প্রথম ম্যাচে কেকেআরের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল বিরাট কোহলির রুয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। আরসিবিকে হারনোর মাত্র একদিন পরেই ফের আরেক কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখী দীনেশ কার্তিকের কেকেআর। আজ আর কিছুক্ষণ পরেই চেন্নাইতে কেকেআর নামতে চলেছে সিএসকের বিরুদ্ধে। তবে কেকেআরের পক্ষে রয়েছে দুটি সুখবর। প্রথমত মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া কেদার যাদব ছিটকে গিয়েছে বাকি আইপিএল থেকেই। চোট নিয়েই মাঠে ফিরে এসে চেন্নাইকে রোমাঞ্চকর জয় উপহার দিয়েছিলেন কেদার যাদব। কিন্তু সেই চোটই এবার তাকে সরিয়ে দিল আইপিএল থেকেই। দ্বিতীয়ত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে আঙুলে চোট পাওয়া ফাফ দু’প্লেসি এখনও সুস্থ হয়ে ওঠেন নি। ফলে সিএসকের দ্বিতীয় ম্যাচে কলকাতার বিরুদ্ধেও মাঠে নামতে পারবেন না তিনি। আর চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ মানেই দরকার পরিকল্পনা।
আর যদি চিন্নাস্বামীর পিচের কথা ধরা হয় তাহলে এই পিচ যথেষ্টই মন্থর, এবং স্পিনারদের কাছে তা স্বর্গ। ফলে কেকেআরের অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের মাথায় ঘুরছে স্পিন আক্রমণের পরিকল্পনা। তবে স্পিনারদের সুবিধা দিলেও চিন্নাস্বামীর পিচ মন্থর হওয়ার কারণে ব্যাটসম্যানরাও শট খেলতে অনেক সময় পেয়ে যায়। তবে চিন্নাস্বামীর অতীত বলছে স্পিনাররাই ভাগ্য গড়ে দেন ম্যাচের। ফলে স্পিন নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী দুই দলেরই অধিনায়ক। কারণ তাদের দুদলেরই ভাঁড়ারে রয়েছে আইপিএলের সেরা স্পিনাররা। কেকেআরের হাতে রয়েছে তিন মারণ স্পিনার সুনীল নারিন, কুলদীপ যাদব এবং পীষূষ চাওলা, এছাড়াও দীনেশ কার্তিকের হাতে রয়েছে আরেক অনিয়মিত স্পিনার নীতিশ রানা, যিনি কেকেআরের প্রথম ম্যাচে এবি ডেভিলিয়র্স এবং বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে দিয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছিলেন আরসিবিকে।
অন্য দিকে ধোনির হাতেও রয়েছেন ইমরান তাহির, হরভজন সিং এবং রবীন্দ্র জাদেজার মত আন্তর্জাতিক মানের স্পিনার। এদের মধ্যে যে কেউই তাদের নিজের দিনে একার ক্ষমতায় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তবে বর্তমান ফর্ম এবং দক্ষতার বিচার করলে এগিয়ে থাকবেন নাইট স্পিনাররাই। তবে মাথায় রাখতে হবে যে ধোনির নেতৃত্বে চিরকালই ঘরের মাঠে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে চেন্নাই। এখনও পর্যন্ত নাইটদের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তাদের খেলা সাতটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটাতেই জিত হাসিল করেছে সিএসকে। অন্যদিকে চিন্নাস্বামীর পিচ যে স্পিনারদেরই সাহায্য করবে সে কথা বলছেন চেন্নাইয়ের কোচ মাইক হাসিও। সংবাদমাধ্যমের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ চিন্নাস্বামীর পিচ একটু শুকনো। মনে হচ্ছে এটা স্পিনারদেরই সাহায্য করবে। তবে ব্যাটসম্যানদেরও রান করার সুযোগ রয়েছে”। বিপক্ষের স্পিন অস্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, “ কেকেআরের হাতে খুব ভালো মানের স্পিনার রয়েছে। এছাড়াও ক্রিস লিন, অ্যান্দ্রে রাসেলের মত বেশ কয়েকজন ম্যাচ উইনারও রয়েছে ওদের দলে। ওরা যে কেউ একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে”।
হাসি আরও বলেছেন যে চাপের মুখে যে দল ভালো খেলতে পারবে তারাই শেষ হাসি হাসবে। তবে নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা রয়েছে চেন্নাই শিবিরে। প্রথম ম্যাচে ওয়াংখেড়েতে যদি ডোয়েন ব্র্যাভো রুখে না দাঁড়াতেন তাহলে বিপদে পড়তে পারত দল। একমাত্র ব্র্যাভো ছাড়া আর কেউই সেভাবে দাঁড়াতে পারেন নি মুম্বাইয়ের বোলারদের সামনে। তা ছাড়া কেদার যাদব চোটের জন্য ছটকে গিয়েছেন এমনকী খেলতে পারবেন না দু’প্লেসিও। যা নিয়ে চেন্নাইয়ের কোচ বলেছেন, “ কেদারকে না পাওয়াটা বড় ধাক্কা। আইপিএলে চোট সারিয়েই ফিরে এসেছিল ও। কিন্তু ওর দুর্ভাগ্য যে আবারও চোট পেয়ে গেল। দলে ওর জায়গা ভরাট করা বেশ কঠিন। তবে এখন আমাদের ব্যাটিংয়ের প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে রান করার জন্য। মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে পাওয়ার প্লের শেষ দিকে বেশ কিছু উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম আমরা। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানরাও যথেষ্ট দক্ষ। আমাদের শুধু বুদ্ধি করে খেলতে হবে”।