বুধবার দিল্লীর ফিরোজশাহ কোটলায় ভারত নিউজিল্যান্ডের মধ্যে প্রথমবার অনুষ্ঠিত ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি খেলে নিজের ১৮ বছরের ক্রিকেট জীবনের ইতি টানলেন ভারতের বাঁহাতি জোরে বোলার আশিস নেহেরা। এই মুহুর্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেহেরার জন্যভেসে আসছে শুভেচ্ছা বার্তা। বুধবারের ম্যাচের আগে ভারতীয় দলে নেহেরার এক সময়ের সতীর্থ হেমাঙ্গ বদানি ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেন, যেখানে তিনি নেহেরা সম্পর্কে অনেক অজানা কথা ভাগ করে নিয়েছেন। মহম্মদ আজহারউদ্দিনের নেতৃত্বে ১৯৯৯ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক ঘটে নেহেরার। তারপর থেকে তিনি প্রায় ৫ জন অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছেন। ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা নেহেরাকে মনে রাখেন ২০০৩ ওয়ার্ল্ড কাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার দুরন্ত স্পেলের জন্য, যেখানে তিনি ২৩ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। ৩৮ বছর বয়েসি এই পেসার ২০১১র ওয়ার্ল্ডকাপ জয়ী ভারতীয় দলেরও সদস্য ছিলেন। সেই ওয়ার্ল্ডকাপের সেমি ফাইনালে কঠিন পরিস্থিতি পাকিস্থানের বিরুদ্ধে তার দুরন্ত বোলিং চিরকাল ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গাঁথা হয়ে থাকবে তার অন্যান্য দুরন্ত স্পেলগুলির মতই। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ওভারে কঠিন পরিস্থিতিতে অধিনায়ক সৌরভ সবসময়েই ভরসা রাখতে নেহেরার উপরে। ওই ভিডিওয় বদানি একটি মজার ঘটনার কথাও শেয়ার করেছেন। পাকিস্থানের সঙ্গে একটি হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে কাকে ফাইনাল ওভার দেওয়া যায় তা নিয়ে খানিকটা চিন্তায় ছিলেন অধিনায়ক সৌরভ। ভিডিওয় বদানি জানিয়েছেন, “ ২০০৪ এ অসাধারন পাকিস্থান সফরে করাচি ম্যাচের একটি ঘটনা আমার মনে পড়ছে। আমরা সাড়ে তিনিশোর কাছাকাছি রান করেছিলাম। শেষ ওভারে পাকিস্থানের জেতার জন্য দরকার ছিল ৯ কি ১০ রান। মাঠে সকলেই সেই মুহুর্তে দ্বিধায় ছিল কে শেষ ওভারটা করবে। ফাইন লেগে ফিল্ডিং করছিল নেহেরা। সেই মুহুর্তে নেহেরা ছুটে গিয়ে গাংগুলীকে বলেন, দাদা(সৌরভ) ম্যায় ডালতা হুঁ, আপ ডরো মত। ম্যায় ম্যাচ উইন করকে দুঙ্গা (দাদা আমি বল করব, তুমি ভয় পেয়ো না। আমি ম্যাচ জিতিয়ে দেবো)। এরপর যা হয়েছিল তা একমাত্র নেহেরার পক্ষেই সম্ভব। ওই শেষ ওভারে নেহেরা দিয়েছিল মাত্র ৩ রান। সেই সঙ্গে উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া ব্যাটসম্যান মইন খানকে আউট করেছিল নেহেরা। আর আমরা খাদের কিনারা থেকে অনায়াসে সেই ম্যাচ জিতে নিয়েছিলাম”। ফেসবুকে হেমাঙ্গ বদানি এই ভিডিওটির শিরোনাম দিয়েছেন “দ্যা ম্যান হু সেইড, ‘দাদা, ডরো মত’ টু দাদা হিমসেলফ” (সেই ব্যক্তি যে দাদা কে বলেছিল, ‘দাদা ভয় পেয়ো না’)।
ওই পোস্টে বদানি আরও লেখেন, এই মানুষটি নিজের পজিটিভিটি দিয়ে জীবনে বহু চোট আঘাতের সম্মুখিন হয়েও ফিরে এসেছে। তিনি লড়াকু মানসিকতা এবং বড় হৃদয়ের একজন মানুষ। তোমাকে সুন্দর একটা অবসর জীবনের জন্য অভিনন্দন। দেশের হয়ে খেলে জাতীয় পতাকাকে অনেক অনেক উঁচুতে উড়িয়েছো তুমি।
জানেন পাকিস্তান ম্যাচে সৌরভকে কি উপদেশ দিয়েছিলেন নেহেরা?
