আইপিএলের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বুধবার ছিল দক্ষিণী ডার্বি ম্যাচ। আইপিএলের দুই দৈত্য চেন্নাই সুপার কিংস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর একে অপরের মুখোমুখি হল চেন্নাইয়ের চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। এই ম্যাচের বেশির সময়ই কর্তৃত্ব করেছে আরসিবি। ডেভিলিয়র্সের বিধ্বংসী হাফ সেঞ্চুরি এবং ডিক’কের ধৈর্য্যপূর্ণ হাফ সেঞ্চুরির দৌলিতে ঘরের দল চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা রাখে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়লেও আম্বাতি রায়ডু এবং ধোনির বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাটিংয়ের দৌলতে দু বল বাকি থাকতেই এই ম্যাচ জিতে নেন তারা। শেষ ওভারের চার বলে ১৬ রান তুলে এই ম্যাচ নিজেদের নামে করে নেয় চেন্নাই। একবার দেখে নেওয়া যাক এই ম্যাচ কি কি পরিসংখ্যানগত রেকর্ড নথিভুক্ত হল।
পরিসংখ্যানগত তথ্যাবলী:
৯— আইপিএল ২৫ বা তার বেশি কিছু বলে ৯টি হাফসেঞ্চুরি করলেন ডেভিলিয়র্স। তার আগে একমাত্র রয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার (১১)। আইপিএলে হাফ সেঞ্চুরি করতে এবি মেরেছেন ৮টি ছয় যা অল্প সংখ্যক রান করতে আইপিএলে যে কোনও ব্যাটসম্যানের মারা যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ছয়। এর আগে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ২০১৩ মরশুমে অপরাজিত ৬৬ রানের ইনিংসে ৮টি ছয় মেরেছিলেন কায়রণ পোলার্ড। অন্যদিকে আরসিবির হয়ে ২০১৪ মরশুমে দিল্লির বিরুদ্ধে অপরাজিত ৬৮ রান করার পথে ৯টি ছয় মারেন যুবরাজ সিং।
৩৩— এই ম্যাচে মোট দুদল ৩৩টি ছয় মারে, যা কোনও আইপিলে ম্যাচে সর্বোচ্চ ছয় মারার সংখ্যা। এর আগে ২০১৭ মরশুমে দিল্লি বনাম গুজরাট ম্যাচে ৩১টি ছয় মারা হয়েছিল। এই ম্যাচের ৩৩টি ছয় ভারতে অনুষ্ঠিত টি২০ ফর্ম্যাটের একটি ম্যাচে মারা সর্বোচ্চ ছয়, সেই সঙ্গে টি২০ ফর্ম্যাটের একটি ম্যাচে এটি যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ছয়।
৪৬— এই ম্যাচে বল হাতে ৪৬ রান দেন শার্দূল ঠাকুর, যা আইপিএলে যে কোনও ম্যাচে মেডেন ওভার করার পর যে কোনও বোলারের দেওয়া সর্বোচ্চ রান। এর আগে প্রবীণ কুমার মেডেন ওভার করার পরও ২০১৬ মরশুমে গুজরাট লায়ান্সের হয়ে আরসিবির বিরুদ্ধে চার ওভারে ৪৫ রান দিয়েছিলেন।
৮২— আইপিএলে আম্বাতি রায়ডুর ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। ২০১২ মরশুমে আরসিবির বিরুদ্ধেই রান তাড়া করতে নেমে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রায়ডু যা এতদিন তারা সর্বোচ্চ স্কোর ছিল আইপিএল। এছাড়াও এই ম্যাচে ধোনির অপরাজিত ৭০ রানটি আইপিএলে ম্যাচ জেতানোর ক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে তার সর্বোচ্চ ম্যাচ জেতানো ইনিংস ছিল অপরাজিত ৬৭, ২০১৩ মরশুমে হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে ওই রান করেছিলেন তিনি।
১০০—আইপিএলের দ্বাদশ বোলার হিসেবে এই ম্যাচে ১০০টি উইকেট নিলেন উমেশ যাদব। এটি তার ১০০ তম আইপিএল ম্যাচও ছিল।
১০১— আম্বাতি রায়ডু এবং ধোনি এই ম্যাচে ১০১ রানের পার্টনারশিপ খেলেন। যা সিএসকের হয়ে পঞ্চম বা তার পরের কোনও উইকেট জুটিতে প্রথমবার ১০০ রানের পার্টনাশিপ হল। ২০০৮ এ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ধোনি এস বদ্রীনাথের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
১৮০— এবি ডেভিলিয়র্সের আইপিএল কেরিয়ারে এই সংখ্যাক ছয় মেরছেন এখনও পর্যন্ত। এবি আগে একমাত্র রয়েছেন ক্রিস গেইল (২৮৫) যিনি আইপিএলে সবচেয়ে বেশি ছয় মেরেছেন। এবি এই ম্যাচে মোট আটি ছয় মেরে পেছনে ফেলে দিয়েছেন রোহিত শর্মাকে (১৭৯)।
২০৫/৮— আইপিএলে দুটি বা তার বেশি মেডেন ওভার ব্যাট করেও ২০০ বেশির স্কোর করা প্রথম দলে পরিণত হল আরসিবি। আর আগে এই রেকর্ড ছিল রাজস্থানের দখলে যারা এর আগে ২টি বা তার বেশি মেডেন ওভার খেলে ২০১৫ মরশুমে দিল্লির বিরুদ্ধে ১৭৫/৭ রান করেছিল।
২০৬— সফলভাবে রান তাড়া করতে নেমে এটি সিএসকের যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টোটাল। আরসিবির বিরুদ্ধে রান তাড়া করার ক্ষেত্রেও এটী যুগ্মভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টোটাল। ২০১২ মরশুমেও চেন্নাইতে সিএসকে আরসিবির বিরুদ্ধে ২০৬ রান তাড়া করেছিল। এবং ওই ম্যাচেও আরসিবি ২০৫/৮ রান করেছিল। এটা তৃতীয় সফল সর্বোচ্চ রান তাড়া করা জয়ের উদাহরণ আইপিএলের ইতিহাসে।
৫০১০— অধিনায়ক হিসেবে টি২০ ফর্ম্যাটে ৫০০০ রান করা প্রথম ব্যাটসম্যান হলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। রান তাড়া করার সময় ১৯ তম ওভারে মহম্মদ সিরাজকে মারা ছয়ের পরই এই মাইলস্টোন গড়েন মাহি।