টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে আকাশে উড়তে থাকা ভারতীয় দলকে মাটিতে নামিয়ে শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচ ৪০ রানে জিতে সিরিজের সমতা ফেরালো নিউজিল্যান্ড টিম। প্রথমে ব্যাট করে সফরকারি দল কলিন মুনরো দুরন্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৬ রান তোলে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ঘরের মাঠে খেলা ভারতকে দেখে কখনই মনে হয় নি তারা সেই রান তাড়া করতে পারবে। ৭ উইকেটে ১৫৬ রানেই আটকে যায় তারা। সেই সঙ্গে কিউয়িদের বিরুদ্ধে ৮টি টি২০ ম্যাচে তাদের ৬ নম্বর হার হয়। ফলে সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ করতে বিরাট কোহলি অ্যাণ্ড কোং কে তাকিয়ে থাকতে হবে আগামি ৭ নভেম্বর তিরুবনন্তপুরমের শেষ ম্যাচের দিকে। এই ম্যাচে দলকে জয়ের রাস্তায় ফিরিয়ে এনে ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের ট্রাক রেকর্ড উন্নতি করতে করতে চাইবে ভারত। তাই সিরিজের শেষ ম্যাচ জিততে ভারতের সম্ভাব্য একদক কেমন হতে পারে একবার দেখে নেওয়া যাক।
রোহিত শর্মা: সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৮০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে যাওয়া ভারতের এই ওপেনার দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন। নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি জোরে বোলার ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হওয়ার আগে ঐ ম্যাচে তিনি করেন মাত্র ৫ রান। আশা করা যায় দ্বিতীয় ম্যাচের ব্যর্থতার ক্ষতিপূরণ হিসেবে সিরিজ নির্নায়ক ম্যাচে তিনি ফের ব্যাট হাতে জ্বলে উঠবেন।
শিখর ধবন: নিজের ওপেনিং পার্টনারের মতই ভারতের এই মারকুটে ব্যাটসম্যান সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৮০ রান করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে সেই ধারা বজায় রাখতে ব্যর্থ হন। সঙ্গীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি মাত্র এক রানে বোল্টের বলে আউট হন। এই ম্যাচে সঙ্গীর মত তারও চোখ থাকবে ভারতকে একটা ভালো শুরুয়াত দেওয়ার।
বিরাট কোহলি: টি২০ ক্রিকেটের এক নম্বর ব্যাটসম্যান আগের ম্যাচেই ৬৪ রানের একটি লড়াকু ইনিংস খেলে নিজেকে প্রমান করেছিলেন। কিন্তু অন্যপ্রান্ত থেকে সাহায্যের অভাবে তার সেই লড়াই ব্যর্থ হয়ে যায়।
শ্রেয়স আইয়ার: মুম্বাইয়ের এই তারকা ব্যাটসম্যান তার অভিষেক ম্যাচ ব্যাট করার সুযোগ না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ২৩ রান করে নিজের প্রভাব ফেলেছিলেন। শুরুতেই দুই ওপেনারের আউট হয়ে যাওয়ার পর বিরাট কোহলির সঙ্গে জুটি বেঁধে একদিক ধরে রেখে ভারতের টালমাটাল অবস্থা কিছুটা হলেও সামাল দিয়েছিলেন।
দীনেশ কার্তিক: দ্বিতীয় ম্যাচে রানের জন্য সংঘর্ষরত ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের অক্ষমতা ঢাকতে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট নিজেদের ব্যাটিংকে শক্তিশালী করতে ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে দলে রাখতে পারে।
এমএস ধোনি: প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক গত ম্যাচে ৩৭ বলে ৪৯ রান করলেও তার ধীর শুরুয়াতের জন্যই নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচে ফিরে আসতে প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে দেয়। জিততে গেলে ওভার পিছু ভারতের দরকার ১০ রান, এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে প্রথম ২০ বল খেলে তিনি করেন মাত্র ১৭ রান। তার সেই ব্যার্থতা ঢাকতে তিনিও তাকিয়ে থাকবেন শেষ ম্যাচের দিকেই।
হার্দিক পাণ্ড্যিয়া: ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে লাগাতার অফ ফর্মে রয়েছেন। দলের সর্বাধিক রান তাড়া করতে প্রয়োজনীয় সময়ে ব্যাট হাতে মাত্র এক রান করেন তিনি। বল হাতেও ব্যর্থ তিনি। গত ম্যাচে মাত্র এক ওভার বল করে ১৪ রান দেন তিনি।
কুলদীপ যাদব: দ্বিতীয় ম্যাচে বল হাতে ৩ ওভারে ৩৯ রান দেওয়ায় অক্ষর প্যাটেলের জায়গায় সিরিজ নির্নায়ক ম্যাচে প্রথম একাদশে ফিরতে পারেন কুলদীপ যাদব।
ভুবনেশ্বর কুমার : ভারতীয় দলের অন্যদের মতই ভুবনেশ্বর কুমারও দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজকোটের ম্যাচে তিনি ছিলেন উইকেট বিহীন। তবে উইকেট না পেলেও বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ২৯ রান দিয়ে রান আটকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি।
যযুবেন্দ্র চাহাল: দ্বিতীয় ম্যাচে এই লেগ স্পিনার অত্যাধিক রান দেন। তবে ৪ ওভারে ৩৬ রান দিলেও মার্টিল গাপ্তিল ও কলিন মুনরো ১০৫ রানের জুটি ভেঙে দলকে প্রয়োজনীয় ব্রেক থ্রু এনে দেন তিনি।
জসপ্রীত বুমরাহ: দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে কোনো উইকেট না পেলেও বল হাতে ওই ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বুমরাহ। রাজকোটের দ্বিতীয় ম্যাচে ৪ ওভার বল করে তিনি মাত্র ২৩ রান দিয়ে নিউজিল্যান্ডের রান আটকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছিলেন তিনি।