অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গত রবিবার শেষ হওয়া একদিনের সিরিজে ভারতের অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া সিরিজের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন। ব্য়াট, বল ও ফিল্ডিং সব বিভাগেই নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তেইশ বছরের এই তরুণ অলরাউন্ডার। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হওয়ায় হার্দিক খুব বেশি মাত্রায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ১৯৮৩‘র বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবের পর ভারতীয় দলে গত চার দশকের মধ্য়ে এই প্রথম কোনও অলরাউন্ডার পেয়েছে ভারত, যিনি পেস বোলিং করতে পারেন। আর সেই কারণেই হার্দিকের সঙ্গে অনেকেই গ্রেট কপিল দেবের তুলনা করছেন। এখানে বলে রাখা ভালো, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের তিন স্পিনিং লেজেন্ড শেন ওয়ার্ন, মুথাইয়া মুরলীধরন ও অনিল কুম্বলে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেস বোলার কোর্টনি ওয়ালশের রেকর্ডের আগে একসময় বহুদিন টেস্টের আসরে কপিলের ৪৩৪টি উইকেটের রেকর্ড রাজত্ব করে এসেছে পাজামা ক্রিকেটের আসরে। ভারতবাসী হিসেবে সেটা গর্বের যুগ ছিল একসময়।
হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে কপিলের সঙ্গে যে তুলনা টানা হচ্ছে, সেইসব তুলনায় এখনই যেতে না করছেন ভারতের সর্বকালের সেরা অন্য়তম সেরা প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্য়মকে দাদা বলেন, ”ভারতীয় দলকে সাহায্য় করার মতো প্রতিভা রয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার মধ্য়ে। কিন্তু, ওর সঙ্গে এখন থেকেই কপিল দেবের তুলনা করবেন না। কপিল দেব একজন চ্য়াম্পিয়ন ক্রিকেটার ছিলেন। যাঁর সঙ্গে অন্য় কারও তুলনা টানা খুব মুশকিল। হার্দিককে এখনও দশ-পনেরো বছর ক্রিকেট খেলতে দিন। তারপর ওকে নিয়ে আলোচনা করা যাবে। হার্দিক ভালো ক্রিকেটার। ওকে ওর ক্রিকেট খেলাটা এনজয় করতে দিন আপাতত। ওর মধ্য়ে ইতিবাচক মানসিকতা আছে। হার্দিক লড়তে জানে। একজন তরুণ প্রতিভার মধ্য়ে এই ব্য়াপারটাই চাই। আমার শুভকামনা ওর সঙ্গে রইল। আশা করি, বিরাট কোহলির জন্য় ও আরও ভালো অবদান রাখবে।”
এদিকে, ভারত ৪-১ ব্য়বধানে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর আগামী সাত অক্টোবর থেকে টি-২০ খেলতে নামছে ক্য়াঙারুদের বিরুদ্ধে। লক্ষ্য় একদিনের সিরিজের পারফরম্য়ান্সটাকে আরও উন্নত করে কুড়ি-কুড়ি ক্রিকেটের সিরিজের ট্রফিটাও দেশে রেখে দিয়ে অজিদের খালি হাতে বাড়ি পাঠানো। সৌরভ এব্য়াপারে বলছেন, ”শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারত দাপটের সঙ্গে আধিপত্য় দেখিয়েছে। ব্য়াটিং ও বোলিং বিভাগে প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হিসেবে নিজেদের প্রমাণ দিয়েছে। গত দেড় বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেট এটাই করে যাচ্ছে। শুধু চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে যা ছন্দপতন হয়েছিল। নিউজিল্য়ান্ড ও শ্রীলঙ্কা এরপর ভারতে আসবে, ওদেরকেও ভারতীয় দলের খুনে মেজাজের মুখে পড়তে হবে। ভারত এখন অনেক এগিয়ে।”
এদিকে, আটত্রিশ বছর বয়সে ভারতীয় দলে কামব্য়াক করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন কোহলির রাজ্য়ের পেস বোলার আশিস নেহরা। সোশ্য়াল মিডিয়াতে নেহরাকে নিয়ে নানান মজাদার সব পোস্ট শেয়ার করা চলছে। সবই নেহরার বয়স নিয়ে। সৌরভ তাতে বলছেন, ”এটা তো ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ভালো খবর। নির্বাচকরা বয়স নন, দক্ষতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। ওকে আমরা শেষবার টি-২০ বিশ্বকাপে খেলতে দেখেছিলাম। নেহরা বাঁ-হাতি বোলার হওয়ায় আলাদা অ্য়াঙ্গেলে নিয়ে বল করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে ও ভালো পারফর্ম করবে, আমার মনে হচ্ছে।”
উল্লেখ্য়, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্য়াচের টি-২০ সিরিজে দলে কামব্য়াক করছেন স্পেশালিস্ট ওপেনার শিখর ধওয়ন। ভারতীয় দলে বহুদিন পরে ফিরছেন উইকেটকিপার ব্য়াটসম্য়ান দিনেশ কার্তিক। তবে, ওয়ান-ডে সিরিজে ভালো পারফর্ম করা অজিঙ্কা রাহানেকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাকে টি-২০ সিরিজেও বাইরে রেখেছেন নির্বাচকরা।