ওয়ান-ডে সিরিজ শেষ । এবার টি-২০ সিরিজের ঢাকে কাঠি পড়বে। সিরিজ শুরুর আগে থেকেই কিউয়িদের বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের ক্রিকেট ছোটো ফরম্য়াটের সিরিজ নিয়ে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ, এই সিরিজের অবসর নিচ্ছেন ভারতীয় দলের অভিজ্ঞ বাঁ-হাতি পেস বোলার আশিস নেহরা। দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় প্রথম ম্য়াচ। ঘরের মাঠেই ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। নিউজিল্য়ান্ড সিরিজ শুরুর আগেই তা জানিয়ে দিয়েছিলেন নেহরা। নির্বাচকরাও সেই মতো তাঁকে দলে রেখেছেন। নিজের অবসরের মুহূর্তকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে, এই ক‘দিন নেটে বেশ খেটে চলেছেন নেহরা। কিন্তু, দিল্লিতে টি-২০ ম্য়াচ করানো নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আর তার কারণ হলো দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রাধিক্য়। পয়লা নভেম্বর কোটলা ময়দানে নেহরার অবসর ম্য়াচের ওপর এখন দূষণের মেঘ ঘন হয়ে উঠেছে। আদালতের আদেশের বাধা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে দিল্লির ক্রিকেট কর্তাদের মাথায়।
দিল্লি ক্রিকেট অ্য়াসোসিয়েশন (ডিডিসিএ)-কে চিঠি পাঠিয়েছে পরিবেশ দূষণ (সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ) কর্তৃপক্ষ (ইপিসিএ)। তাতে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে ম্য়াচের দিন ডিজেল চালিত জেনারেটর যেন কোনওভাবেই ব্য়বহার না করা হয়। এখানে উল্লেখ্য়, ডিডিসিএ-র কাছে ফ্লাডলাইট জ্বালানোর জন্য় পাঁচটা ডিজেল চালিত ১২৫ কেভিএ জেনারেটর রয়েছে। দিনরাতের বা রাতের আন্তর্জাতিক ম্য়াচ করানোর সময় ওইগুলি চালিয়ে বিদ্য়ুৎ ঘাটতি মেটায় তারা। কিন্তু, দিল্লিতে দূষণের মাত্রা কমতে সরকারি নিয়মের কারণে এখন আর তা ব্য়বহার করতে পারবে না ডিডিসিএ। এদিকে, টি-২০ ম্য়াচ। পুরোটাই রাতের খেলা। ফলে, বিদ্য়ুৎ ঘাটতি মেটাতে বিকল্প ব্য়বস্থা কিভাবে করবে, তার বন্দোবস্ত করতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে কর্তাদের। এখানে বলে রাখা ভালো, ডিডিসিএ-র প্রধান কর্তা এখন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিক্রমজিৎ সেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার এক ছোটো কর্তা জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমস্য়ার সমাধান করতে বিএসইএস-এর চেয়ারম্য়ানের সঙ্গে অনবরত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ম্য়াচের দিন যেন স্টেডিয়ামে ১৮০০ কেভিএ বিদ্য়ুৎ অতিরিক্ত দেওয়া হয়। ইপিসিএ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে না সরলে এছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। নাহলে ম্য়াচ নিশ্চিত পণ্ড হতে চলেছে। এখন আবার ম্য়াচ অনত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ও নেই। ফলে, কোন পক্ষই রাজি না হলে ম্য়াচ বাতিল করতে হবে আর না হলে ম্য়াচ দিনের বেলায় করাতে হবে।
ওই কর্তা জানান, ”আমরা ইপিসিএ‘কে জানিয়েছি। এটাই এখন প্রধান সমস্য়া। মিটিং চলছে। বিএসইএস‘কে বিদ্য়ুৎ পরিমাণ বাড়াতে অনুরোধ করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। নির্বিঘ্নে একটানা স্টেডিয়ামের লাইট জ্বালানো এবং ম্য়াচ সম্প্রচারের জন্য় আমাদের ৩০০০-৩৫০০ কেভিএ বিদ্য়ুৎ লাগবে। বিয়ে বা ছোটো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে জেনারেটর চালানো যাবে না জানতাম। এখন সেই নিয়ম সুপ্রিম কোর্ট আরও কড়া করেছে সম্প্রতি এক জনস্বার্থ মামলার কারণে।”

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সেনকে ইপিসিএ‘র চেয়ারম্য়ান ডক্টর ভুরে লাল পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ডিডিসিএ‘কে কোনওরকম ছাড় দেবে না তারা ডিজেল জেনারেটর চালানোর জন্য়। তবে, তিনি আশ্বস্ত করেছেন, আগে থেকে জানিয়ে রাখলে বিএসইএস চব্বিশ ঘণ্টার মধ্য়ে অতিরিক্ত বিদ্য়ুৎ দেওয়ার জন্য় প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করে দেবে।
উল্লেখ্য়, গত ১৭ অক্টোবর থেকে ডিজেল চালিত জেনারেটরের ব্য়বহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই নিষেদাজ্ঞা আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত লাগু থাকবে।