ক্রিকেট খেলা ভারতে না শুধু খেলা বরং ক্রিকেটকে ভারতে একটা ধর্ম হিসেবেই দেখা হয়। অনেক বাবা মায়েরই স্বপ্ন থাকে তাদের সন্তান বড় হয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। আইপিএল প্রতি বছরই নতুন রূপকথার জন্ম দেয়। এ বছরও তেমনই এক রূপকথার জন্ম দিয়েছে। সেই সঙ্গে পূর্ণ হয়েছে এমনই এক বাবা মায়ের স্বপ্নও। টিভির পর্দায় ছেলেকে আইপিএলে মাঠে দাপিয়ে বেড়াতে দেখে চোখের জল বাঁধ মানল না বাবা মায়ের। নাইট সংসারের নতুন সদস্য রিংকু সিংকে টিভিতে খেলতে দেখে বাবা খানচন্দ্র সিংয়ের চোখে দেখা দিল জলের ধারা। মাথায় করে লোকের বাড়ি গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেন খানচন্দ্র। এভাবেই পরিবারের ভরণপোষণ করেন তিনি। রিংকুর বড়ভাই পেশায় অটোচালক। এই দারিদ্র পরিবারের ছেলে রিংকুর ধ্যানজ্ঞান ক্রিকেট। ক্রিকেট ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারেন না তিনি। আর এবার সেই ক্রিকেটই তাকে পরিচিত দিল আইপিএলের মঞ্চে।
আইপিএলই তাকে নিয়ে এসেছে পাদপ্রদীপের তলায়। যেভাবে এর আগেও এই প্রতিযোগিতা বহু দরিদ্র ক্রিকেটারকে পৌঁছে দিয়েছিল গলি থেকে রাজপথে। এমনকী নিঃশব্দে তাদের জন্য খুলে দিয়েছে জাতীয় দলের দরজাও। আলিগড়ের বাসিন্দা রিংকু সিংও এ বছর তেমনই রূপকথার জন্ম দিয়েছেন। প্রসঙ্গত ২০১৭র আইপিএল মরশুমে তাকে ১০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসে কিনেছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। কিন্তু এ বছর তিনি নিজেই নিজের বেস প্রাইস বাড়িয়ে করেছিলেন ২০ লক্ষ টাকা। তবে তার স্বপ্নকে বাস্তব করে আরও অনেক বেশি টাকায় তাকে কিনে নিয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স।
এ বছর তিনি দর পেয়েছেন ৮০ লক্ষ টাকার। পরপর দুই ম্যাচে ইডেনে আরসিবির বিরুদ্ধে এবং চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে নাইটদের প্রথম একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচেই অবশ্য প্রথম একাদশ থেকে বাইরে চলে যান তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও রিংকুর এখনই চিন্তা করার দরকার নেই। কারণ এখনও বহু ম্যাচ বাকি রয়েছে কেকেআরের। ফলে প্রথম একাদশে রিংকুর জায়গা পাওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে প্রবল। আবারও মাঠে নেমে নিজেকে নিংড়ে দেবেন তিনি, আর সেই আশাতেই টিভির পর্দায় চোখ রাখবেন খানচন্দ্র।