'তিনশো করার চেষ্টা করব' 1

টেস্টে আসরে দ্বিশতরান করেছেন এমন ব্য়াটসম্য়ানের সংখ্য়া হাতে গোনা। তিনশো রান করা ক্রিকেটারের সংখ্য়া আরও কম। পঞ্চাশ ওভারের ফরম্য়াটে কেউ দ্বিশতরান করবেন জীবনে কেউ ভাবেনি। শচীন তা করে দেখানোর পর সেই সংখ্য়া বেড়ে এখন ছয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তার মধ্য়ে রোহিত একাই দুবার ২০০ রানের ওপর স্কোর করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুতে ২০৯ রান করার পর কলকাতায় ২৬৪ রান শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। একদিনের ক্রিকেটে এটাই কোনও ব্য়াটসম্য়ানের করা সর্বোচ্চ স্কোর। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়কের এবার ইচ্ছে হয়েছে, প্রথম ব্য়াটসম্য়ান হিসেবে ৩০০ রান করার রেকর্ড গড়ার।'তিনশো করার চেষ্টা করব' 2

ক্রীড়া সঞ্চালক গৌরব কাপুরের ওয়েব সিরিজ শো ব্রেকফাস্ট উইথ চ্য়াম্পিয়ন্স শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন হিটম্য়ান। রোহিতকে তাঁর দুবার ২০০ রান করার নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। আর তার মধ্য়ে কোনটা সেরা। তাতে রোহিত বলছেন, খুব মুশকিলে পড়ে গেলাম। প্রশ্নটায় ওজন আছে। কিন্তু, উত্তর দেওয়ার মতো কিছু নেই আমার কাছে। ২০৯ রানের ইনিংসটা সিরিজ নির্ণায়ক ম্য়াচে ছিল। শিখর আবার তাড়াতাড়ি ফিরে গিয়েছিল। বিরাটও তাড়াতাড়ি রান আউট হয়ে গিয়েছিল। আমি নিজেই চাপে ছিলাম। তখন পরিস্থিতিটা এমন মনে হয়েছিল, আমি রান না করতে পারলে, আমাদের সিরিজে হারতে হবে। ৩৫০-৪০০ রান চাই স্কোর বোর্ডে। আমার দলকে সাড়ে তিনশো তুলে দিতেই হবে বোর্ডে। ব্য়াটিং করতে করতে উইকেটের চরিত্রও বুঝে ফেলেছিলাম। রান না করলে চাপে পড়তে হতো আমাদের। ওই ইনিংসে আমি ১৬টা ছয় মেরেছিলাম। ওটা রেকর্ড ছিল। মিস্টার থ্রি. সিক্সটি (এবি ডিভিলিয়ার্স) তার পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আমার রেকর্ড ছুঁয়েছে।

তারপর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ক্রিকেটের স্বর্গোদ্য়ানে ১৭৩ বলে ২৬৪ রানের ইনিংসে। আর কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকলে তিনশো রান সেদিনই করে ফেলতেন সম্ভবত রোহিত। যদিও ওই ম্য়াচটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল না সিরিজ জয়ের নিরিখে।'তিনশো করার চেষ্টা করব' 3

আমি সেদিন ওই ইনিংসটা খেলার পর জানতে পারি ৩৩টা চার মেরেছিলাম। আমায় বাদ দিয়ে গোটা টিমও অতো বাউন্ডারি মারতে পারনি। আঙুলের চোট সারিয়ে তিনমাস হয়েছিল দলে ফিরেছিলাম। ফলে ওই ইনিংসটা খেলে খুশি হয়েছিলাম। ম্য়াচের আগে ঋতিকাকে (তাঁর স্ত্রী) বলেছিলাম, জানি না, ম্য়াচে কি করব! তারপর যাইহোক ওই ম্য়াচে রান করি। অনেক আত্মবিশ্বাস পাই। ম্য়াচের পর কোচ ডানকান ফ্লেচার আমায় বলেছিলেন, ইনিংসের শুরুটা ধীরে না করলে তিনশো রান করে ফেলতে পারতাম। আমি তাতে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ডানকান ভাই, ২৬৪ রান তোমার কম মনে হচ্ছে?’ তাতে দুজনেই হেসে উঠেছিলাম।'তিনশো করার চেষ্টা করব' 2

রোহিতের ওই ২৬৪ রানের ইনিংসটা দর্শকদের মানসিকতা এতোটাই বদলে দিয়েছে যে এখন তিনশো রান দেখার অপেক্ষায় বসে সবাই। ইদানিং আধুনিক ক্রিকেট যেদিকে এগোচ্ছে এবং রানের ভরা পিচ তৈরি হচ্ছে, তাতে ভবিষ্য়তে ৩০০ রান অসম্ভব নয়। তবে, শচীন যেমন প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ রান করার নজির গড়েছিলেন, ভারতবাসী চায় প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৩০০ রান যেন রোহিতের ব্য়াটেই আসে। এপ্রসঙ্গে হিটম্য়ান বলছেন, এখন আমি যেখানেই যাই লোকে আমার কাছ থেকে ৩০০ রান প্রত্য়াশা করে। ডিপ লং অন বা ডিপ মিড অন অথবা ডিপ মিড অফে ফিল্ডিং করলে, আবার কখনও এয়ারপোর্টে কেউ দেখতে পেলে সারাক্ষণ জানতে চায়, তিনশো রান কবে করবে ভাই? যেন মনে হয়, ওটা কোনও খাবার। আমার ইচ্ছে হলো আর আমি তুলে খেয়ে নিলাম। ভারত এমন একটা দেশ, যেখানে প্রত্য়াশার মাত্রা কখনও শেষ হয় না। আর এটাই ক্রিকেট এখানে। প্রত্য়াশা নিয়ে বেঁচে থাকা প্রতিদিন। তবে, বলতে পারি, এবার ৩০০ রান করার চেষ্টা করব।'তিনশো করার চেষ্টা করব' 5

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *