দুঃসংবাদ মুশফিকুর রহিমের জন্য 1

ji

টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যে দশটি ম্যাচে জয়ী হয়েছে যার সাতটিতে ই অধিনায়ক ছিলেন মুশফিক। মুশফিকের নেতৃত্বে ড্র করেছে ৯ টেস্টে। হার ১৭টিতে। সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারিয়ে টেস্টে বাংলাদেশের উত্থানও তাঁর হাত ধরেই। অধিনায়কত্বের চাপ মুশফিকের ব্যাটিংয়েও কখনো সমস্যা তৈরি করেছে বলে মনে হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলনে বা সংবাদ মাধ্যমের সাথে বলা কথাগুলো ই বিপদ হয়ে আসছে মুশফিকের। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট শেষে সংবাদ মাধ্যমে এসে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন বোলারদের। এর আগে শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম টেস্টে মুশফিকের কিপিং গ্লাভস তুলে রাখতে রাখতে হয়েছিল তখনো তিনি জানিয়ে ছিলেন সেটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। ব্লুমফন্টেইনে টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তাঁর উত্তর ছিল, ‘আমার মনে হয় টসে জেতাটাই ভুল হয়ে গেছে।’ এ ছাড়া অধিনায়ক হয়েও তাঁর বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তটা টিম ম্যানেজমেন্টের, ফাঁস করে দিয়েছেন সেটিও। এসব মন্তব্যের কোনোটাই বোর্ড সহজভাবে নেয়নি। ‘অধিনায়ক প্রকাশ্যে এভাবে বোলারদের সমালোচনা করতে পারেন না। টসে জিতে ভুল হয়েছে, এটাই বা কেমন কথা! তাঁর এসব মন্তব্যে বোর্ড সন্তুষ্ট নয়’—জানিয়েছেন বিসিবির এক পরিচালক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির ঔ পরিচালক নিশ্চিত করলেন, ‘আমরা মুশফিকের বিকল্প ভাবতে শুরু করেছি। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কিছু বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক সিদ্ধান্তও ভুল হচ্ছে।’ এদিকে মুশফিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে গুন্জন উঠায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে সাবেক ক্রিকেটারদের মাঝে। মুশফিকের অধিনায়কত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম জানান, ‘ওকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াটা ঠিক হবে না। মুশফিক খুবই আবেগী ক্রিকেটার। হুট করে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওর খেলার ওপর প্রভাব ফেলবে, সেটা হতে দেওয়া উচিত নয়।’ সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদও মুশফিকের পক্ষ নিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না, এ নিয়ে কথা বলার উপযুক্ত সময় এটি। একটা সফরের মাঝে আছে দল। কে কেমন অধিনায়কত্ব করে, এটা আমরা জানি। সিরিজে ভুলত্রুটি হতেই পারে। সব সিরিজ তো এক রকম যাবে না। তবে আমার প্রশ্ন, ব্যর্থতার দায় কি শুধু মুশফিকের? টিম ম্যানেজমেন্টের কোনো দায় নেই? দল যখন ভালো খেলে সবাই বাহাবা নেয়। আর খারাপ খেললে শুধু অধিনায়ক আর খেলোয়াড়দের দোষ?’

‘সব অধিনায়ককেই একটা সময় থামতে হয়। মুশফিককেও থামতে হবে। ম্যানেজমেন্ট হয়তো মনে করতে পারে অধিনায়কত্ব ছাড়লে ভবিষ্যতে তাঁর পারফরম্যান্স আরও ভালো হতে পারে। দায়িত্ব-চাপ অধিনায়কদের থাকে। তবে মনে রাখতে হবে, মুশফিকই কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক। তবে একটা সময় অধিনায়কত্ব ছাড়তে হয়।’ বলেছেন সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান। সাবেক নির্বাচক আতাহার আলী বলেন ‘যদি মুশফিক ছেড়ে দেয়, অনেকে মনে করতে পারে টেস্ট অধিনায়কত্ব সাকিবকে দেওয়া যেতে পারে। তবে আমি মনে করি, টেস্টে বর্তমান বাংলাদেশ দলের সহ–অধিনায়ক তামিম ইকবাল হতে পারে ওর সেরা বিকল্প। একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে সে যে ফর্মে আছে এবং অতীতে দেখেছি, মাঠে সে যেভাবে সক্রিয় থাকে, আমার কাছে মনে হয়, এখানে তামিমই সেরা। সে কোনো কিছু ঘটার জন্য অপেক্ষায় থাকে না। নিজেই ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পছন্দ করে। মাঠে তার আগ্রাসন প্রশংসনীয়।ভ’

Nazmus Sajid

Sports Fanatic!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *