিই যাবেন। অন্য় কেউ নন।
সৌরভের এই বক্তব্য়ের পিছনে যুক্তিও আছে। রাঁচির মতো এক ছোটো শহর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে ধোনির উত্থান যেভাবে হয়েছে, তা প্রায় অকল্পনীয়। প্রথাগত টেকনিক মেনে ব্য়াটিং না করার দরুণ, প্রতিভা থেকেও তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। সংসার চালাতে টিটিই-র চাকরি পর্যন্ত করেছিলেন। পরে সেই চাকরি ছেড়ে ভারতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া এবং অধিনায়কের আসনে বসে দেশকে দু’টি বিশ্বকাপ এনে দেওয়া – সত্য়িই আবাক করে দেওয়ার মতো। ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক তো বটেই, ধোনি বিশ্বক্রিকেটের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক তর্কের খাতিরে। কারণ, গোটা ক্রিকেট বিশ্বে কোনও অধিনায়কও আইসিসি’র সব ট্রফি জিতে দেশকে উপহার দিতে পারেননি। একমাত্র ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি এক্ষেত্রে ব্য়তিক্রম।
উইকেটকিপার ঋদ্ধি এগিয়ে থাকলেও ব্য়াটিং ও অধিনায়কত্বে বাংলার উইকেটকিপার ধোনির ধারেকাছেও কোনওদিন আসতে পারবেন না। বিরাটের হাতে অধিনায়কত্ব উঠলেও, অলিখিতভাবে ধোনিই দলকে চালাচ্ছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। প্রয়োজনে বিরাট ধোনির থেক পরামর্শ নেন। ঋদ্ধি সেটাই কোনও দিনই পারবেন না। সৌরভ তাই বলছেন, ”২০১৯ বিশ্বকাপে ধোনিই খেলবে। আমার সেরকমই মনে হয়। ছত্রিশ বছরের ধোনি এবং ২০০৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নামা ধোনির মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। শুধু উইকেটকিপার নয়, ধোনি সহজাত নেতা। কোহলির প্রযোজন রয়েছে ধোনিকে। স্টাম্পের পিছনে দাঁড়িয়ে পুরো মাঠে নজর থাকে ধোনির।”
ধোনি ও ঋদ্ধির তুলনা প্রসঙ্গে দাদা বলেন, ”ধোনি অন্য়দের থেকে একেবারে আলাদা। আর সেই কারণেই ও এত সফলতা পেয়েছে। সময়ের সঙ্গে ধোনি আরও ক্ষুরধার হয়েছে। যদিও, আমাদের ঋদ্ধিমানের দিকে নজর রাখতে হবে। কিপিংয়ের দিক থেকে ধোনির তুলনায় এগিয়ে ঋদ্ধি। ছয়-সাত নম্বরে নেমে ভাল ব্যাটিংও করতে পারে।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *