১৬ নভেম্বর থেকে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শুরু হতে চলা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে দলে ডাক পেলেন মুরলী বিজয়। গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন মুরলী বিজয়। তারপরই কব্জির চোটের কারণে দল থেকে ছিটকে যান তিনি। কিন্তু এই চোটের দাম মুরলী বিজয়কে ভীষণভাবেই চোকাতে হয়। তার জয়গা ভারতীয় দলে ডাক পান শিখর ধবন। এই সুযোগকে দু’হাতে লুফে নেন শিখর। এবং দলে ফিরে নিজের ব্যাটিংয়ে সকলকে মুগ্ধ করেছেন তিনি। জাতীয় দলে নিজের জায়গা ফিরে পেতে বিজয়কে যথেষ্ট লড়াই করতে হবে দু’জনের সঙ্গে। বিজয়ের অনুপস্থিতিতে ক্রিকেটের এই দীর্ঘ ফরম্যাটে ধবন এবং কে এল রাহুল যথেষ্ট ভালোই ব্যাটিং করে চলেছেন। দলে ফেরার লড়াইয়ে শামিল বিজয় রঞ্জি ট্রফিতে ৩ টে ম্যাচ খেলে ২১০ রান করেছেন। যার মধ্যে ওড়িশার সঙ্গে তৃতীয় ম্যাচে ১৪০ রান করেন তিনি। ডিএনএ নিউজকে দেওয়া এক ইন্টারভিউতে বিজয় রঞ্জিতে তার পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে আসন্ন সিরিজে তার প্রস্তুতি এবং চোট যা তাকে দীর্ঘ আট মাস দলের বাইরে রেখেছিল তা নিয়েও কথা বলেন তিনি। নীচে ডিএনএ নিউজকে দেওয়া তাঁর ইন্টারভিউর কিছু অংশ তুলে ধরা হল।
ওড়িশার বিরুদ্ধে করা ১৪০ রান কি আসন্ন টেস্ট সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে?
এটা খুব ভালো এবং একদম সঠিক সময়ে এসেছে। আমি এটা নিয়ে অনেক খেটেছি। আমার ম্যাচ প্রাকটিসের প্রয়োজন ছিল, এবং আমি যা চাইছিলাম এটা তার জন্য একদম সঠিক ছিল। এবং এটা এল আমার চাওয়া পথেই।
মার্চে আপনি শেষ টেস্ট খেলেছিলেন, তারপর জুলাই-আগস্টে আপনি শ্রীলঙ্কা টুর মিস করেন, সে ক্ষেত্রে আগামী সিরিজের জন্য আপনি কতটা প্রস্তুত?
সেই সময়টা আমার তেমনই গিয়েছিল যেমন অন্যদের ক্ষেত্রে তারা একটা আঘাতের মধ্যে দিয়ে যায় এবং অপেক্ষা করে খেলার জন্য। অবশ্যই আমি এখন ফিট এবং খেলার জন্য প্রস্তুত। সেইসব সুযোগগুলির থেকেও আমি কি করতে চালেছি সেটা আমার কাছে অনেক বেশি উত্তেজনাপূর্ণ। আমি শুধু ভাবছি ভারতীয় দলে যোগ দেওয়ার পর আমার ক্ষমতা অনুযায়ী আমি আমার সেরাটা কিভাবে দিতে পারি। এবং কিভাবে আমি দলের জয় নিজের যোগদান রাখতে পারি।
২০১৫তেও আপনি শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন, এবং এবছরও আপনি কব্জির চোট পেলেন। আপনার আর শ্রীলঙ্কার মধ্যে কি চলছে?
আমি ২০১০এও শ্রীলঙ্কা সফরে দলে ছিলাম। সেই সময় আমি ফিট ছিলাম এবং পারফর্মও করেছিলাম। এটা (চোট) জাস্ট একটা ফেজ। আমি এসব নিয়ে খুব একটা ভাবি না। আমি এমন একজন মানুষ যে বিশ্বাস করে যদি তুমি আঘাত পাও তাহলে তুমি আহতই। কার বিরুদ্ধে খেলার সময় তা হয়েছে সেটা ভীষণই অপ্রাসঙ্গিক। এই মুহুর্তে আমি আমার চোট নিয়ে ভাবছি না। আমি ভাবছি কিভাবে আমি পারফর্ম করব, এবং আমার এনার্জিকে চ্যানেলাইজিং করে নিজের সেরাটা দেওয়ার পথ খুঁজে পাব।
সেই সময়টা এমন ছিল যখন আপনি ব্যাটটাও ঠিক মত তুলতে পারতেন না। এটা কি আশ্চর্য মনে হয় না?
অবশ্যই। অন্তত দু মাসের জন্য আমি নিজের ব্যাটটাও তুলতে পারতাম না। তবে আমি আমার পাশেই ছিলাম। আমি চারদিকে ঘুরে বেড়াতাম এবং নতুন নতুন জিনিস দেখতাম। এবং আমার মাথার পেছনে এটা সবসময় তাড়া করে বেড়াত যে, যে জিনিস তুমি সত্যি সত্যি ভালোবাস তা শীঘ্রই ফিরে পেতে চলেছো। আমি ব্যাপারগুলো এমনভাবে চ্যানেলাইজড করতাম যে ওগুলো আমার চোটের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সবসময়ের মতই আমি প্রচুর শিখেছি। আমি বিশ্বাস করি সকলেই একমাত্র শিখতে পারে। এবং সেখানে কোনো কিছুই ঠিক বা ভুল নয়। এবং সে শুধু উন্নত হতে পারে এবং উচ্চতায় উঠতে পারে।
সেই প্রশ্নগুলোকে আপনি কেমনভাবে নেন যা আপনাকে বারবার শুনতে হয়? সেগুলো কি আপনাকে চাপের মধ্যে ফেলে?
একটা পয়েন্টের পর আমি অসাড় হয়ে পড়ি। আমি সত্যিই আর উত্তর দিতে পারিনা। কারণ আমি নিজেই জানতাম না আমি কখন আবার ব্যাট তুলতে পারব। আমি দ্রুতগতিতে নিজেকে ধাক্কা মেরে যথেষ্ট লড়াই করে চলেছিলাম। এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস থেকেই বলতাম ‘আমি আমার পুরো গ্রীপটাই ফিরে পাবো আবার’। যা আমার কাছে এক অসাধারণ প্রক্রিয়া ছিল।
আমরা কি এই সিরিজে আপনার কাছ থেকে নতুন কিছু দেখতে পাব?
আমি প্রতিবারই নিজের লক্ষ্য স্থির করে আর আহত হয়ে গেছি। তাই আমি আমার লক্ষ্য প্রকাশ করে আবার আহত হতে চাই না। এটা আবারও তেমনই একটা যন্ত্রনা হয়ে দাঁড়াবে যা আমি পেতে চাই না। এটা আমার জন্য ভালো যে নিজেকে এমন একটা মোডে রাখা যেখানে আমার জন্য যা কিছু বা সব কিছুই সম্ভব হতে পারে। কিন্তু এমন কিছু যা আমার জন্য সব দিক থেকেই ভীষণ স্পেশাল।